'হাজার বছরের' যাত্রায় অ্যাপল

মে মাসে মার্কিন প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এর প্রধান নির্বাহী টিম কুক টেলিভিশনের একটি সাক্ষাৎকারে বলেন অ্যাপল সামনের ‘হাজার বছরের’ জন্য স্থায়ী হতে চলেছে।

রিয়াদ মোর্শেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2016, 03:25 PM
Updated : 18 June 2016, 03:25 PM

কুক বলেন যে, “আমরা এখানে প্রান্তিক, দুই প্রান্তিক বা পরবর্তী প্রান্তিক বা এক বছর, দুই বছরের জন্য নয়, তাই আমরা পণ্যগুলো সর্বোচ্চ নয়, সর্বশ্রেষ্ঠভাবে বানানোর পরিকল্পনা করছি।"

সম্প্রতি এমনই একটি প্রমাণ পাওয়া গেল অ্যাপলের ডেভেলপারদের বাৎসরিক সম্মেলনে, ভাষ্য ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক সাইট বিজনেস ইনসাইডার-এর। মার্কিন যুক্ত্ররাষ্ট্রে ১৩ জুন ডাব্লিউডাব্লিউডিসি-২০১৬ নামের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সাধারণত এই সম্মেলনে বিভিন্ন শ্রেণির পণ্যগুলোর আপডেট এবং নতুন ফিচার প্রকাশ করা হয় এতে আর এই সুবিধাগুলো পেতে ক্রেতাদের আরও কয়েক সপ্তাহ বা মাস অপেক্ষা করতে হয়।

এদিকে ২০১৬ সালে আইফোন বিক্রি কমে যাবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে ওয়াল স্ট্রিটভিত্তিক বিনিয়োগকারীরা। অ্যাপল তাদের প্রারম্ভিক অংশের কাজে প্রাধান্য দিয়েছে, যার মাধ্যমে তাদের পণ্যগুলো আগামী দশকগুলোতে নেতৃত্ব দিতে পারবে।

এই ভবিষ্যত পরিকল্পনার বীজ বপনকারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী জানান, তিনি সম্মেলনে বেশি সময় পর্দার সামনে না থাকলেও নতুন ফিচারগুলোর ডেমো তার দক্ষ প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করেন।

কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবেই দেন। তা হচ্ছে ‘সুইফট প্লেগ্রাউন্ড’ যা আইপ্যাড-এর জন্য 'মজার' একটি গেম। এই অ্যাপটি শিশু কিশোরদের প্রোগ্রামিং শেখাবে, গেইমটির নিয়ম হল, একটি এলিয়েনের মাধ্যমে যদি কোনো প্রোগ্রাম শেখা যায়, তবে কিছু ফ্রি কয়েন পাওয়া যাবে।

আসলে অ্যাপলের প্রধান বাজার দশ বছরের বাচ্চারা নয়- ৬৫০ ডলারের নতুন আইফোন কয়জন ১০ বছরের বাচ্চার কাছেই বা থাকবে! কিন্তু যদি বাচ্চাদের জন্য হয়ে থাকে, যখন তারা বড় হবে তারা ব্যবহার করবে। অ্যাপল চায় আগামী প্রজন্ম প্রোগ্রামিংয়ের ভাষায় পরিপক্ক হোক।

অ্যাপল এবারের আসরে চারটি প্রধান কম্পিউটিং প্লাটফর্ম-এর কথা জানিয়েছে। সেগুলো হল- পরিধান করা যায় এমন পণ্য, স্মার্টফোন, ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং টেলিভিশন-এর মতো বড় স্ক্রিন।

কিন্তু অ্যাপল আসলে শুধু এই চারটি ছাড়াও গোপনে আরও নতুন প্লাটফর্মের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। ম্যাপস, সিরি ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং মেসেজিং, স্মার্ট নোটিফিকেশন, অ্যাপল ডিভাইসগুলোর জন্য আনা টাচ চেক আউট এবং ফোন অ্যাপ আর অন্যান্য অ্যাপের জন্য ইন্টারফেইস-এর মতো প্লাটফর্মগুলোর কথাও জানিয়েছে অ্যাপল।

সব প্ল্যাটফর্মের জন্য একটা জিনিস মিল ছিল; আর তা হল প্রতিষ্ঠানটি এমনভাবে বানানো হয়েছে যেন প্রতিষ্ঠানের বাইরের অ্যাপ ডেভেলপাররা আগামী প্রজন্মের জন্য অ্যাপলের জন্য অ্যাপ তৈরি করতে পারে এবং অ্যাপল কেন্দ্রে থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

গুগল থেকে শুরু করে ফেইসবুক পর্যন্ত প্রত্যেকটি বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নিজেরাই নিজেদের অ্যাপগুলোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করছে এবং অনেকের ধারণা সামনে এই বিষয়টি বড় পরিবর্তন আনবে। অনেক গবেষকের মতে এক্ষেত্রে অ্যাপল পিছিয়ে আছে।

কিন্তু সম্মেলনে কিছু সময়ের ব্যবধানে অ্যাপল তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ধারণা ব্যক্ত করে।

প্রতিষ্ঠানটি এ-ও জানায়, তারা এমনভাবে ডেটা নিয়ে সামনে চলছে যে, গুগল ফেইসবুক-এর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে অনেক এগিয়ে যাবে অ্যাপল। অ্যাপল এই পরিকল্পনাকে বলছে ‘ভিন্নতর গোপনীয়তা'।