"আমাদের মুছে ফেলতে পারে এলিয়েন"- হকিং

যদি আমরা ভিনগ্রহের প্রাণিদের অনুসন্ধান বন্ধ করে দেই তাহলে হয়তো তারা আমাদের সবাইকে মুছে ফেলবে- এমনটাই মন্তব্য করেছেন মহাকাশ গবেষক ও ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজ-এর সেন্টার ফোর থিওরিটিক্যাল কসমোলজি'র গবেষণা পরিচালক স্টিফেন হকিং।

রিয়াদ মোর্শেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2016, 09:07 AM
Updated : 25 Sept 2016, 09:30 AM

ভিনগ্রহের কোনো প্রাণির সঙ্গে যখন আমাদের যোগাযোগ হয়, তখন বিষয়টি অনেকটা নেটিভ আমেরিকানদের সঙ্গে ক্রিস্টোফার কলম্বাস-এর প্রথম সাক্ষাতের মতো বলে তুলনা করেন তিনি। কিন্তু এক্ষেত্রে যেসব মানুষ সাক্ষাত করছেন তাদের জন্য "সবকিছু এত ভালভাবে হয়নি" বলেও মন্তব্য করেছেন এই বিজ্ঞানী।

'স্টিফেন হকিং’স ফেভারিট প্লেইসেস' নামের অনলাইনে পোস্ট করা একটি চলচ্চিত্রে এমন সতর্কতা জারি করেন হকিং। চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়, তিনি স্পেসক্র্যাফটের মাধ্যমে মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষণ করছেন। তার মধ্যে একটি স্থান হচ্ছে পৃথিবী থেকে ১৬ আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্রহ- গ্লিজ ৮৩২সি। এই স্থানে ভিনগ্রহের প্রাণি থাকার ধারণা প্রকাশ করা হয়, যা আমাদের জন্য ভাল নাও হতে পারে, দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি যত বড় হয়েছি ততই উপলব্ধি করেছি যে, আমরা একা না। সারা জীবন চিন্তা করার পর আমি বিশ্বজুড়ে একটি নতুন প্রচেষ্টাকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছি”।

“'দ্য ব্রেকথ্রু লিসেন' প্রকল্পটি প্রাণের চিহ্ন খোঁজার জন্য কাছের লাখো তারা স্ক্যান করবে, কিন্তু আমি জানি কোন স্থান থেকে খোঁজা শুরু করতে হবে। হতে পারে একদিন আমরা গ্লিজ ৮৩২সি-এর মতো স্থান থেকে সিগন্যাল পেরে পারি, কিন্তু আমাদের জবাব দেওয়ার জন্য সতর্ক থাকা উচিত।”

ভিনগ্রহের প্রাণিদের সঙ্গে আলাপ নিয়ে সতর্কবার্তা হকিং আগেও দিয়েছেন। কিন্তু প্রথমবারের সঙ্গে এবারের ঢের পার্থক্য রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। যখন ২০১৫ সালে তিনি ব্রেকথ্রু লিসন প্রকল্পটি চালু করতে সহায়তা করেন, তিনি জানিয়েছিলেন, আমদের বিষয়ে যদি কোনো ভিনগ্রহের প্রাণি শোনে, হয়তো তা আমাদের হত্যা করার জন্য আগ্রহী হবে না- মূলত এর কারণ হতে পারে আমাদের প্রতি তাদের কোনো আগ্রহই নেই।

“যে কোনো সভ্যতা যদি আমাদের পাঠানো বার্তা আসলেই পড়তে পারে, তবে তার জন্য শতকোটি বছর প্রয়োজন। যদি তাই হয় তবে তারা অনেক শক্তিশালী হয়ে যাবে এবং হতে পারে তারা আমাদের এমন মূল্যের বেশি দেবে না, যেমনটা আমরা ব্যাকটেরিয়াকে দেই”, তিনি বলেন।

শুধু ভিনগ্রহের প্রাণি নিয়েই হকিং সতর্ক করেননি। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ধীরে ধীরে এতটাই চালাক হতে পারে যে, দুর্ঘটনাবশত তা আমাদেরও হত্যা করতে পারে বলে জানান হকিং।

তিনি ২০১৫ সালে বলেন, “এআই-এর আসল ঝুঁকি ক্ষতি নয়, তাদের ক্ষমতা। একটি সুপার ইনটেলিজেন্ট এএআই তাদের লক্ষ্য পরিপূর্ণ করার জন্য অনেক ভাল এবং যদি এএআই-এর লক্ষ্য আমাদের সঙ্গে না মিলে থাকে, আমরা বিপদে পড়ব।”