দুর্যোগ মোকাবেলায় রোবট

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের ফলে বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন রোবট কিংবা ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্যামেরা, মাইক্রোফোন এবং সেন্সর সম্বলিত এই রোবট ও ড্রোনগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবস্থানের ছবি প্রেরণ করে উদ্ধার কাজ বেশ সহজ করছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

নাইব মুহাম্মদ রিদোয়ানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2015, 09:12 AM
Updated : 27 August 2015, 09:12 AM

২০০৫ সালের ৩১ অগাস্ট হারিকেন ক্যাটরিনা মেক্সিকো উপসাগর উপকূলে আঘাত হানার দুদিন বাদে ওই এলাকায় রোবট প্রেরণ করা হয়। রোবটগুলো আক্রান্ত ব্যক্তি এবং উদ্ধারকারীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিএনএন জানিয়েছে, বর্তমানে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রযুক্তির ব্যবহার আরো বেড়েছে। এর ফলে দুর্যোগের সময় জানমালের নিরাপত্তা এবং সার্বিক অবস্থার উন্নয়নের মতো শ্রমসাধ্য ব্যাপার বেশ সহজ হয়েছে।

সেন্টার ফর রোবটিক অ্যাসিস্টেড সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ (সিআরএএসএআর)-এর পরিচালক ড. বিন মারফির বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, দুর্যোগের পরবর্তী ৭২ ঘন্টায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং দুর্যোগে বিঘ্নিত সেবা পুনরায় চালু করতে এই রোবটগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।

এ ছাড়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় ড্রোনের মত জনহীন ইউএভি যান বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মারফি অভিমত প্রকাশ করেন। এই ড্রোনগুলো দুর্যোগকালে আক্রান্ত স্থানের ছবি তুলে নিঁখুতভাবে থ্রিডি চিত্র তৈরি করে।

প্রেসিশন হক নামক ড্রোন আবার ছবি তোলার পাশাপাশি দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। এই ড্রোনগুলো নিঁখুত এবং ব্যবহার করা বেশ সহজ বলে জানিয়েছে সিএনএন।

এই ড্রোনগুলো থেকে প্রেরিত তথ্য বিশ্লেষণ করে একাধিকভাবে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা সম্ভব।

অবশ্য দুর্যোগের সময় ডেটা সংগ্রহে এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহনে এই ড্রোনগুলো যে যথেষ্ট কার্যকর হবে সে বিষয়ে খোদ ডক্টর মারফিই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

দুর্যোগকালে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সিআরএএসএআর এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো উপরের মহল থেকে সরাসরি নির্দেশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় থাকে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

ইউএভি ড্রোনগুলো যখন আকাশ পথে থাকে তখন ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি থেকে কাজ করে রোবোসিমিয়ান নামক রোবট। এই রোবটটি দুর্যোগকালীন পরিবেশে উপস্থিত থেকে কাজ করতে পারে। বিভিন্ন বস্তু স্ক্যান এবং সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা ছাড়াও রোবটটি স্বয়ংক্রিয় অঙ্গের মাধ্যমে ভাল্ভ চালু কিংবা ড্রিল করার মত কাজ করে থাকে।

ফুকুশিমা দুর্যোগে মারাত্মক বিপদজনক পরিবেশে এই রোবটটি কাজ করেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

তবে এই রোবট তুলনামূলক ধীরগতি সম্পন্ন বলে জরুরি সময়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিএনএন। এক্ষেত্রে ফাইন্ডার নামক বিশেষ রোবট কাজে আসতে পারে বলে সাইটটিতে জানানো হয়।

এই রোবটটি স্বল্পশক্তির রাডার ব্যবহার করে ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়া অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হার্টবিট শনাক্ত করতে পারে।

সবমিলিয়ে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং উদ্ধার কাজে এই রোবট কিংবা ড্রোন প্রযুক্তি যে বেশ কার্যকর তা বলাই যায়।