রোমাঞ্চকর থেকে ‘কুৎসিত’ বার্সা-আতলেতিকো ম্যাচ

স্প্যানিশ কাপের কোয়ার্টার-ফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে বার্সেলোনা-আতলেতিকো মাদ্রিদের রোমাঞ্চকর ম্যাচটি দেখাল ফুটবলের কুৎসিত রূপটিও।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2015, 09:02 AM
Updated : 29 Jan 2015, 02:09 PM

ম্যাচে আতলেতিকোর এগিয়ে যাওয়া, নেইমারের অসাধারণ ফিনিশিং, ‘বিতর্কিত’ পেনাল্টিতে আবার এগিয়ে যাওয়ার পর মিরান্দার আত্মঘাতী গোলে তা বিলীন হওয়া এবং নেইমারের জয়সূচক গোল তো ছিলই। এই সঙ্গে হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি, লাথি মারার চেষ্টা করে লাল কার্ড দেখা, সহকারী রেফারির দিকে বুট ছুড়ে মারা, বিরতিতে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে লাল কার্ড পাওয়াও দেখেছে ফুটবল-বিশ্ব।

বুধবার আতলেতিকোর মাঠ ভিসেন্তে কালদেরনে যুদ্ধের আবহ নিয়েই শুরু হয় ম্যাচটি। প্রথম লেগে ১-০ গোলে হারা আতলেতিকো মাদ্রিদ ফের্নান্দো তোরেসের প্রথম মিনিটের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়েরই ইঙ্গিত মেলে। ৮ মিনিট পর অসাধারণ এক গোলে নেইমার বার্সেলোনাকে সমতায় ফেরালে উপভোগ্য এক ম্যাচ দেখার শিহরণ জাগে ফুটবল রোমাঞ্চপিয়াসীদের মনে।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সুন্দর ফুটবলের রোমাঞ্চ আর থাকেনি কারো। বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকের ভাষায় ম্যাচটি শেষে ‘কুৎসিত’ হয়ে ওঠে। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, এ কারণেই দলের অন্যতম সেরা তারকা নেইমারকে মাঠ থেকে তুলে নেন।
“ম্যাচটি কুৎসিত হয়ে উঠলে (নেইমার) মাঠ থেকে উঠে আসে এবং আমরা (ম্যাচটিকে) আরও উত্তপ্ত হতে দিতে চাইনি।”
ম্যাচে আতলেতিকোর খেলোয়াড়রাই বেশি মারমুখী ছিলেন। একের পর এক ফাউল করে যাচ্ছিলেন তারা। আতলেতিকোর ৮ জন খেলোয়াড়ের হলুদ কার্ড দেখাতেই এর প্রমাণ মেলে। এই ৮ জনের দুজন আবার দুটি করে হলুদ কার্ড পাওয়ায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। বার্সেলোনার লিওনেল মেসিসহ হলুদ কার্ড দেখেন তিনজন।
ম্যাচের সৌন্দর্য মূলত প্রথমার্ধেই শেষ হয়ে যায়। প্রথমার্ধ শেষে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথেই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা।
প্রথমে নেইমার ও গার্সিয়ার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। তোরেস গার্সিয়াকে টেনে নিয়ে যান। তবে টানেলে এই ঘটনা নিয়ে গাবি ফের্নান্দেস মেজাজ হারিয়ে সেখানেই লাল কার্ড দেখেন।
১০ জন নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা আতলেতিকো ম্যাচে ফেরার চেয়ে যেন ফাউলেই বেশি মনোযোগ দিতে শুরু করে। একের পর এক ফাউল করে যায় তারা।
মেজাজ হারিয়ে আরদা তুরান সহকারী রেফারির দিকে বুট ছুড়ে মারেন। এর পরও অবশ্য বেঁচে যান তুরান। রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখাননি।
একটা পর্যায়ে অবস্থার আরও অবনতি হয়। আতলেতিকোর হুয়ানফ্রান নেইমারকে ৭টি আঙুল দেখিয়ে বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের ৭-১ গোলে হারটিকে মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
মারিও সুয়ারেস আবার মেসিকে দৌড়ে গিয়ে লাথি মারার চেষ্টা করেন। এই অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পান তিনি এবং লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
অবস্থা আরও বাজে হচ্ছে দেখে ৭৭তম মিনিটে নেইমারকে মাঠ থেকে তুলে নেন এনরিকে।
দ্বিতীয়ার্ধের এসব অপ্রীতিকর ঘটনায় খেলার সৌন্দর্যই নষ্ট হয়ে যায়। আর কোনো গোল না হওয়ায় প্রথমার্ধের ৩-২ স্কোরেই জয়ের হাসিতে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। দুই পর্ব মিলিয়ে ৪-২ গোলে জিতে কোপা দেল রের সেমি-ফাইনালে ওঠে লুইস এনরিকের দল।
ম্যাচ শেষে এই পরিস্থিতি নিয়ে এনরিকে শুধু বলতে পারলেন, “পেশাদারদের স্মার্ট হওয়া উচিৎ এবং জানা উচিৎ তারা সবাই সহ-ক্রীড়াবিদ।”