ক্ষমতা কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত মানুষের চেহারা বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে রূপ বদলে গেল হোয়াইট হাউজের ওয়েবসাইটেও।
সিএনএন বলছে,আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় শুক্রবার ট্রাম্প যখন ক্যাপিটল হিলের দিকে এক পা এক পা করে এগুচ্ছেন, তখনই হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে হোয়াইট হাউজ সংশ্লিষ্ট আগের সব ডিজিটাল উপস্থিতির চিহ্ন।
বাস্তবের মতো অনলাইনেও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
হোয়াইট হাউজ ডটজিওভি-তে এখন আর মিলবে না ওবামা প্রশাসনের ছায়া।
সেখানে ঢুকে জলবায়ু নীতি, সমকামী অধিকারসহ বিদায়ী ডেমোক্রেট প্রশাসনের কিছুই আর দেখা যাচ্ছেন না: উল্টো ঝুলছে বাণিজ্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জ্বালানি ও বিদেশনীতি বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ভাবনার কথা।
কেবল ওয়েবসাইট নয়, মালিকানার বদল ঘটেছে প্রেসিডেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস (পটাস) বা ফার্স্টলেডি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস (ফ্লোটাস) টুইটার অ্যাকাউন্টেরও।
একইভাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রেস সেক্রেটারি ও হোয়াইট হাউজের দাপ্তরিক টুইটারও নতুন কর্তাব্যক্তিদের হাতে স্থানান্তরিত হয়েছে।
এরই মধ্যে পোটাস (প্রেসিডেন্ট অব ইউএস) ও ফ্লোটাসের (ফার্স্টলেডি অব ইউএস) ছবি বদলে গেছে; ওবামা ও মিশেলের বদলে এসেছে ট্রাম্প ও মেলানিয়ার ছবি। নতুন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্টলেডির ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের অনুসারীদেরও পোটাস ও ফ্লোটাস অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তাহলে কি ওবামাযুগের সব ডিজিটাল চিহ্ন হারিয়ে গেছে?
না, সেগুলো স্থানান্তরিত হয়েছে নতুন ওয়েবসাইট ওবামা হোয়াইট হাউজ ডট আর্কাইভ ডট জিওভি-তে।
হোয়াইট হাউজের ডিজিটাল বিভাগের সাবেক কর্মী কোরি শুম্যান সিএনএনকে বলেন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তরের সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনেও এ রূপান্তরের পরিকল্পনা আগেই নেওয়া হয়েছিল। তখন থেকেই আর্কাইভ ও রেকর্ড প্রশাসন ওবামা যুগের সব উপকরণ সংরক্ষণেও প্রস্তুতি নিয়েছিল।
“ক্লিনটন ও বুশের সময়কার ওয়েবসাইটের মতো প্রেসিডেন্ট ওবামার হোয়াইট হাউজ ডট জিওভি সংরক্ষণে চলে গেছে; ২০ জানুয়ারির পর থেকে তার সব জিনিস পাওয়া যাবে ওবামা হোয়াইট হাউজ ডট আর্কাইভ ডট জিওভি-তে,” বলেন তিনি।
নতুন প্রেসিডেন্ট এখন থেকে হোয়াইট হাউজ ডট জিওভি ডোমেইন এবং সেখানে যা দেখা যাবে তার ‘অধিকারী হবেন’, জানান শুম্যান।
“ওবামা প্রশাসনের সব ডিজিটাল জিনিস ন্যাশনাল আর্কাইভ অ্যান্ড রেকর্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে হস্তান্তরিত হবে।”
ন্যাশনাল আর্কাইভ অ্যান্ড রেকর্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সরকারি খরচে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নথিপত্র সংরক্ষণ করে আসছে; এসব নথির মধ্যে দেশটির পুরনো সব সংবিধান এবং ডিক্লারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্সও আছে।
ওবামা, তার স্ত্রী এবং উপদেষ্টারা এরই মধ্যে নতুন টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন বলে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নতুন প্রশাসন অবশ্য ওবামা প্রশাসনের সব রীতি বদলে ফেলেনি, এরই মধ্যে তারা ওবামার হোয়াইট হাউজ ওয়েবসাইটের মতো মার্কিন নাগরিকদের অনলাইন আবেদন বা পিটিশন গ্রহণ শুরু করেছে।
ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে নতুন হোয়াইট হাউজ ডট জিওভি ওয়েবসাইটে দুটি পিটিশন জমা হয়েছে।
‘উই দ্য পিপল’-এর ওই পিটিশন দুটিতে ট্রাম্পের ট্যাক্স রিটার্নস ও সব ধরনের ব্যবসায়িক স্বার্থ থেকে নতুন প্রেসিডেন্ট যে সরে এসেছেন, তার প্রমাণ চাওয়া হয়েছে।