মালয়েশিয়ায় সোশাল মিডিয়ায় পুলিশী নজর

প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক-এর কেলেঙ্কারি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হওয়া সমালোচনা ঠেকাতে তৎপরর হচ্ছে 'ডিজিটাল জ্ঞানসম্পন্ন' মালয়েশিয়ান পুলিশ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2016, 12:48 PM
Updated : 8 Feb 2016, 12:48 PM

রাষ্ট্রীয় তহবিল ১মালয়েশিয়া ডেভলাপমেন্ট ব্যাংক (১এমডিবি) -এর কয়েকশ’ কোটি ডলার জালিয়াতি আর নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬৮ কোটি ১০ লাখেরও বেশি ডলার রাখা নিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন নাজিব। নিজের সাত বছরের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে এই সময়টিকে তার সবচেয়ে সংকটময় মূহুর্ত হিসেবে দেখছে রয়টার্স।

সমালোচনার আঙ্গুল তার দিকে থাকলেও, ১এমডিবি-এর উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিব কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে নিজের ব্যাক্তিগত স্বার্থে কোনো অর্থ নেননি বলেও দাবি তার।

তদন্ত শেষে দেশটির রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আপান্দি আলি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ সৌদি আরবের একজন পৃষ্ঠপোষকের দান করা আর এর অধিকাংশই ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে, আইনজীবীর এমন বক্তব্য থামাতে পারেনি জনতার ক্ষোভ। নিজেদের বিক্ষোভের ভাষা প্রকাশে সামাজিক মাধ্যমগুলোকে বেছে নিয়েছে মালয়েশিয়ানরা।

নাজিবের একটি ব্যাঙ্গাত্মক ছবির সঙ্গে “পুরো দুর্নীতিতে ভরা একটি দেশে, আমরা সবাই রাষ্ট্রদ্রোহী” লেখা একটি ছবি এখন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দিয়েছেন মালয়েশিয়ান জনগণ।

ছবিটি ছড়ানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যে জবাব দেয় দেশটির পুলিশ। ব্যাঙ্গচিত্রটির আকিঁয়ে ফাহমি রেজা-কে সতর্ক করে তারা। তার টুইটার অ্যাকাউন্ট নজরদাড়ির মধ্যে রাখা হচ্ছে ও এই ছবি তার “আইন মেনে ও বিবেচনা করে” ব্যবহার করা উচিত বলেও জানায় তারা।

এই শাসক দল সব সময় তাদের সিংহাসন হারানোর ভয়ে থাকে জানিয়ে ফাহমি বলেন, “কিন্তু মানুষ বদলেছে। প্রতিবাদ আর বিক্ষোভের সংস্কৃতি শক্তিশালী হচ্ছে।”

সামাজিক মাধ্যমের কার্যকলাপ নিয়ে সতর্ক বার্তা পাওয়ার তালিকায় ফাহমি প্রথম নন। কিন্তু এই প্রথম পুলিশ টুইটার ব্যবহার করে লোক শুনাক্ত করল ও সতর্কতা জারি করলো। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, “এই টুইটার অ্যাকাউন্ট-এর মালিকের করা পোস্টকে ঘিরে তদন্ত চালানো হবে।”

যে টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে তা যে মালয়েশিয়ান সাইবার ইউনিটের একটি অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশের একজন মুখপাত্র। কিন্তু, ফাহমি বা অন্য কোনো সতর্ক বার্তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি তিনি। বিস্তারিত জানতে তিনি পুলিশ সাইবার ইউনিটের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিলেও, সাইবার ইউনিট প্রধান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

থেমে থাকেননি ফাহমিও, জবাবে এবার আগের ব্যাঙ্গচিত্রের সঙ্গে নতুন একটি পুলিশের স্কেচ পোস্ট করেন তিনি। এই স্কেচের সঙ্গে পোস্টে #BigBrotherIsWatchingYou লিখে দেন তিনি।

এরপর অন্যান্য শিল্পীরাও তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করলে, ফাহমি-এর বিরুদ্ধে নতুন কোনো অ্যাকশন নেওয়া হয়নি। মালয় ভাষায় হ্যাশট্যাগ দিয়ে "আমরা সবাই রাষ্ট্রদ্রোহী" লিখে ওই স্কেচ শেয়ার করছেন তারা।

প্রধানমন্তী নাজিবের ফেইসবুক পেইজও বাদ যায়নি, সমালোচনার ঝড় আর তার পদত্যাগের দাবিতে ভরে গেছে পেইজটি।