প্রযুক্তি খাতে মার্কিন নায়করা

সম্প্রতি ২১ জন প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম জয়ীদের নাম ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এই সম্মাননাকে মার্কিন সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে বিশ্ব শান্তি, সংস্কৃতি বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত বা জনসাধারণের উদ্যোগের প্রশংসনীয় অবদানের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে এই সম্মাননা।

রিয়াদ মোর্শেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2016, 11:54 AM
Updated : 24 Nov 2016, 11:54 AM

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, “প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম শুধু জাতির সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা নয়, আমরা যেখান থেকেই আসি না কেন, এই স্বীকৃতি দেশের উন্নতির জন্য পরিবর্তনের চেতনাকে শ্রদ্ধা জানানো। বিজ্ঞানী থেকে মানবপ্রমিক, সাংগঠনিক সক্রিয় কর্মী থেকে সরকারি কর্মকর্তা, ক্রিয়াবিদ এবং শিল্পকর্মীদের ২১ জন ব্যক্তিত্ব আমেরিকাকে সামনের দিকে অগ্রসরে সহায়তা করেছেন, সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষদের অনুপ্রাণিত করেছেন।”

বিভিন্ন খাতের এই ২১ জনের মধ্যে প্রযুক্তি খাতের প্রতিনিধিও রয়েছেন। তারা হলেন- রিচার্ড গারউইন, বিল গেটস এবং স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস, মার্গারেট এইচ হ্যামিলটন ও গ্রেস হপার।

ছবি- রয়টার্স

বহুবিদ্যাজ্ঞ বা বহুবিষয়ে জ্ঞানী পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড গারউইন ২১ বছর বয়সেই পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষা এবং বুদ্ধিমত্তা, নিম্ন তাপমাত্রা এবং নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ্যা, মহাকর্ষীয় তেজস্ক্রিয়া, ম্যাগনেটিক রিসনেন্স ইমেজিং বা এমআরআই (চৌম্বকীয় অনুনাদ সম্পর্কিত গবেষণা), কম্পিউটার সিস্টেম, লেজার প্রিন্টিং, পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় অবদান রেখেছেন। রিচার্ড গারউইন মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইবিএম-এর টমাস জে ওয়াটসন রিসার্চ সেন্টারে প্রয়োগিক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো , কলম্বিয়া  ইউনিভার্সিটি এবং হার্ভাড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি পাঁচশ’ টেকনিকাল পেপার-এর লেখক এবং তার নামে ৪৭টি মার্কিন পেটেন্ট রয়েছে। বিভিন্ন প্রশাসনে পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকায় আছেন মার্গারেট এইচ হ্যামিলটন, যিনি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা’র অ্যাপোলো কমান্ড মডিউল এবং লুনার মডিউল  এর জন্য অন বোর্ড সফটওয়্যার নির্মাতা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি এসিক্রনাস সফটওয়্যার, প্রায়োরিটি শেডিউলিং এবং প্রায়োরিটি ডিসপ্লে-তে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন, যা আধুনিক, বিশেষ নির্ভরযোগ্য সফটওয়্যার ডিজাইন এবং প্রোকৌশলীতে অবদান রেখেছে।

ছবি- রয়টার্স

মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট-এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস-এর প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ২০০০ সালে জনকল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন স্বাস্থ্যকর এবং বিকাশমূলক জীবনধারণের জন্য মানুষদের সেবা করে আসছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, ক্ষুধা এবং দারিদ্র্য মেটানোর লক্ষ্য নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হচ্ছে সব মানুষ বিশেষ করে যাদের সল্প সম্পদ আছে তাদের স্কুল এবং জীবনে সফল হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা। দ্য গেটস ফাউন্ডেশন তাদের কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে ৩৬০ কোটি ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে।

‘বিস্ময়কর লাবণ্য’ এবং ‘সফটওয়্যার এর প্রথম নারী’ হিসেবে পরিচিত রিয়ার অ্যাডমিরাল গ্রেস হপার ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত অগ্রভাগ থেকেই কম্পিউটার এবং প্রোগ্রামিং ডেভেলপমেন্ট-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হপার এর অবদান প্রোগ্রামের কোডিং ভাষাকে আরও প্রয়োগিক এবং গ্রহণযোগ্য করায় বিশেষ সাহায্য করেছে। তিনি প্রথম এমন একটি কম্পিউটার বানিয়েছেন যা সোর্স কোড একটি ভাষা থেকে আরেকটি ভাষায় রূপান্তর করতে পারে। বিশ্বযুদ্ধ দুই চলাকালীন অবস্থায় তিনি ইউনাইটেড স্টেটস ন্যাভাল রিসার্ভ-এ লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগদান করেন এবং তার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্টের ভ্যাসার কলেজে শিক্ষাকতা করেছেন।