অদম্য ফর্মে বার্সার আক্রমণ-ত্রয়ী

লিওনেল মেসি থেকে লুইস সুয়ারেস, সেখান থেকে বল গেল নেইমারের কাছে; গোল। আবার মেসির পা ঘুরে বল সুয়ারেসের কাছে, সেখান থেকে নেইমার; আবার গোল। গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে বায়ার্নের বিপক্ষে বার্সেলোনার দুটি গোলেই ছিল আক্রমণ-ত্রয়ীর ছোঁয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2015, 02:19 PM
Updated : 13 May 2015, 02:19 PM

প্রথম পর্বে মেসির জোড়া গোলের সঙ্গে নেইমারের একটি মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে জয় পায় বার্সা। তাই ফিরতি খেলায় ৩-২ গোলে হারলেও সব মিলিয়ে ৫-৩ গোলে এগিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠে লুইস এনরিকের দল।

আর্জেন্টিনার মেসি, উরুগুয়ের সুয়ারেস আর ব্রাজিলের নেইমার-বার্সেলোনার এমএসএন নামে পরিচিত হয়ে ওঠা দক্ষিণ আমেরিকার এই ত্রয়ী মঙ্গলবার বায়ার্নের মাঠে আরেকবার চোখধাঁধানো ফুটবল উপহার দেয়। 

এ মৌসুমে মেসি-সুয়ারেস-নেইমার ত্রয়ীর গোলবন্যাই ২০০৯ সালের পর আবার বার্সেলোনাকে ট্রেবল জয়ের কিনারে নিয়ে এসেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, স্পেনের লা লিগা ও কোপা দেল রে-এক মৌসুমে এই তিনটি শিরোপা জেতা প্রথম ক্লাব বার্সেলোনাই।

স্পেনের লা লিগায় আরেকটি ম্যাচ জিতলেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে বার্সেলোনার। সামনে আছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও কাপের ফাইনাল। দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেবল জয়ের ইতিহাস গড়া থেকে তাই বেশি দূরে নেই বার্সেলোনা।

মঙ্গলবার নিজেদের মাঠে প্রথম এগিয়ে যায় বায়ার্নই। এ মৌসুমেই তৈরি হওয়া এমএসএন ত্রয়ী এরপরই যেন জেগে ওঠে। ১৫ মিনিটের মধ্যে দলকে ফাইনালে তোলার কাজটি করে ফেলেন তারা।  

বায়ার্নের রক্ষণ ভেদ করে সুয়ারেসকে অসাধারণ এক পাস দেন মেসি। বলটিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মেসিকে আড়াআড়ি পাস দেন সুয়ারেস। নিজের সহজাত নিখুঁত ফিনিশিংয়ের আরও একটা উদাহরণ তৈরি করে ম্যাচের পঞ্চদশ মিনিটে বল জালে জড়ান নেইমার।

বার্সেলোনার পক্ষে ব্যবধান ২-১ করা গোলটিও আসে এই তিনজনের সমন্বয়ে। দারুণ এক ফ্লিক করে সুয়ারেসকে বল দেন মেসি। নি:স্বার্থ সুয়ারেস গোল করার মতো অবস্থায় থেকেও পাস দেন নেইমারকে। বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ করে ২৯তম মিনিটে বল বায়ার্নের জালে জড়ান ব্রাজিল তারকা।

এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নেইমারের গোল হলো নয়টি। এক গোল বেশি নিয়ে এখন পর্যন্ত এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি। আর সুয়ারেসের গোল ছয়টি।

সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই ত্রয়ী মৌসুমে ১১৪টি গোল করল, যেটা ক্লাব রেকর্ড। মেসি আবার ২৭টি গোলে সহযোগিতা করেন, সুয়ারেসের গোলে অবদান ১৬টি। আর নেইমার সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ছয়টি গোল।

বার্সেলোনা নিশ্চিতভাবেই ইতিহাসের সেরা আক্রমণভাগ গঠন করেছে। এই তিনজনের মধ্যে বয়সের দিক থেকে সবচেয়ে বড় সুয়ারেস, ২৮ বছর বয়স তার। মেসির বয়স ২৭ বছর, আর নেইমারের মাত্র ২৩। এটা আশা করাই যায়, বার্সেলোনার হয়ে আরও বেশ কয়েক বছর গোল করে যাবেন তারা এবং অনেকবারই মৌসুমে ১০০ গোলের মাইলফলকে পৌঁছাবে এই ত্রয়ী।

বায়ার্নের বিপক্ষে দ্বিতীয় পর্বে হেরে যাওয়ার পরও খুশি বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকে। এটা শুধু ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ার জন্যই নয়, তার আক্রমণ-ত্রয়ীর দারুণ ফর্মে থাকার জন্যও।

ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে মেসি-সুয়ারেস-নেইমারকে প্রশংসায় ভাসান এনরিকে।

“ত্রয়ীর মান নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই আমাদের। তাদের মধ্যে সংহতি আছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ করা ভীষণ কঠিন।”