বায়ার্নের বিপক্ষে বার্সার প্রতিশোধের লড়াই

শিরোপা জয়ের উল্লাসে পেপ গার্দিওলাকে কত না হাওয়ায় ছুড়েছেন মেসি-চাভি-ইনিয়েস্তারা। সাফল্যের আনন্দে প্রিয় শিষ্যদের কতবার বুকে জড়িয়ে ধরেছেন স্প্যানিশ এই কোচ। কিন্তু পেশাদারিত্বের বাঁধনে আজ আর গুরু-শিষ্যের ভূমিকায় নয়, একে অপরকে হারানোর লক্ষ্যেই কাম্প নউয়ে নামবে তারা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে গার্দিওলার দল বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামবে বার্সেলোনা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2015, 04:49 PM
Updated : 6 May 2015, 09:52 AM

গার্দিওলার অধীনে চার বছরে বিশ্ব সেরা ক্লাবে পরিণত হয়েছিল বার্সেলোনা; ২০০৮-২০১২ সাল পর্যন্ত দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ মোট ১৪টি শিরোপা জিতেছিল তারা। আর গার্দিওলা কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পরের মৌসুমই একেবারের শূন্য হাতে শেষ হয় দলটির। সে বছর এই বায়ার্নের কাছেই চরম লজ্জা পায় কাতালুনিয়ার দলটি; সেবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে মেসিদের ৭-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল জার্মানির ক্লাবটি।

বার্সেলোনার জন্যে এবারের লড়াইটা তাই শুধু ফাইনালে ওঠার মঞ্চ নয়, দুই বছরের আগের লজ্জা কাটানোর সুযোগও বটে। তাই প্রতিশোধের মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত হয়েই নিশ্চয় মাঠে নামবেন লিওনেল মেসিরা।           

বার্সেলোনার মাঠ কাম্প নউয়ে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায় শুরু হবে জমজমাট লড়াইটি।

গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগেও আলোচনায় উঠে আসছে বার্সেলোনার রক্ষণ নিয়ে পুরো মৌসুম জুড়ে থাকা দুশ্চিন্তার কথা। তবে তার প্রভাব আক্রমণত্রয়ীর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মাঠের লড়াইয়ে কখনই তেমন পড়েনি। এখন পর্যন্ত তাদের ‘ট্রেবল’ জয়ের সম্ভাবনা জোরালো থাকাতেই এর প্রমাণ মেলে।

সাম্প্রতিক সময়ে মূলত লাতিন আমেরিকার তিন তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেসে গড়া আক্রমণভাগেই অদম্য হয়ে উঠেছে বার্সেলোনা। তিন জন মিলে এখন পর্যন্ত এই মৌসুমে ১০৮টি গোল করেছেন, ক্লাবের হয়ে এক মৌসুমে করা মোট গোলের আগের রেকর্ডের চেয়েও আটটি বেশি।  

মাঠে নামলেই প্রতিপক্ষকে লন্ডভন্ড করে দিচ্ছেন এই তিন জন। মেসি ও নেইমার তো মৌসুমের শুরু থেকেই ফর্মে ছিলেন, সঙ্গে এই বছরের শুরু থেকে যোগ হয়েছে সুয়ারেসের দাপট।

এই মৌসুমে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক মেসি এখন পর্যন্ত ৫১টি, ব্রাজিলের তারকা নেইমার ৩৩টি এবং উরুগুয়ের স্ট্রাইকার সুয়ারেস ২৪টি গোল করেছেন। আর তাদের এমন বিধ্বংসী পারফরম্যান্সের কারণেই হয়তো লুইস এনরিকেকে ম্যাচ পরিকল্পনায় রক্ষণ নিয়ে খুব একটা ভাবতে হয় না।

বার্সেলোনার রক্ষণ নিয়ে সমস্যা থাকলেও গোলের হিসেবে কিন্তু তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না; লা লিগার শীর্ষে থাকা দলটি ৩৫ ম্যাচে মাত্র ১৯টি গোল হজম করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও তাদের রক্ষণ কখনই খুব বেশি ভেঙে পড়েনি।

প্রতিশোধের লক্ষ্যে স্পেনের জনপ্রিয় দলটির জন্যে আছে কিছু সুখবরও- পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন যত আহামরি দলই হোক না, চোট সমস্যা ঘিরে ধরেছে তাদের। মাংশপেশিতে চোট পেয়ে পুরো মৌসুমের জন্যই ছিটকে পড়েছেন আরিয়েন রবেন, বড় দুর্ভাবনা আছে ফরাসি তারকা ফ্রাঙ্ক রিবেরিকে নিয়েও। একই কারণে খেলতে পারবেন না রক্ষণের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ও।

স্ট্রাইকার রবের্ত লেভানদোভস্কিও চোটে ভুগছেন, গত মঙ্গলবার জার্মান কাপের সেমি-ফাইনালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চোয়াল ভেঙে যায় তার। তবে প্রয়োজনে আঘাত প্রতিরোধ করতে পারে এমন মুখোশ পরে মাঠে নামতে প্রস্তুত পোল্যান্ডের এই খেলোয়াড়।

প্রতিপক্ষ শিবিরে এত সমস্যা থাকার পরও ছোট-খাট ভুল এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে চান বার্সেলোনা কোচ এনরিকে। কারণ দলটি যে বায়ার্ন মিউনিখ, আর সেখানে কোচ পেপ গার্দিওলার উপস্থিতিও তার অন্যতম কারণ বটে।

“বায়ার্নকে যেমনটা দেখেছি আর পেপকে যেমন জানি, তাতে (ম্যাচে) কিছু পরিবর্তন এবং চমক থাকতে পারে, যা আমাদের জন্য বিষয়গুলো কঠিন করে তুলতে পারে।”