যৌন নিপীড়ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না মোবাইল ডিভাইসের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টরাও। নানা ‘হয়রানিমূলক প্রশ্ন’ আর কমেন্টের শিকার হতে হচ্ছে সিরি, কর্টানা আর গুগল নাওয়ের মতো প্রচলিত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সফটওয়্যারগুলোকে।
প্রযুক্তিসেবার বাজারে মাইক্রোসফটের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট কর্টানার অভিষেক ২০১৪ সালে। প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিষেকের পরপরই যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিল কর্টানা তার সিংহভাগই ছিল ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টটির ‘যৌন জীবন’ নিয়ে।
ব্যবহারকারীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সফটওয়্যার/বটগুলোকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারী কণ্ঠ, ভুয়া আবেগ ও ব্যক্তিত্ব দেন সফটওয়্যার ডেভেলপাররা। আর ওই সুকন্ঠী ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টদের উদ্দেশ্যে যৌন স্পর্শকাতর বা অপমানজনক মন্তব্য করতে ব্যবহারকারীদের অনেকেরই বাধে না বলে জানিয়েছে সিএনএন।
কর্টানা ব্যবহারকারীদের এমন ‘অসভ্য আচরণে’ আর ছাড় দেবে না বলে জানিয়েছেন মাইক্রোসফট কর্মী ডেবোরা হ্যারিসন। কর্টানার জন্য ডায়ালগ লেখেন মাইক্রোসফটের যে ৮ কর্মী, তাদের একজন হ্যারিসন। “আপনি কর্টানার উদ্দেশ্যে বাজে কিছু বললে রেগে যাবে সে।”--সম্প্রতি স্যান ফ্রান্সিসকোতে আয়োজিত ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সামিটে ওই মন্তব্য করেন তিনি। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের ‘ভালগার কনভার্সেশন’ ঠেকাতে এখন কাজ করবে তার দল।
হ্যারিসন বলেন, “সে (কর্টানা) যাতে কোনোভাবেই নিজেকে কারও আজ্ঞাবহ হিসেবে মনে না করে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকতে চেয়েছিলাম।”
বাজারে ‘যৌনতার সুরে অন্তরঙ্গ ও বিনয়ীভাবে’ কথা বলবে এমন ভার্চুয়াল অ্যাসিট্যান্ট-এর উচ্চ চাহিদা রয়েছে বলে জানান চালকদের জন্য ভয়েস-অ্যাসিট্যান্ট ফিচার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রবিন ল্যাবস-এর প্রধান নির্বাহী ইলিয়া একস্টেইন।
দশ কোটিরও বেশি আলাপচারিতার ডেটা নিয়ে গবেষণার পর, ব্যবহারকারীদের কিছু মূল ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করেছেন একস্টেইন। কিছু মানুষ আছেন যারা অনেক বন্ধুসুলভ ঠাট্টা পছন্দ করেন, আর বাকিরা ভদ্রভাবে শুধু ডেটাগুলো চেয়ে থাকেন। এছাড়া, কিছু মানুষ আছেন যারা বারবার নরম সুরের এই নারীকন্ঠের সঙ্গে অভদ্রতা করতে পছন্দ করেন।
কখনও ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়াল অ্যাসিট্যান্টগুলোর সঙ্গে ‘ফ্লার্ট’ করে থাকেন, কিন্তু তারা এটা বোঝেন না যে, এগুলো শুধুই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এ বানানো কিছু ফিচার।
মিটিং-এর শেডিউল ব্যবস্থাপনাকারী রোবট অ্যামি পুরো পেশাদারিত্ব বজায় রাখলেও, এমন হেনস্থার শিকার হতে হয় তাকেও। অনেকেই তাকে ফুল, চকোলেট আর হুইস্কি পাঠিয়ে থাকেন। এখানেই শেষ নয়, একবার এক ব্যবহারকারী তাকে অভিসারে যাওয়ার প্রস্তাবও দেন, যদিও তা প্রত্যাখ্যান করেছিল রোবটটি।