ব্রাজিলকে বিদায় করে সেমিতে প্যারাগুয়ে

পুনরাবৃত্তিই হলো ইতিহাসের। টাইব্রেকারে আবারও ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমি-ফাইনালে উঠেছে প্যারাগুয়ে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2015, 11:39 PM
Updated : 28 June 2015, 05:51 AM

শেষ কোয়ার্টার-ফাইনালের নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। গত আসরে এই শেষ আটেই টাইব্রেকারে প্যারাগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্যারাগুয়ের প্রতিপক্ষ ‘ফেভারিট’ আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের পঞ্চদশ মিনিটে রবিনিয়োর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু চিয়াগো সিলভার ভুলে সমতায় ফেরে প্যারাগুয়ে। ৭২তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন দেরলিস গনসালেস। টাইব্রেকারে জয়সূচক গোলটিও সুইজারল্যান্ডের ক্লাব বাসেলের এই ফরোয়ার্ডের।

টাইব্রেকারে প্রথম পেনাল্টি কিক নিতে এসে লক্ষ্যভেদ করেন ফের্নানদিনিয়ো। প্যারাগুয়ের অসভালদো মার্তিনেসের শটও লক্ষ্যে থাকে।

ব্রাজিলের দ্বিতীয় শট ডান পোস্টের বাইরে দিয়ে মেরে দেন এভারতন রিবেইরো। তবে ভুল করেননি প্রতিপক্ষের ভিক্তর কাসেরেস।

তৃতীয় শটে গোল পান ব্রাজিলের মিরান্দা। প্যারাগুয়ের রাউল ববাদিয়াও গোলরক্ষককে কোনো সুযোগ দেননি।

দগলাস কস্তা চতুর্থ শটটি ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরে দিলে হতাশায় ভেঙে পড়ে ব্রাজিল সমর্থকরা। প্যারাগুয়ের রকে সান্তা ক্রুসও একই ভুল করায় তখনও আশা কিছুটা টিকে ছিল দুঙ্গার দলের।

পঞ্চম শটে ফিলিপে কৌতিনিয়ো লক্ষ্যভেদ করায় সব নজর ছিল জেফারসনের দিকে। কিন্তু পেনাল্টি থেকে প্যারাগুয়েকে সমতায় ফেরানো গনসালেসকে এবারও রুখতে পারেননি তিনি। বল জালে জড়াতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন প্যারাগুয়ের খেলোয়াড় আর কর্মকর্তারা।

চিলির কনসেপসিওনে বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরের এই ম্যাচে ‘ফেভারিট’ মনে হয়নি নেইমারবিহীন ব্রাজিলকে।

ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ফিলিপে কৌতিনিয়োর দূরপাল্লার শট প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক হুসতো ভিয়ার কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন।

তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। পঞ্চদশ মিনিটে ডান দিক থেকে দানি আলভেসের নিচু ক্রস রবের্তো ফিরমিনো ছেড়ে দিলে তা আসে রবিনিয়োর কাছে। মাপা শটে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল করেননি সান্তোসের এই স্ট্রাইকার।

দেশের হয়ে ৯৯টি ম্যাচ খেলে এটা রবিনিয়োর ২৮ নম্বর গোল। ২০১০ সালের পর এই প্রথম ব্রাজিলের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক কোনো ম্যাচে গোল পেলেন তিনি।

এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়াতে জোর চেষ্টা করেনি ব্রাজিল। এই সুযোগে মাঝমাঠে জায়গা পেয়ে গোল শোধের জন্য আক্রমণে যায় প্যারাগুয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে কর্নার থেকে প্যারাগুয়ের নেলসন ভালদেসের হেড ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে যায়।

পাঁচ মিনিট পর কর্নার থেকে এর চেয়েও ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছিল। এবার স্ট্রাইকার ভালদেসের হেড লক্ষ্যেই ছিল। তবে বল গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক জেফারসন।

তবে একের পর এক আক্রমণের সুফল পাঁচ মিনিট পরেই পায় প্যারাগুয়ে। ডি-বক্সে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে হাত লাগান ডিফেন্ডার চিয়াগো সিলভা। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি ১০ নম্বর জার্সিধারী দেরলিস গনসালেস।

গোল খেয়ে যেন টনক নড়ে ব্রাজিলের। তবে বেশ কয়েকবার আক্রমণে গেলেও বড় ধরনের বিপদ তৈরি করতে পারেনি দুঙ্গার দল। বরং ৮০তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আরেকটি সুযোগ তৈরি করে প্যারাগুয়ে। তবে গনসালেসের শট ঠেকিয়ে দেন জেফারসন।

টুর্নামেন্টের নক আউট পর্যায়ে একমাত্র ফাইনাল ছাড়া অন্য কোনো ম্যাচে অতিরিক্ত সময় না থাকায় খেলা সরাসরি গড়ায় টাইব্রেকারে।

চার বছর আগে কোপা আমেরিকার গত আসরে এই কোয়ার্টার-ফাইনালেই গোলশূন্য ম্যাচের পর টাইব্রেকারে একটি গোলও করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে প্যারাগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। এবার আর তার প্রতিশোধ নেওয়া হলো না সেলেসাওদের।

বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় সেমি-ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলবে প্যারাগুয়ে। আগের দিন প্রথম সেমি-ফাইনালে স্বাগতিক চিলির প্রতিপক্ষ পেরু।