গবেষণাপত্রে ভুল, ‘দোষ’ এক্সেল-এর

জিনোমিক্স নিয়ে করা এক গবেষণাপত্রে ভুলের জন্য দায়ী হয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট-এর স্প্রেডশিট অ্যাপলিকেশন এক্সেল।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2016, 03:36 PM
Updated : 26 August 2016, 03:39 PM

জিনোমিক্স হচ্ছে অণুজীববিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে জিনোম, বিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

কিছু নির্দিষ্ট জিন-এর নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারিখে পরিণত করে দেয় সফটওয়্যারটি- এমন ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ করে এ নিয়ে সতর্কতা ছড়াতে চেষ্টা করছেন গবেষকরা, জানিয়েছে বিবিসি। এক্ষেত্রে সেপটিন ২ জিনের প্রতীক 'এসইপিটি ২' স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলে 'সেপ্টেম্বর ২' হয়ে যায়।  

অন্যদিকে, মাইক্রোসফটের দাবি- ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন সেটিংসে পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা দূর করা যায়। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে একজন মুখপাত্র বলেন, "এক্সেল বিভিন্ন উপায়ে ডেটা আর টেক্সট প্রদর্শন করতে সক্ষম। ডিফল্ট সেটিংস হচ্ছে অধিকাংশ প্রতিদিনকার ঘটনা মাথায় রেখে দেওয়া। এক্সেল বিশাল পরিসরের অপশন দিয়ে থাকে, এর ফলে গ্রাহকরা তাদের বিশেষ প্রয়োজনে ডেটা কীভাবে উপস্থাপিত হবে তা ঠিক করতে পারেন।"

এক্সেল-এর এই বদলে দেওয়ার সমস্যা অ্যাপাচি ওপেনঅফিস ক্যালক.-এর মতো অন্যান্য স্প্রেডশিট সফটওয়্যারেও এই সমস্যা পাওয়ার কথাও দাবি করেছে ওই গবেষকদল।

গবেষকদের দাবি, এক্সেল ডকুমেন্ট-এ ডেটা রাখা ও গবেষণাপত্রের আনুমানিক পাঁচ ভাগের এক ভাগ জায়গাতেই এই সমস্যা রয়েছে। মেলবোর্নভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বেকার আইডিআই-এর জন্য করা এই গবেষণায় কাজ করেন তিন গবেষক। প্রকাশিত গবেষণাপত্রে ৩৫৯৭টি পাতা রয়েছে, যার মধ্যে ৭০৪টি পাতায় এক্সেল-এর কারণে জিন-এর নাম ভুল হয়েছে।  

ইউরোপিয়ান বায়োইনফরমেটিক্স ইনস্টিটিউট-এর পরিচালক ইওয়ান বার্নি অবশ্য এই ভুলের জন্য এক্সেল-কে দোষারোপ করছেন না। বরং গবেষকদের উপর হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, "আমাকে যা হতাশ করেছে তা হচ্ছে, গবেষকরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য এক্সেল স্প্রেডশিটের উপর নির্ভর করছেন।" বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের কাছে জিনের নাম এক্সেল-এর বদলে দেওয়ার বিষয়ট দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিচিত বলেও জানান বার্নি।

এক্সেল-কে শুধু 'হালকা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণা'র জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

এ দিকে আবার ওই গবেষকদলের একজন আসাম এল-অস্তা জানান, এই ভুলগুলো নির্দিষ্টভাবে গবেষণাপত্রের সম্পূরক তথ্য আছে ওই শিটগুলোতেই পাওয়া যায়। ওই শিটগুলোতে "গুরুত্বপূর্ণ সমর্থ যোগানোর ডেটা আছে, যা তথ্য দিয়ে পূর্ণ" বলে জানান তিনি।  

২০১৪ সালে প্রথম এক্সেল-এ এই নির্দিষ্ট জিনগুলোর নাম বদলে দেওয়ার ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর শেষ পাঁচ বছর ধরে এই সমস্যা 'বাৎসরিক ১৫ শতাংশ হারে বেড়েছে' বলে দাবি বেকার আইডিআই-এর।