সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়ানোর সুযোগ পেল পাঁচ ব্যাংক

সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়ানোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের সুযোগ পেয়েছে পাঁচটি ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2016, 03:39 PM
Updated : 20 July 2016, 04:33 PM

বুধবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৫৮০তম সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে সংস্থাটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

অনুমোদন পাওয়া ব্যাংক পাঁচ হচ্ছে- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এমটিবি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, সাউথইস্ট ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস লিমিটেড, শাহজালাল ব্যাংকের শাহজালাল ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এবি ব্যাংকের এবি ইনভেস্টমেন্ট এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

১০ টাকা ফেসভ্যালু (অভিহিত মূল্য) দিয়ে এক্সিস্টিং (বিদ্যমান) শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে নতুন শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক এনবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেড ৩০ কোটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকার মূলধন বাড়াবে। এবি ব্যাংকের এবি ইনভেস্টমেন্ট ৩০ কোটি ১১ লাখ ৪৩ হাজার শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বাড়াবে ৩০১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

শাহজালাল ব্যাংকের শাহজালাল ব্যাংক সিকিউরিটিজ ছয় কোটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৬০ কোটি টাকার মূলধন বাড়াবে।

এছাড়া সাউথইস্ট ব্যাংকের সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমটিবি সিকিউরিটিজ বাড়াবে যথাক্রমে ৩০০ কোটি ও ১২৫ কোটি টাকা।

এ জন্য সাউথইস্ট ব্যাংক ইস্যু করবে ৩০ কোটি শেয়ার। আর এমটিবি সিকিউরিটিজ ইস্যু করবে ১২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার।

আগামী তিন বছরের মধ্যে ব্যাংকের পুঁজিবাজার এক্সপোজারের (বিনিয়োগ) আইনাননুগ সীমার (ইক্যুইটির ২৫ শতাংশ) মধ্যে আনতে এই পাঁচ ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি (সহযোগী) প্রতিষ্ঠানের বর্ধিত মূলধন উত্তোলনের (শেয়ারের জন্য আমানত এবং/অথবা ঋণকে রূপান্তরের মাধ্যমে) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বাড়তি বিনিয়োগ (ইক্যুইটির ২৫ শতাংশের বেশি) চলতি বছরের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমন্বয়ের সময় বেধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ধারা ২৬ক অনুসারে বর্তমানে প্রতিটি ব্যাংক তার রেগুলেটরি মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। বিনিয়োগের পরিমাণ গণনায় ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের (ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক) মূলধনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এই আইন অনুসারে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলো স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এদের প্রতিটির রয়েছে আলাদা পর্ষদ। বিনিয়োগ, মুনাফা ও ঝুঁকি-সবই নিজস্ব।

‘এ যুক্তি দেখিয়ে’ সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে মূল ব্যাংকের এক্সপোজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে অযৌক্তিক হিসেবে দাবি করে আসছিলেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

২০১৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের সক্ষমতা কমিয়ে আনা হয়।

২০১৬ সালের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময় বেধে দেওয়া হয়। পুঁজিবাজারের দীর্ঘদিনের মন্দা কাটাতে এ সময় বাড়ানোর দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ সময় দুই বছর বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছিলেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত সময় না বাড়িয়ে এক্সপোজার গণনায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘পুঁজিবাজারের জন্য নীতি সহায়তা’ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঐ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়ানোর মাধ্যমে পাঁচটি ব্যাংককে পুঁজিবাজারে বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের অনুমোদন দিয়েছে।