ক্যান্সার নির্ণয়ে ‘লিকুইড বায়োপসি’

মানবশরীরে ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ দেখা দেওয়ার অনেক আগেই ‘লিকুইড বায়োপসি’ রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয় করা সম্ভব হবে বলে দাবি করছে জিন সিকোয়েন্সিং প্রতিষ্ঠান ইলুমিনা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2016, 01:05 PM
Updated : 11 Jan 2016, 01:30 PM

এ নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে রোববার ‘গ্রেইল’ নামে নতুন আরেকটি প্রতিষ্ঠানও চালু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্যান-ডিয়েগোভিত্তিক ইলুমিনা। ইলুমিনার মূল পরিকল্পনা হচ্ছে, ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেই দ্রুতগতির জেনেটিক সিকোয়েন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের রক্তে টিউমার কোষের আলামত রয়েছে কিনা তার খোঁজ করা। টিউমার কোষে যে জেনেটিক মিউটেশন হয় তার খোঁজ করা হবে ওই পরীক্ষাতে।

‘লিকুইড বায়োপসি’ একেবারেই আনকোড়া নতুন প্রযুক্তি —এমনটা নয়। ক্যান্সারের চিকিৎসা কতটুকু কার্যকর প্রভাব ফেলছে সেটা যাচাই করার জন্য ‘লিকুইড বায়োপসি’ পরীক্ষার প্রচলন আছে।

গ্রেইল-এর সঙ্গে এর মধ্যেই জড়িত হয়েছেন অ্যামাজন-এর প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসসহ প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিজ্ঞান জগতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

এ প্রসঙ্গে ইলুমিনার প্রধান নির্বাহী এবং গ্রেইল-এর চেয়ারম্যান জে ফ্ল্যাটলে বলেন, “ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চলছে, তাতে এটি একটি টার্নিং পয়েন্ট বলে আমরা আশা করছি। সাধারণ একটি রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেই নিরাময়যোগ্য অবস্থায় ক্যান্সার চিহ্নিত করে মৃত্যুর হার ব্যাপক হারে কমিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য আমাদের।”

তবে পরীক্ষাটিকে জনসাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে সময় লাগবে আরও কয়েক বছর। ইলুমিনার ‘লিকুইড বায়োপসি’ পরীক্ষার বর্তমান খরচ ১ হাজার ডলার। সর্বসাধারণের নাগালের মধ্যে আনতে চাইলে এই পরীক্ষার খরচ কমিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। এ ছাড়াও বড় পরিসরে পরীক্ষাটির প্রচলনের আগে কয়েক হাজার মানুষের উপর চালানো পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে অনুমতি পেতে হবে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রকদের কাছ থেকেও।

অন্যদিকে ক্যান্সার চিহ্নিত করার জন্য শুধু একটি প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর না করার পরামর্শ দিয়েছেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা। কিছু ক্যান্সার টিউমার থেকে মিউটেশনের আলামত রক্তে মিশলেও সব ধরণের ক্যান্সারের শুরুর দিকে এমনটা হয় না। তাই লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেই নিরাময়যোগ্য অবস্থায় ক্যান্সার চিহ্নিত করার জন্য আরও বিকল্প প্রক্রিয়ার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনস্ট্রেশন’(এফডিএ)-এর। ‘পাথওয়ে জেনোমিক্স’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের ‘লিকুইড বায়োপসি’ পরীক্ষা আমলেই নেয়নি এফডিএ।

গ্রেইল ‘লিকুইড বায়োপসি’র মাধ্যমে যা করার চেষ্টা করছে একই প্রস্তাব করেছিল ‘পাথওয়ে জেনোমিক্স’। ওই প্রতিষ্ঠানটির বায়োপসি পরীক্ষার খরচ ছিল ৬৯৯৬৯৯ ডলার। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ওই পরীক্ষার কার্যকারীতার প্রমাণ দিতে পারেনি এবং জনসাধারণের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল এফডিএ।