তোপের মুখে ফেইসবুক, গুগল

ইউরোপ থেকে ডেটা ট্রান্সফার নিয়ে ফেইসবুক এবং গুগলের মত প্রতিষ্ঠান আইনি হুমকির মুখোমুখি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকের ডেটা ট্রান্সফার প্রক্রিয়ার ব্যাপারটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উচ্চ আদালতে তোলা হতে পারে বলে জানিয়েছে আইরিশ গোপনীয়পতা নিরীক্ষণ কর্তৃপক্ষ।

শাহরিয়ার হাসান পরশবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2016, 03:22 PM
Updated : 28 May 2016, 03:22 PM

রয়টার্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফেইসবুক ইউরোপের ব্যবহারকারীদের যে ব্যাক্তিগত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে তা মার্কিন সরকারের নজরদারি থেকে মুক্ত কি না সে ব্যাপারে তদন্তের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করছে আইরিশ সংস্থাটি।

অন্যসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মতো ডাবলিনে অবস্থিত ফেইসবুকের ইউরোপিয়ান হেডকোয়ার্টার আইরিশ ডেটা প্রটেকশন কমিশন (আইডিপিসি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ইউরোপের বাইরে ডেটা পাঠানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো ফেইসবুকও 'মডেল কন্ট্র্যাক' নামে একটি চুক্তি অনুসরণ করে। তবে এই চুক্তি ফেইসবুকের জন্য কতটুকু বৈধ তা নিয়ে কোর্ট অফ জাস্টিস অফ দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (সিজেইইউ) তে প্রশ্ন তুলতে পারে আইডিপিসি। 

গতবছরের অক্টোবরে আয়ারল্যান্ডের উচ্চ আদালত ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির উপর তদন্তাদেশ প্রদান করে। ইতোপূর্বে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনভাবে তথ্য আদানপ্রদান করতে পারত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারী থেকে ইউরোপবাসীদের ব্যক্তিগত তথ্য যথেষ্ট নিরাপদ মনে না হওয়ায় নতুন রুল জারি করে সিজেইইউ। সিজেইইউ কর্তৃত্ব গ্রহণ করার পর থেকে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেটা ট্রান্সফারের জন্য মডেল কন্ট্রাক্টসহ আরো তথ্য গোপনীয়তা আইনের অন্তর্ভুক্ত নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয়।

২০১৩ সালে প্রিজম-এর মত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নজরদারী প্রোগ্রামের খবর বেরিয়ে এলে ইউরোপের অধিবাসীদের তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণের ব্যাপারটি একটি ঝাঁঝাল বিষয়ে পরিণত হয়। প্রিজমের মাধ্যমে মার্কিন কর্তৃপক্ষ বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যেমন অ্যাপল, গুগল এবং ফেইসবুকের গোপন তথ্যের উপর নজরদারী করতে পারত।

ফেইসবুকের একজন মুখ্যপাত্র এ ব্যাপারে জানান, ক্রেতা এবং ব্যবহারকারীদের সেবায় সহস্রাধিক প্রতিষ্ঠানকে সীমান্তের বাইরে তথ্য প্রেরণ করতে হয়। আইডিপিসি যে প্রশ্ন আদালতে তুলতে চাচ্ছে তার সঙ্গে ইউরোপের প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তথ্য প্রেরণের জন্য অনেক বৈধ পন্থাই ব্যবহার করতে পারে ফেইসবুক।

গত অক্টোবরে পুরো ঘটনার শুরু হয় মূলত ম্যাক্স স্ক্রিমস নামের এক অস্ট্রিয়ান আইনের ছাত্রের অভিযোগের সূত্র ধরে। স্ক্রিমসের অভিযোগ ছিল ফেইসবুক ইউরোপের ব্যবহারকারীদের তথ্য যে মার্কিন সার্ভারে জমা করছে তাতে মার্কিন সরকারের উঁকি দেওয়ার ঝুঁকি মোটেও অমূলক নয়।

অক্টোবরে সিজেইইউর ঘোষণার পর ইইউ কমিশন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন একটি ডেটা শেয়ারিং চুক্তির প্রস্তাবনা করে যা চলতি বছরের জুন মাসে কার্যকর হতে পারে।

মেয়ার ব্রাউন এর একজন আইনজীবী অলিভার ইয়ারস বলেন, আদালত যদি মনে করে বর্তমান অবস্থায় ত্রুটি রয়েছে এবং সারাবিশ্বে ব্যক্তিগত তথ্য আদান-প্রদান বন্ধ করা উচিত তবে আন্তর্জাতিক ব্যবসাক্ষেত্রে এর প্রভাব হতে পারে বিধ্বংসী।