বাংলাদেশকে হারিয়ে শিরোপা মালয়েশিয়ার

শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে স্বপ্ন ভাঙল বাংলাদেশের। রোমাঞ্চকর ফাইনালে স্বাগতিকদের ৩-২ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের শিরোপা জিতেছে মালয়েশিয়া।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2015, 01:07 PM
Updated : 8 Feb 2015, 03:44 PM

দর্শকে ঠাসা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববারের ফাইনালে নাজিরুল নাঈম ও কুমাহরানের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মালয়েশিয়ার তরুণ দলটি। দ্বিতীয়ার্ধে জাহিদ হাসান এমিলি ও ইয়াসিন খানের গোলে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। তবে যোগ করা সময়ে মোহাম্মদ ফাইজাতের গোলে শিরোপা ছিনিয়ে নেয় অতিথিরা।

টুর্নামেন্টের চার ম্যাচের সবগুলো জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো মালয়েশিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়ী দলের হাতে গোল্ড কাপের শিরোপা তুলে দেন।

ম্যাচ শুরুর আগেই বড় এক ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। গা গরম করতে গিয়ে পায়ের মাংশপেশিতে ব্যাথা পান গত তিন ম্যাচে বাংলাদেশের মিডফিল্ডে আলো ছড়ানো হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। তার বদলে মোনায়েম খান রাজুকে শুরুর একাদশে রাখেন বাংলাদেশ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ।

সপ্তম মিনিটে আরেকটি ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান আক্রমণভাগের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় জাহিদ হোসেন। তার বদলে মাঠে নামেন আব্দুল বাতেন মজুমদার কোমল।

হেমন্ত ও জাহিদকে হারানোয় প্রথমার্ধে বাংলাদেশের খেলা ছন্দহীন হয়ে পড়ে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই গোল তুলে নেয় মালয়েশিয়া। তবে, ম্যাচে প্রথম আক্রমণে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু দ্বাদশ মিনিটে ডি বক্সের জটলার মধ্যে থেকে জাহিদ হাসান এমিলি সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। এর কিছুক্ষণ পর জামাল ভূইয়ার দূরপাল্লার শট প্রতিপক্ষের পোস্ট ঘেষে বাইরে চলে যায়।

গোছালো ফুটবল খেলা মালয়েশিয়া ৩১তম মিনিটে এগিয়ে যায়। প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে ইয়াসিন খান বক্সের বাইরে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় অতিথি দলটি। তা থেকে বাম পায়ের অসাধারণ বাঁকানো শটে সোহেলকে পরাস্ত করেন মালয়েশিয়া অধিনায়ক নাঈম।

৩৯তম মিনিটে মামুনলের শট মালয়েশিয়ার রক্ষণভাগে বাধা পায়। পরের মিনিটেই প্রতি আক্রমণ থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় অতিথিরা। ‍মুহাম্মদ সিয়াজওয়ানের বাড়ানো বল এক দৌড়ে বাংলাদেশের জালে পৌঁছে দিয়ে আসেন অতিথি দলের আরেক ফরোয়ার্ড কুমাহরান।

দ্বিতীয়ার্ধের গোলের জন্য মরিয়া বাংলাদেশ শুরু থেকে আক্রমণের ধার বাড়ায়। ৪৮তম মিনিটে আক্রমণের ফল তুলে নিয়ে ব্যবধান কমায় স্বাগতিকরা। রায়হান হাসানের লম্বা থ্রোয়ে নিখুঁত হেড করেন জাতীয় দলের ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধূরী, তা প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড় ফিরিয়ে দেয়ার পর ফিরতি শটে জালে বল জড়িয়ে দেন এমিলি।

ব্যবধান কমানোর পর প্রতিপক্ষের গোল মুখে প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি করে বাংলাদেশ। ৫৪তম মিনিটে সমতায় ফেরা গোল পেয়ে যায় ক্রুইফের শিষ্যরা। মামুনুলের কর্নারে গতিময় হেডে ইয়াসিন খান লক্ষ্যভেদ করে স্কোরলাইন ২-২ করে দেন।

সমতা ফেরানোর পর আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু যোগ করা ৩ মিনিটের শেষ মিনিটে সিয়াজওয়ানের কর্নার থেকে উড়ে আসা বল অনেকটা লাফিয়ে উঠে হেড জালে ঢুকিয়ে দর্শকদের স্তব্ধ করে দেন ফাইজাত।

গোল্ড কাপের ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হয়েছে যোগ করা সময়ে বাংলাদেশের শিরোপা স্বপ্ন গুড়িয়ে দেয়া ফাইজাত। আর এই আসরের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন স্বাগতিক দলের মিডফিল্ডার জামাল ভূইয়া।