'প্রতি লাইকের জন্য ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুটি পাবে এক ডলার!'

চিকেন পক্স বা জলবসন্তে আক্রান্ত শিশুর ছবি চুরি করে শিশুর ক্যান্সার আখ্যা দিয়ে বানানো ভুয়া দুটি অ্যাকাউন্ট সম্প্রতি মুছে দিয়েছে ফেইবসুক।

ফয়সাল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2017, 05:04 AM
Updated : 23 Feb 2017, 05:09 AM

২০১৬ সালে জলবসন্তে আক্রান্ত তিন বছর বয়সী জ্যাসপার অ্যালেন-এর মা সারাহ অ্যালেন অভিযোগ করলে এই খবর বেরিয়ে আসে। কেমব্রিজশায়ারের অধিবাসী ওই মা জানান, সে বছর অগাস্টে তার সন্তানের জলবসন্তের এই খবর বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় আসলে সেখান থেকে ছবিটি চুরি হয়ে থাকতে পারে। আর তার শিশুর জলবসন্তের খবর অনলাইনে আসার কারণ হচ্ছে- তিনি এই রোগের ভ্যাকসিন সবার মাঝে বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যালেন বলেন, “যখন আমরা দেখলাম গুগলে চিকেনপক্স-এর ছবি সার্চ দিলেই আমার সন্তানের ছবিটি আসছে তখন আমরা এ বিষয়ে সতর্ক ছিলাম। আমরা খুব ভালোভাবেই সতর্ক ছিলাম কিছু একটা ঘটতে পারে, কিন্তু তার ক্যান্সার বানিয়ে দেওয়া হবে, এমনটা ধারণা করিনি।” তার অনেক বন্ধুই তার সন্তানের ক্যান্সার হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করতে থাকলে তিনি এ বিষয়ে জানতে পারেন।

ভুয়া সেই অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টে বলা হয়- ওই ছবিতে 'লাইক বা কমেন্ট করলে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ অনুদান দেবে'। চলতি মাসের শুরুতে করা এই পোস্টে ইতোমধ্যেই ১০ লাখেরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত হন।

অ্যালেন জানান, তারা ফেইসবুকে নিয়মিত এ নিয়ে অভিযোগ পাঠাতে থাকেন। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ জানায় যে অ্যাকাউন্টটি মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাকাউন্টটি কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই আবারও চালু হয়ে যায়।

ফেইসবুক শুরুতে শুধু জ্যাসপার-কে ফিচার করে দেওয়া পোস্টগুলো  সরিয়ে নেয়। ওই অ্যাকাউন্ট ঘেটে আরও দেখা যায় সেখানে একই ধরনের আরও পোস্ট আছে, যেমন- একটি দাড়িওয়ালা যুবকের ছবি দিয়ে সেখানে বলা আছে “ছোট শিশুটির ক্যানসার হয়েছে”। আবার হাসপাতালে থাকা আরেক শিশুর ছবি দিয়ে সেখানে বলা আছে ছবিটিতে লাইক বা শেয়ার না দিলে সারা বছর ভাগ্য খারাপ যাবে।

নিরাপত্তা ব্লগার গ্রাহাম ক্লুলেই এ ব্যাপারে জানান, এই অ্যাকাউন্টগুলোর পরিচালকরা তাদের পোস্টে সাড়া দেওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়াতে চায়। পরে তাদের সরাসরি মেসেজ পাঠানো হয় বা প্রোফাইল ও কনটাক্ট তথ্য বিক্রি করা হয়। 

“এখানে সমস্যা হচ্ছে জনগণ সাধারণত অনলাইনে পোস্ট করা যে কোনো কিছুকেই খুব সহজে বিশ্বাস করে। কিন্তু যেসব পোস্ট-এ তারা লাইক বা শেয়ার দিচ্ছে সেগুলোর বিষয়ে তাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।”