ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ডব্লিউএমও-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১১ থেকে ২০১৫, এই পাঁচ বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ব তাপমাত্রার ডেটা পর্যবেক্ষণ করে ডব্লিউএমও জানিয়েছে, ২০১১-২০১৫ সালের গড় তাপমাত্রা ১৯৬১-১৯৯০ এর চেয়ে দশমিক ৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৮৮০-১৮৯৯ সাল থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গবেষকদের মতে, তাপমাত্রার এমন পরিবর্তনের প্রধান কারণ প্রশান্ত মহাসাগরের পানির তাপমাত্রা বাড়ার ফলে সৃষ্ঠ ‘এল নিনো’ এবং মানবসৃষ্ট ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’।
ডব্লিউএমও হিসেব অনুসারে, চলতি বছরের বসন্ত থেকে উত্তর গোলার্ধে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বৈশ্বিক গড় ঘনত্ব প্রথমবারের মতো তিন মাসে ‘৪০০ পার্টস পার মিলিয়ন ব্যারিয়ার’ অতিক্রম করেছে। ডব্লিউএমও- এর সেক্রেটারি জেনারেল এ প্রসঙ্গে বলেন “২০১৫ সালে বৈশ্বিক জলবায়ুর এমন ঐতিহাসিক রেকর্ডের পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। পরিমাপের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা রেকর্ডে ২০১৫ সাল উষ্ণতম বছর হতে পারে। এটা বিশ্বের জন্য একটা বড় দুঃসংবাদ।”
ডব্লিউএমও-এর সর্বশেষ ডেটা অনুসারে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড বিশ্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে গবেষকরা একমত হয়েছেন। ইউনিভার্সিটি অফ রিডিং- এর জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. এড হকিং বলেন, “পৃথিবীর সবখানেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাপমাত্রা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা থেকে ২০ শতাংশ অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে এর চেয়েও দ্রুত গতিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে”।
সাগর অতিরিক্ত তাপমাত্রা শোষণ করে নেয়, সে হিসাবে পৃথিবীর জলভাগ ৯০ শতাংশ তাপমাত্রা শোষণ করে। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা মানবসৃষ্ট গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের ফল। প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব দৃশ্যমান। চীনে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত উষ্ণতম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, আফ্রিকার রেকর্ড অনুসারে ২০১৫ সাল ছিল দ্বিতীয় উষ্ণতম সাল এবং ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে এ বছর ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। এছাড়াও ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রভাব দেখা গিয়েছে।