রিয়ালকে বিদায় করে বার্সার প্রতিপক্ষ ইউভেন্তুস

প্রাণপণে লড়াই করেও শেষরক্ষা হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের। প্রতিযোগিতার সফলতম এই দলকে বিদায় করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পৌঁছেছে ইতালির চ্যাম্পিয়ন ইউভেন্তুস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2015, 09:00 PM
Updated : 14 May 2015, 10:05 AM

বুধবার ১-১ গোলে ড্র করলেও দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলে জিতেছে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ইউভেন্তুস।

প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম পর্বে ২-১ গোলে হেরে আসা রিয়ালের জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় পর্বের ড্রয়ে তাই বিদায় নিতে হয় শিরোপাধারীদের।  

একাদশ শিরোপার স্বপ্ন দেখা রিয়াল তাকিয়ে ছিল দলের সেরা তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর দিকে। তার গোলেই প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় স্পেনের দলটি। কিন্তু রিয়ালেরই সাবেক স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতার লক্ষ্যভেদে এক যুগ পর ফাইনাল নিশ্চিত করে ইউভেন্তুস।

বুধবার সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে প্রথম মিনিটেই সুযোগ তৈরি করে রিয়াল। গ্যারেথ বেলদের সুযোগ হাতছাড়া শুরুটাও তখন থেকেই। ষষ্ঠ মিনিটে দ্বিতীয় সুযোগটি হাতছাড়া করেন করিম বেনজেমা।

দশম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পেয়েছিলেন রোনালদো। সেবার অল্পের জন্য বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনিও।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণসীমায় ভীতি ছড়ায় দুই দলই। তবে স্বাগতিক দলের আক্রমণের ধার একটু বেশিই ছিল। রোনালদো-বেনজেমারা জানলুইজি বুফ্ফনকে একটু পরপরই পরীক্ষায় ফেলছিলেন।

কার্লোস তেভেস, আর্তুরো ভিদাল, পল পগবারা মাঝেমধ্যেই রিয়ালের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। কিন্তু ইকের কাসিয়াসকে খুব একটা ব্যস্ত রাখতে পারেননি তারা।   

জর্জো কিয়েল্লিনির এক ভুলে এগিয়ে যায় রিয়াল। ডি-বক্সের ভেতর তিনি হামেস রদ্রিগেসকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। পেনাল্টি থেকে রোনালদোর গোলে ২৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। ম্যাচের বাকি সময় এই ফল ধরে রাখতে পারলে ১৪তম বারের মতো ফাইনালে পৌঁছাতো তারাই।

কিছুক্ষণ পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ সুযোগ এসেছিল স্বাগতিকদের সামনে। বেনজেমার পাস থেকে রোনালদো বল বাড়ান বিপজ্জনক জায়গায় থাকা ইসকোকে। গোল করার মতো জায়গায় থেকেও সেবার বল জালে পাঠাতে পারেননি তিনি।

প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আরও কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে রোনালদো-বেনজেমারা। কিন্তু বুফ্ফনের দৃঢ়তায় ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি তারা।

তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ইতালির চ্যাম্পিয়নরা। পাল্টা-আক্রমণে তাদের ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে কার্লো আনচেলোত্তির শিষ্যরা। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা খুব একটা সফল হয়নি।

৫৭তম মিনিটে বের্নাবেউকে স্তব্ধ করে দেন মোরাতা। পগবার হেড থেকে বল পান এই স্ট্রাইকার। বুক দিয়ে বল নামিয়ে জোরালো শটে কাসিয়াসকে পরাস্ত করেন তিনি।

পাঁচ মিনিট পর দলকে এগিয়ে নেওয়ার দারুণ একটি সুযোগ আসে গ্যারেথ বেলের সামনে। খুব কাছ থেকেও এই উইঙ্গারের ভলি লক্ষ্যে থাকেনি। ৬৭তম মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে রদ্রিগেসের জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। এর তিন মিনিট পর অন্য প্রান্তে রিয়ালকে বাঁচান কাসিয়াস। মার্চিশিওর শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্যর্থ করে দেন তিনি।

আক্রমণের মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত রিয়াল-ইউভেন্তুস একের পর এক সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু শেষ বাধা আর পার হতে পারেনি কেউই। মোরাতা সমতা ফেরানোর পর খেলা অতিরিক্ত সময়ে নিতে অন্তত আর একটি গোল প্রয়োজন ছিল রিয়ালের। সেই গোলটি আর করতে পারেননি রোনালদোরা।

১৯৮৫ ও ১৯৯৬ সালে শিরোপা জেতা ইউভেন্তুস তাদের সাত ফাইনালের শেষটি খেলেছিল ২০০৩ সালে। আগামী ৬ জুন বার্লিনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলবে তারা।