মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক মার্কিন সামায়িকী ফরচুন।
সান্ডে বলেন, "ফেইসবুক বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাতি আর আমাদের একজন স্বৈরশাসক রয়েছেন, আমরা যদি গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এর দিকে তাকাই তবে তাই দাঁড়ায়। মার্ক জাকারবার্গ এই স্বৈরশাসক। আমি তাকে নির্বাচিত করিনি। তবে তিনি নীতিমালা নির্ধারণ করেন।"
কিন্তু ফেইসবুকের সদস্য কেউ হবেন কি না সে বিষয়টি একান্ত তার ব্যাক্তিগত ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। তাহলে, সমস্যা কোথায়? ফেইসবুকে পরিবার আর বন্ধুদের সঙ্গে এত বেশি মিথষ্ক্রিয়া হয় যে, ‘এই সামাজিক মাধ্যমে না থাকলে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব পরে’ বলে মত দিয়েছেন সান্ডে।
তিনি বলেন, "আপনি ফেইসবুক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত বাছাই করতে পারেন না। আমি ফেইসবুকে নেই কিন্তু আমার অফলাইন দুনিয়ায় অনেক বেশি অপূর্ণতা রয়েছে। কোনো অনুষ্ঠানের দাওয়াত পান না, কোনো বন্ধুর খবর পান না, লোকে আপনার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, কারণ আপনি ফেইসবুকে নেই। সুতরাং, বাস্তব জীবনে এর প্রভাব রয়েছে।"
রাজনীতিবিদরা যখন ফেইসবুক-কে একটি 'দেশের মতো করে' আর জাকারবার্গ-কে একজন 'রাজনৈতিক নেতা' হিসেবে দেখতে শুরু করলেন, তখন থেকে ফেইসবুক-কে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেখার ধারণাটি 'চাঙ্গা' হয়ে ওঠে বলেই ভাষ্য তার। আর এর উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি টেনে এনেছেন অভিবাসন বিরোধী পোস্ট নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মের্কেল-এর সঙ্গে ফেইসবুক প্রধানের সাক্ষাতের ঘটনার কথা।
ইউরোপে ফেইসবুকের 'আইন মেনে না চলা'র বিষয়ে সান্ডে'র সমালোচনাকে অনেকটা 'হাস্যকর' বলে মন্তব্য করেছে ফেইসবুকের স্বদেশীয় প্রকাশনাটি। সান্ডে আর তার সহকর্মীরা পাইরেট বে সাইটটি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই, ব্যবহারকারীদের অবৈধভাবে কপি করা মুভি আর সফটওয়্যার ডাউনলোড করার সুযোগ দিয়ে বহুল মাত্রায় কপিরাইট আইন লঙ্ঘনকারী হিসেবে 'কুখ্যাত' বলে ভাষ্য ফরচুন-এর। ২০১৪ সালে এমন বিষয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হয় সান্ডে-কে।
ফেইসবুকে ব্যবহারকারীদের নিজের আসল নাম দেওয়া নিয়ে জোর করার বিষয়েও সমালোচনা করেছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার বিষয়ে ব্লগ লেখক সান্ডে। কিছু দেশে ব্যবহারকারীদের নিপীড়িত হওয়ার পেছনে নিজ নাম ব্যবহারে বাধ্য হওয়ার বিষয়কে দায়ী করেছেন তিনি।
"মার্ক জাকারবার্গ একজন ধনী শ্বেতাঙ্গ লোক, যিনি সত্যিই একটি সুবিধাভোগী ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন। আসল নাম দেওয়ার নীতিমালার পেছনের কারণ হচ্ছে মার্ক জাকারবার্গ আরও বাড়তি ডলার আয় করতে চান", মন্তব্য সান্ডে-এর।