কেমন আছেন অ্যাপল স্টোর কর্মীরা?

টেক জায়ান্ট অ্যাপল একের পর এক অসাধারণ পণ্য উপহার দিয়ে মুগ্ধ করে আসছে গোটা প্রযুক্তিবিশ্বকেই। তবে এই পণ্যগুলো আমাদের হাতে পৌঁছে দেন যারা, কেমন সেই অ্যাপল স্টোর কর্মীদের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা? সম্প্রতি বিজনেস ইনসাইডার-এর এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের এক অভিজ্ঞ অ্যাপল স্টোর কর্মীর সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়েছে, আর তাতে ফুটে উঠেছে অ্যাপল স্টোর কর্মীদের দুর্দশার নানা চিত্র।

আহমেদ ইফতিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2016, 05:32 PM
Updated : 30 May 2016, 07:05 PM

অ্যাপল স্টোরে চাকরির প্রথম দিনই পেশাগত গোপনীয়তা রক্ষার শর্ত মেনে নিতে হয় কর্মীদের। এর ফলে তাদের এ চাকরির খবর জনসম্মুখে প্রকাশ, এমনকি অ্যাপল টি-শার্ট পরে সেলফি তোলাও নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে তাদের জন্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ অ্যাপল স্টোর কর্মী জানান, প্রতি ঘন্টার দায়িত্ব পালনের জন্য তারা প্রায় আট ইউরো (প্রায় ১১.৭০ ডলার) পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও বাড়তি বিক্রির জন্য কোনো বোনাসের ব্যবস্থাও নেই। এর ফলে তাদের অনেকেই যে পণ্য অন্যদের হাতে তুলে দেন, ইচ্ছা থাকলেও তা নিজেরা কিনে ব্যবহার করতে পারেন না।

প্রতিষ্ঠানটির লোভনীয় পদগুলোতে অ্যাপল স্টোর কর্মীদের পদোন্নতি না দেওয়া ছাড়াও তাদের পার্ট-টাইম থেকে ফুলটাইম চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয় না বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, "আমি স্টোরে থাকাকালীন বিভিন্ন ধরনের পাঁচ থেকে আটজন স্টোর ম্যানেজার ছিলেন। তাদের মধ্যে শুধু একজনই অ্যাপলের মাধ্যমেই চাকরিজীবন শুরু করেন, আর অন্যদের ডিক্সন বা এইচএমভি প্রভৃতি এজেন্সি থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়। একটি 'লিড অ্যান্ড লার্ন' প্রোগ্রাম চালুর মাধ্যমে তারা এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালায়। এতে কেউ ম্যানেজার না হয়েও ম্যানেজারসুলভ দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন। এখানে এমন অসাধারণ অনেকেই ছিলেন, যারা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছিলেন, এবং অন্য সবার চেয়ে বেশি বিক্রি করছিলেন। কিন্তু এরপরও তারা শুধু স্পেশালিস্ট বা এক্সপার্টই ছিলেন। এদের সঙ্গে আমার এখনও যোগাযোগ রয়েছে, আর আমি যতদূর জানি, এই প্রোগ্রাম থেকে কাউকেই এখনও পর্যন্ত ম্যানেজার পদ দেওয়া হয়নি। জিনিয়াস বার ও অন্যান্য ইন-স্টোর চাকরির মাধ্যমে আয় বাড়ানো যায়, তবে ক্রেতাদের রাগান্বিত মনোভাবের কারণে অনেকেই এ পদগুলো এড়িয়ে গিয়ে থাকেন।"

তিনি আরও জানান, অ্যাপল স্টোর কর্মীরা অনেকটা নিয়মিতভাবেই ক্রেতাদের কাছ থেকে মৃত্যুর হুমকি পেয়ে থাকেন। তবে ব্যবসায়িক ক্রেতাদের কাছে এন্টারপ্রাইজ কন্টাক্ট বিক্রি করতে সফল হলেও বিনিময়ে তারা কোনো প্রতিদানই পান না।

এ প্রসঙ্গে অ্যাপলের মন্তব্য চাওয়া হলে তাতে অস্বীকৃতি জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

তবে অ্যাপল স্টোরে চাকরির কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে - এমনটাও স্বীকার করেন তিনি। তিনি জানান, কর্মীরা প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারে ১৫ শতাংশ এবং অ্যাপল পণ্যে বড় ধরনের ছাড় ছাড়াও মাঝে মাঝেই অ্যাপল সিইও টিম কুক-এর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পেয়ে থাকেন।