মালয়েশিয়ার কাছে হেরেই শুরু বাংলাদেশের

বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতার চড়া মাশুলই দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। মালয়েশিয়ার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে ১-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে স্বাগতিকরা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2015, 01:18 PM
Updated : 31 Jan 2015, 02:12 PM

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার জয়সূচক গোলটি করেন মোহাম্মদ সিয়াজওয়ান। ৫৩তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে সিয়াজওয়ানের নেয়া শট বাংলাদেশ গোলরক্ষক রাসেলের মাথার ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেয়। এ গোলই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়।

গত বছর অগাস্টে সিলেটের এ মাঠেই নেপাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে প্রীতি ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। সিলেটে জয় খরা কাটানোর লক্ষ্য এবারো পূরণ করতে ব্যর্থ হলো এমিলি-ওয়াহেদরা।

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে অগোছালো ফুটবলই খেলেছে বাংলাদেশ। চেনা মাঠ, দর্শকের সমর্থন পাশে থাকলেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় সুযোগ হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। অন্যদিকে বেশ গোছালো ফুটবল খেলে মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২৩ দল। তবে তাদের তিনটি শট পোস্টে লেগে ফিরলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
মালয়েশিয়ার একটি আক্রমণ ফিরিয়ে দেয়ার পর তৃতীয় মিনিটে আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারলে গোল হতে পারত কিন্তু জাহিদ হাসান এমিলি দ্রুত এগিয়ে গেলেও বলের নাগাল পাননি।
অষ্টম মিনিটে ভাগ্য পাশে থাকায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার মোহাম্মদ আরিফ ফারহানের দূরপাল্লার শট রাসেল মাহমুদকে পরাস্ত করলেও ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
ফিরতি আক্রমণে ফের গোলের সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। জাহিদ হোসেনের মাপা ক্রসে শেষ মুহূর্তের টোকাটি দিতে ব্যর্থ হন এমিলি। তার পেছনে থাকা সোহেল রানার নেয়া শটও লক্ষ্যে থাকেনি।
পঞ্চদল মিনিটে স্বাগতিকদের আবারো বিপদ থেকে রক্ষা করে গোলপোস্ট। অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের ভুল পাসে প্রতিপক্ষের এক ফুটবলার বল পেয়ে যান। তাকে ফেলে দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন আতিকুর রহমান মিশু। ডান দিক থেকে মালয়েশিয়া অধিনায়ক নাজিরুল নাইমের ফ্রি-কিকে আদম নুরের হেড ফিরিয়ে দেয় পোস্ট।
২২তম মিনিটে এমিলি আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া করেন। ডান দিক থেকে আক্রমণে যাওয়া জাহিদ প্রায় ফাঁকায় থাকা এমিলিকে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু শেখ রাসেলের এই ফরোয়ার্ড বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যর্থ হন।
২৭তম বক্সের বাইরে থেকে অতিথি দলের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ রেজোয়ান শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি আক্রমণে ফাঁকায় বল পেয়ে মালয়েশিয়ার এক ডিফেন্ডারকেও কাটাতে পারেননি এমিলি; তাতে আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের।
৩১তম মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। মামুনুলের কর্নারে ইয়াসিন খান হেড করলেও তা প্রতিপক্ষের রক্ষণ দেয়ালে আটকে যায়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে বেশ চাপের সৃষ্টি করে বাংলাদেশ কিন্তু কোনোটাই কাজে লাগাতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে পিছিয়ে পড়ার পর ফরোয়ার্ডের শক্তি বাড়ান বাংলাদেশ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। মিডফিল্ডার সোহেলকে তুলে নিয়ে ওয়াহেদ আহমেদ এবং ইয়ামিন আহমেদের জায়গায় মোহাম্মাদ শাখাওয়াত রনিকে নামান তিনি। তাতে স্বাগতিকদের খেলার গতি বাড়লেও গোল অধরাই থেকে যায়।
৮৩তম মিনিটে গোলের সেরা সুযোগটি তৈরি করে বাংলাদেশ। মামুনুলের ফ্রি-কিক থেকে পাওয়া বল দ্রুতই রনিকে বাড়িয়ে দেন জাহিদ। কিন্তু রনির শট অতিথি দলের গোলরক্ষক আটকে দিলে শেষ পর্যন্ত হারের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মামুনুলদের।
শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের বিপক্ষে আগামী সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আর আগামী শনিবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামেই গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে মালয়েশিয়া।