অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ ব্যাংক এবং ওয়েলস ফারগো অ্যান্ড কোংয়ের ভাষ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে তুলাবস্ত্রের একটি চালানের লেনদেনে এবারই প্রথম এ ধরনের ব্যাংকিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, জানিয়েছে রয়টার্স।
ব্লকচেইন হচ্ছে একটি ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন প্রক্রিয়া ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। মূলত ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েনের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি 'পিয়ার টু পিয়ার' পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে।
এক্ষেত্রে একটি ব্লকচেইন ডেটাবেইসে সকল লেনদেন সংরক্ষণ করা হয়। এটি একটি 'গোল্ডেন রেকর্ড' তৈরি করে, যা যে কোনো প্রদত্ত তথ্যকে একটি নিরাপদ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সব পক্ষের জন্য প্রতিলিপি তৈরি করে। এর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের যাচাইয়ের প্রয়োজন পরে না। বিটকয়েন এক ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি, যা ভার্চুয়াল বিনিময়ে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
“বিদ্যমান অর্থ বাণিজ্যের প্রক্রিয়া পুরানো এবং অচল হয়ে গেছে, এর কার্যক্রম নিয়মিত ব্যাহত হচ্ছে এবং নতুন এই ধারণাটি প্রদর্শন করল কীভাবে বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠানগুলো উঠতি প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে”- ব্লকচেইন নিয়ে এমনটাই মতামত কমনওয়েলথ ব্যাংকের নগদ অর্থ প্রবাহ এবং লেনদেন সেবার নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক মাইকেল এইডেল-এর।
এই লেনদেনটিই ডেটাবেইস বিকেন্দ্রীকরণের প্রথম উদাহরণ নয়। ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের জন্য এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রথাগত ব্যাংকিং শিল্পের জন্য একে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই বিশ্বের ৭০ টি বৃহৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে পরিচালিত সংস্থা ‘আর৩’ ব্লকচেইনের মাধ্যমে ব্যাংকিং শিল্পের গতি, নির্ভুলতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা করছে। এই প্রযুক্তির একটি সুবিধা হচ্ছে লেনদেন প্রক্রিয়া থেকে মানুষের অপসারণ। এর ফলে আন্তঃসীমান্ত ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অর্থ প্রদান প্রক্রিয়া ও ভিন্ন সময় জোনের মতো বাধাগুলো দূর হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
ব্লকচেইন পদ্ধতির আরও আধুনিকায়নের জন্য বৃহৎ পরিসরে এর ব্যবহারের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে আর৩। এর মধ্যে 'স্মার্ট চুক্তি' ও অর্থ প্রদানের নির্দিষ্ট শর্ত পূরণের মতো বিষয়গুলোও অন্তর্ভূক্ত। উদাহরণস্বরূপ তুলাবস্তু চালানের লেনদেনটির ক্ষেত্রে যখন চালান তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছেছে তারপরই ব্লকচেইনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ প্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।