জার্মান পারমাণবিক কেন্দ্রে ভাইরাস

জার্মানির একটি পরমাণু শক্তি কেন্দ্রে ব্যবহৃত কম্পিউটারগুলোতে ভাইরাস আক্রমণ করেছে।

জাকিয়া শবনম বৃষ্টিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2016, 11:43 AM
Updated : 30 April 2016, 11:43 AM

ওই পরমাণু কেন্দ্রের কার্যালয়ে ব্যবহৃত কম্পিউটারগুলোতে এবং পারমাণবিক জ্বালানি রডের দিক ঠিক করে দেওয়ায় সিস্টেমে এই ভাইরাস পাওয়া যায়, বলে জানিয়েছে বিবিসি।

আরডব্লিউই নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের কনট্রোল সিস্টেম ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত না থাকায়, কোনো ভাইরাস চালু হতে পারেনি। আর একারণে এই ভাইরাস আক্রমণে শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রের কোনো ঝুঁকি নেই।

এই কেন্দ্র কীভাবে ভাইরাস আক্রমণ হল, তা নিয়ে এখন বিশ্লেষণ করছে দেশটির সরকারী সাইবার তদন্তকারীরা।

জ্বালানি রডের মডেলিং সিস্টেমে আর ১৮টি পেন ড্রাইভে এই ভাইরাসগুলো পাওয়া যায়। ওই পেন ড্রাইভগুলো অফিসের কম্পিউটারে রিমুভএবল ডেটা স্টোর হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

গুন্দ্রেমিনেজেন-এ অবস্থিত এই কেন্দ্রের ‘বি’ ব্লকের কম্পিউটারাচালিত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আপগ্রেড করার সময় কর্মচারীরা ভাইরাসগুলো শনাক্ত করেন। এই ব্লকটিতে তখন নিয়ম মাফিক পরিচর্যার কাজ  হচ্ছিল, এ কারণে সেখানে শক্তি উৎপাদনের কাজ বন্ধ ছিল।

১ হাজারেরও বেশি কম্পিউটারে ভাইরাস চেক করে ক্লিন করা হয় বলে জানিয়েছেন আরডব্লিউই-এর একজন মুখপাত্র। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণকেও উন্নত করা হয়েছে।

আরডব্লিউই জানায়, পারমাণবিক চুল্লির সঙ্গে কোনো সিস্টেমের সরাসরি সংযোগ ছিল না আর এই ভাইরাস সংক্রমণে জনসাধারণের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

“প্রত্যেকটি সংবেদশীল কেন্দ্রীয় এলাকাকে একে অন্যের থেকে আলাদা ও ভালোভাবে ডিজাইন করা হয়েছে আর কোনো ক্ষতি থেকে রক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে”, এক বিবৃতিতে বলে প্রতিষ্ঠানটি।

ভাইরাসগুলোর মধ্যে ডব্লিউ৩২ডটর‌্যামনিট আর কনফিকার নামের দুটো পরিচিত ও ভীষণ ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম ছিল।

র‌্যামনিট একটি ‘রিমোট অ্যাকসেস টুল’, যা ২০১০ সালে প্রথম দেখা যায়। ভাইরাসটি ডেটা চুরি করাতে সহায়তা করে। কনফিকার ২০০৮ সাল থেকে দেখা যাচ্ছে, এটি লগ ইন নাম আর ডেটা চুরি করে থাকে।

আক্রান্ত সিস্টেমগুলো নেটের থেকে আলাদা ছিল বলে র‌্যামনিট বা কনফিকারের কোনোটিই সচল হতে পারেনি। সে কারণে আপডেট বা ডেটা চুরি করতেও পারেনি ভাইরাসগুলো, জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

‘এফ-সিকিউর’-এর প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা মিকো হিপোনেন জানান, শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রগুলোসহ অন্যান্য জাতীয় সংকটপূর্ণ অবকাঠামোগুলো প্রায়ই ভাইরাস দ্বারা আক্রমণিত হলেও খুব কমই ক্ষতি করে থাকে।

মিকো রয়টার্সকে বলেন, “নিজের জায়গা সম্পর্কে না জানিয়েই সবচেয়ে বেশি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।”

গুন্দ্রেমিনেজেন মিউনিখ থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আর এই কেন্দ্রটিই জার্মানির সবচেয়ে বেশি শক্তি উতপাদনকারী কেন্দ্র।