পুঁজিবাজার চাঙায় একগুচ্ছ প্রণোদনার দাবি

পুঁজিবাজার চাঙা রাখতে নিজেদের পাশাপাশি কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2017, 05:32 PM
Updated : 9 April 2017, 05:32 PM

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব দাবি জানায় তারা। রোববার সেগুনবাগিচায় এনবিআর’র সম্মেলন কক্ষে সংস্থার চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এই আলোচনা হয়।

ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর পুঁজিবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে আরও তিন বছর শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা চেয়েছে পুঁজিবাজারগুলো। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে তারা।

অপরদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান কর হারও কমানোর (৩৭.৫% থেকে কমিয়ে ২৫%) পক্ষে অভিমত তাদের।

স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে পুঁজিবাজারকে পাঁচ বছরের জন্য ক্রম হ্রাসমান হারে কর অবকাশ সুবিধার ঘোষণা দেয় সরকার।

ঘোষণা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারের আয় প্রথম বছরে শতভাগ, দ্বিতীয় বছরে ৮০ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ৬০, চতুর্থ বছরে ৪০ ও পঞ্চম বছরে ২০ শতাংশ হারে কর অব্যাহতি পাওয়ার কথা।

তবে ডিএসইর দাবি মেনে দ্বিতীয় বছর ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্যও শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা দেয় এনবিআর। সেই সুবিধা চলতি অর্থবছরসহ তিন বছরের জন্য বাড়ানোর দাবি তুলেছে দেশের দুই পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষ।

দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার সভায় বলেন, “আইন অনুযায়ী মোট শেয়ারের ২৫ ভাগ ২০১৭ সালের মধ্যে ‘কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের’ নিকট বিক্রয় করতে হবে, কিন্তু বিভিন্ন কারণে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর আয় হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে এই ন্যূনতম আয়ের উপর কর আরোপ করা হলে আমাদের শেয়ার প্রতি মুনাফা কমে যাবে, ফলে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রত্যাশিত মূল্যে শেয়ার বিক্রি করা কঠিন হবে।”

গুণগত মানসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারমুখী করার কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

“দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনের সাথে বাজার মূলধনের হার এখনও প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক নিচে অবস্থান করছে। পুঁজিবাজারের অফুরন্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে গুণগত মানসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারমুখী করার কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।”

এই আলোচনায় ডিএসই ও সিএসই ছাড়াও ব্যাংক, বীমা, লিজিং, মার্চেন্ট ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ অংশ নেয়।

বীমা খাতের উন্নয়নে আগামী বাজেটে এ খাতে আয়কর কমানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন-বিআইএ।

সংগঠনের নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিভিন্ন কারণে দেশের বীমা শিল্প অবহেলিত রয়ে গেছে। উন্নত বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই বীমা শিল্পের উন্নয়ন ও বীমাকে সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে আয়কর হার ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা যেতে পারে।”

এছাড়া বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কোম্পানিগুলোর লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে প্রদেয় ফি’র উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে বলেছে জানিয়ে তা থেকে অব্যাহতি চেয়েছে তারা।