ব্রেক্সিট পিটিশনে জাল স্বাক্ষর

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের থাকার বিষয়ে দ্বিতীয়বার গণভোটের আহবানের জন্য তৈরি করা একটি অনলাইন পিটিশনে প্রতারণা চালাচ্ছে কিছু কম্পিউটার প্রোগ্রাম। স্বয়ংক্রিয় বটের মাধ্যমে পিটিশনে যুক্ত হচ্ছে অসংখ্য ভুয়া স্বাক্ষর।

শাহরিয়ার হাসান পরশবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2016, 12:54 PM
Updated : 29 June 2016, 12:54 PM

বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফোরচ্যান মেসেজ বোর্ডের কিছু ব্যবহারকারী এমন কিছু কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখেছেন বা ব্যবহার করছেন যা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পিটিশনে একাধিক স্বাক্ষর যোগ করতে থাকে। এর মাধ্যমে ভ্যাটিকান সিটি এবং অ্যান্টার্কটিকার বাসিন্দাদের নামে যোগ হচ্ছে হাজার হাজার ভুয়া স্বাক্ষর।

দ্য হাউজ অফ কমন্স পিটিশন্স কমিটি জানায় তারা ইতোমধ্যে ৭৭ হাজার ভুয়া স্বাক্ষর দূর করেছে এবং আরো ভুয়া স্বাক্ষর খুঁজে বের করতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

পিটিশনটিতে বর্তমানে ৩৬ লাখ স্বাক্ষর রয়েছে যা সংসদীয় যে কোনো সংখ্যার চেয়ে বেশি। এমনকি উত্তর কোরিয়া এবং স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ এর মতো জায়গা থেকেও স্বাক্ষর আসছে বলে জানানো হয়। ভুয়া স্বাক্ষর দূর করার অভিযানের পর এখন বেশিরভাগ স্বাক্ষরই যুক্তরাজ্যের মধ্য থেকে আসছে। যদিও এসব স্বাক্ষরের মধ্যেও ভুয়া স্বাক্ষর থাকতে পারে। এ ছাড়া পিটিশনে এখনো প্রতি মুহূর্তে অসংখ্য স্বাক্ষর যোগ করে যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার প্রোগ্রাম যাকে ডাকা হয় 'বট'।

কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ড মাইক্রোর পক্ষ থেকে রিক ফার্গুসন বলেন, মিথস্ক্রিয়া জড়িত যেকোন অনলাইন পণ্যের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় কন্টেন্ট যুক্ত করার বিপক্ষে ব্যবস্থা থাকা উচিত। আর ফোরচ্যান এ ধরনের অনর্থের জন্য বিখ্যাত।

অন্যদিকে সরকারি পিটিশন সাইটেও অনলাইন বট নিরোধি কোন ব্যবস্থা যেমন 'ক্যাপচা'-র মতো সুরক্ষা নেই। ক্যাপচা হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে একটি ছবি থেকে ব্যবহারকারীকে সঠিক সংখ্যা এবং অক্ষর আলাদা করে ইনপুট দিতে হয়। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনা করা কঠিন কাজ।

ফার্গুসন জানান, একটি সাইট যা অনেক মানুষের ব্যবহারের জন্য তার ক্ষেত্রে এধরনের সাধারণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা একটি বড় ত্রুটি।

ফোরচ্যান মেসেজ বোর্ডের কিছু সদস্য অবশ্য নিজেদের প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। একজন সদস্য লেখেন, আমি ৩৩ হাজার বার ভোট দিলাম, একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম আমার হয়ে সবকাজ করেছে যখন আমি শাওয়ার নিতে ব্যস্ত ছিলাম।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন অবশ্য ঘোষণা দিয়েছেন যে দ্বিতীয়বার কোনো ভোট হবে না। দ্য হাউজ অফ কমন্স পিটিশন্স কমিটি জানিয়েছে তারা সন্দেহজনক গতিবিধির জন্য আপাতত নজরদারী করছে।