আনন্দাশ্রুতে চাভির বিদায়

লিগ শিরোপা আগেই নিশ্চিত হওয়ায় দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে বার্সেলোনার ম্যাচটা ছিল শুধুই চাভিময়। সেখানে তার বিদায়টা জয়ের আনন্দে হলো না ঠিকই, কিন্তু ক্যারিয়ার জুড়ে যার এত অর্জন, সেখানে এই একটা হোঁচটে কিই বা এসে যায়? কোচ লুইস এনরিকে যেমন এক বাক্যে স্বীকার করে নিলেন, চাভির মতো আর কেউ কখনও আসবে না।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2015, 11:25 AM
Updated : 24 May 2015, 03:38 PM

ঘরের মাঠ কাম্প নউয়ে শনিবার রাতে লা লিগায় বার্সেলোনার হয়ে শেষ ম্যাচটা খেলে ফেললেন চাভি এর্নান্দেস। ১৭ বছরের বার্সা-বন্ধন ছিন্ন করতে চলা স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডারকে সম্মান জানাতে তার সতীর্থরা এ দিন 'তোমাকে ধন্যবাদ চাভি' লেখা জার্সি পরে খেলতে নামে। মেসি-বুসকেসতরা নিশ্চয়ই প্রিয় সতীর্থকে বিজয়ীর বেশেই বিদায় দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সে আশা পূরণ হয়নি; দেপোর্তিভোর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্রয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় বার্সেলোনাকে।

তাতে চাভির বিদায়ী উদযাপনটা একটু ফিকে হলো বটে, কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবগুলো ক্যামেরার আলো পড়ল তার উপর। শুরুটা হয়েছিল ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে, চাভিকে বসিয়ে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে মাঠে নামান এনরিকে। আস্তে আস্তে ৩৫ বছর বয়সী চাভি যখন ডাগআউটের দিকে হেটে আসছিলেন, কাম্প নউয়ের ৯৩ হাজার ৭৪৩ জন দর্শক তখন দাঁড়িয়ে বর্তমানের অদম্য বার্সেলোনার অন্যতম এই কারিগরকে সম্মান জানান।

ম্যাচ শেষের পর শুরু হলো চাভির বিদায়ের মূল আয়োজন। যাতে বাড়তি মাত্রা যোগ হলো বার্সেলোনার ২৩তম লিগ শিরোপা। অধিনায়ক হিসেবে শেষবারের মতো লা লিগা শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন তিনি। আর শিরোপা জয়ের আনন্দে মুহূর্তের মধ্যে চাভিকে ঘিরে ধরল মেসি, সুয়ারেসরা।

চাভির বাবা, মা, স্ত্রী, বন্ধুদের পাশে মেসি, সুয়ারেসদের পরিবারের সদস্যরাও বাদ থাকল না সে উদযাপনে। শিরোপা ঘিরে একের পর এক চলল ছবি তোলার পালা, সেখানেও কেন্দ্রবিন্দুতে চাভি। এত দিনের সতীর্থের সঙ্গে আরেকবার, শেষবারের মতো শিরোপা উদযাপনটা ক্যামেরাবন্দি করাটাই সবার যেন একমাত্র চাওয়া।

সেই ১৯৯১ সালে এগারো বছর বয়সে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন চাভি, ২৪ বছর পর এবার বিদায়ের পালা। মন চায় না যেতে, কিন্তু বাস্তবতার আলোকে এটাই সঠিক সময় বলে গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন তিনি নিজেই। কিন্তু শেষটা যখন এত কাছে, তখন আর আবেগকে ঘরে রাখতে পারলেন না ক্লাবের হয়ে ২৪টি শিরোপা জেতা এই তারকা। চোখের পানি আটকে রাখার লড়াইয়ের মাঝে নিজেকে 'বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ" বললেন তিনি।

লা লিগায় আর খেলা হবে না, কিন্তু বার্সেলোনার জার্সিতে এখনও দুবার মাঠে নামার সুযোগ আছে চাভির। দুটোই আবার ফাইনাল, ৩০ মে কোপা দেল রের ফাইনালে আথলেতিক বিলবাও এবং ৬ জুন উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইউভেন্তুসকে হারাতে পারলে 'ট্রেবল' জয়ের আনন্দে বিদায় নিতে পারবেন তিনি।

"ব্যক্তিগতভাবে আমি কাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে শেষ করতে চাই। আমরা এই ট্রেবল চাই, জানি এটা কতটা কঠিন, তারা (দুই প্রতিপক্ষ) আমাদের জন্য এটা কঠিন করে তুলবে।"

শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেবল জিতলে তো কথাই নেই, কিন্তু সেটা যদি নাও হয় চাভির শ্রেষ্ঠত্বে তার কোনো কমতি হবে না। কোচ এনরিকের কাছে যেমন চাভিই ইতিহাসের সেরা মিডফিল্ডার।

"চাভি একজন ফুটবল প্রতিভা এবং তিনি খেলাটির ইতিহাসের সেরা মিডফিল্ডার। বার্সেলোনাতে তার শূন্যতা কখনোই পূরণ করা যাবে না।"