ম্যান সিটিকে হারিয়েই কোয়ার্টার-ফাইনালে বার্সা

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠতে হলে ম্যানচেস্টার সিটিকে একরকম অসাধ্যই সাধন করতে হতো, জন্ম দিতে হতো চরম নাটকীয়তার। তার কিছুই হয়নি, প্রথম লেগের মতো ঘরের মাঠেও জিতে সেরা আটের টিকেট নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2015, 09:53 PM
Updated : 18 March 2015, 10:32 PM

কাম্প নউয়ের ফিরতি লেগে ইভান রাকিতিচের একমাত্র গোলে জেতে বার্সেলোনা। এই জয়ে দুই লেগ মিলে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল কাতালুনিয়া ক্লাবটি। সিটির মাঠে ২-১ গোলে জিতেছিল লুইস এনরিকের দল।

বুধবার রাতে এই ম্যাচে একটি মাত্র গোল হলেও প্রায় পুরোটা সময়ই আধিপত্য ধরে রেখেছিল চারবারের চ্যাম্পিয়নরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই মেসি-নেইমারদের আক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছিল সিটির রক্ষণ। ভিনসেন্ট কোম্পানি ও মার্তিন দেমিচেলিসদের ভুলে প্রথম ৫ মিনিটেই দুইবার সিটির বিপজ্জনক সীমানায় বল পায়ে ঢুকে পড়ে বার্সেলোনা।

ভাগ্য সহায় হলে ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত বার্সেলোনা। কিন্তু নেইমারের ডান পায়ের শটটি পোস্টে লাগে। একাদশ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে মেসির দারুণ একটি প্রচেষ্টা সিটি গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেয়।

এরপর খানিকটা সময়ের জন্য খেলাটা মাঝ মাঠ কেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। ওই সময়ে আক্রমণ কিছুটা কমার পেছনে সিটির খেলোয়াড়দের অহেতুক মেরে খেলার প্রবণতাও দায়ী। তবে ঝিমিয়ে পড়া লড়াইয়ের মাঝেই ৩১তম মিনিটে ইভান রাকিতিচের গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।

গোলটিতে দারুণ ভূমিকা ছিল লিওনেল মেসির। দুই জনের বাধা এড়িয়ে আর্জেন্টিনা অধিনায়কের দেয়া চমৎকার ক্রস বুক দিয়ে নামিয়ে ডান পায়ের আলতো টোকায় এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার রাকিতিচ।

পিছিয়ে পড়ে অতিথি মিডফিল্ডার সামির নাসরি যেন মেজাজ হারিয়ে ফেলেন; নেইমারকে পেছন থেকে মারাত্মক ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। ৩৫ মিনিটের মধ্যে সিটির চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে হলুদ কার্ড পান তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও সিটির রক্ষণে চাপ ধরে রাখে বার্সেলোনা। ৪৮ ও ৪৯তম মিনিটে ভালো দুটি সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু দুটি আক্রমণই দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন গোলরক্ষক জো হার্ট।

৬৩ ও ৬৪তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর আরও দুটি সুযোগ নষ্ট করে স্বাগতিকরা। প্রথমে মেসির রক্ষণচেরা পাস থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন সুয়ারেস, আর পরের মিনিটে নেইমারের লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে একই ভুল করেন টানা চারবারের বর্ষসেরা তারকা।

৭৭তম মিনিটে ম্যাচে ফেরার সহজ সুযোগ পেয়েও হতাশায় ডোবে সিটি। নিজেদের ডি বক্সে বার্সেলোনার জেরার্দ পিকে প্রতিপক্ষের সের্হিও আগুয়েরোকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ডের ক্লাবটি। নিজেই শট নেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার, কিন্তু সেটা ঠেকিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক।

শেষ ৫ মিনিটে গোল করার প্রায় এক হালি সুযোগ পায় বার্সেলোনা, কিন্তু কোনোটিই কাজে লাগাতে না পারায় ব্যবধান আর বাড়েনি।

মানুয়েল পেল্লেগ্রিনির দলের এই হারের ফলে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের এবারের আসরে আর কোনো ইংলিশ ক্লাব থাকল না। গ্রুপ পর্বে লিভারপুলের বিদায়ের পর সেরা ষোলো থেকে একে একে ছিটকে পড়লো চেলসি, আর্সেনাল, আর এবার ম্যানচেস্টার সিটি।