বায়ুদূষণের সঙ্গে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বেইজিংয়ের মেয়রের বরাতে রোববার এমনটা জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া।
অনেক বেশি কয়লা ব্যবহার আর যানবাহন বেড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট ‘ভারী কুয়াশা সমস্যা’ ঠেকাতে চলতি বছর ‘অসাধারণ’ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেইজিং, রয়টার্স-এর বরাতে জানিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক মার্কিন সাইট বিজনেস ইনসাইডার।
ছোট কয়লাচালিত বয়লারগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে জানিয়ে সেখানকার মেয়র কাই কি বলেন, “আমরা মূলত চেষ্টা করব ছয়টি বড় জেলা আর বেইজিংয়ের দক্ষিণাংশের সমতলে চলতি বছর কয়লার ব্যবহার শূন্যে নিয়ে আসতে।” তিনি জানান, নতুন এই পদক্ষেপের ফলে ২০১৭ সালে শহরটিতে কয়লা ব্যবহার ৭০ লাখ টনের নিচে চলে আসবে।
২০১৩ সালে বেইজিংয়ে কয়লার ব্যবহার ছিল ২২ মিলিয়ন টন। ইতোমধ্যে শহরটির কয়লাচালিত সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই বছর কয়লা ব্যবহার এক কোটি টনের নিচে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল শহরটি।
এর ফলে সৃষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘাটতি ঠেকাতে প্রতিবেশি প্রদেশ থেকে গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে আশপাশের এলাকাগুলোয় রাজধানী থেকে দূষণ রপ্তানি করা হচ্ছে বলে শংকা উঠে, বলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
কাই জানান, নতুন শক্তিচালিত গাড়ি প্রচারণায় আর জ্বালানি আদর্শ বাড়ানোর সহায়তায় চলতি বছর বেইজিংয়ের রাস্তা থেকে তিন লাখ পুরানো যানবাহন তুলে নেওয়া হবে।
চীনা পরিবেশ সুরক্ষা মন্ত্রণালয়-এর সূত্রমতে, বেইজিংয়ে মোট নির্গমন হওয়া ‘পিএম২.৫’-এর এক তৃতীয়াংশই হয়েছে প্রচুর যানবাহন ব্যবহারের কারণে। শ্বাসের সঙ্গে প্রবেশ করতে পারে এমন ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে ‘পিএম২.৫’বলা হয়। চীনা রাষ্ট্রীয় আদর্শ অনুসারে চীনের শহরগুলোতে পিএম২.৫-এর পরিমাণে বছরে গড়ে কমিয়ে প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রাম-এ নিয়ে আসতে হবে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, বেইজিংয়ের পিএম২.৫-এর গড় পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৭৩ মাইক্রোগ্রাম, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৯.৯ শতাংশ কম।
অন্যদিকে, রয়টার্স -এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চীনা নতুন বছর উদযাপনে আতশবাজির ব্যবহারে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে পিএম২.৫-এর ব্যবহার ৫০০ মাইক্রোগ্রাম ছাড়িইয়ে যায়। ২০১৭ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে পরিমাণটি শেষ পাঁচ বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে যায়।
চলতি বছর জানুয়ারিতে এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গাড়ির নিষ্কাশন ব্যবস্থায় চীনের কড়া আইনের কারণে বর্তমানে দেশটিতে গাড়ি বিক্রি করতে কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্মাতাদের পরিবেশবান্ধব গাড়ি বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছে চীনা সরকার। এ কারণে দেশটিতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রির কথা জানিয়েছে আউডি।