‘সমঝোতায়’ ক্রুইফের বিদায়?

নানা অভিযোগে জাতীয় দলের কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফকে বাদ দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। ডাচ এই কোচের পাল্টা অভিযোগে আগে থেকেই খারাপ সম্পকটা চূড়ান্ত পর্যায়ে যাচ্ছিল। তবে এখন বাফুফে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানের’ মাধ্যমে দুই পক্ষের সম্পর্ক শেষ করার কথা বলছে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2014, 05:13 PM
Updated : 20 Oct 2014, 05:13 PM

গত দুইদিন তোড়-জোড় করলেও কোচকে ‘বরখাস্ত’ করার কথা এখন সরাসরি বলতে রাজি নয় বাফুফে। সোমবার ক্রুইফের সঙ্গে আলোচনার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সহ-সভাপতি তাবিথ আওয়াল তাই সমঝোতার পথে হাটাঁর কথা বারবার বললেন।

“আসলে আমরা চাই না, কোনো পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হোক। কোচের সঙ্গে আমাদের যে আলোচনা হয়েছে, সেখানে চূড়ান্ত কোনো ফলাফল হয়নি। তবে দুই পক্ষই বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সমাধানের আগেও কোনো অভিযোগ-অনুযোগ থাকবে না, পরেও কিছু থাকবে না।”

“এ মুহূর্তে কোচের সঙ্গে যে চুক্তি আছে, তাতে আমাদের মনে হয় না, আমরা এ চুক্তি নিয়ে আর এগিয়ে যেতে পারব।”, যোগ করেন তিনি।

সোমবার সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে আসেন ক্রুইফ। আলোচনায় তিনি নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের এক কর্মকর্তাকেও নিয়ে আসেন। তবে আলোচনার পর সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে দ্রুতই চলে যান ক্রুইফ।

গত বছর জুনে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেয়ার সময় বাফুফেকে বেশ শক্ত করেই বেঁধেছিলেন এই ডাচ কোচ। নির্ধারিত সময়ের আগে তাকে বাদ দিলে ‘ক্ষতিপূরণ’ দেয়ার শর্ত আছে সেখানে। এর সঙ্গে আছে তার চার মাস বকেয়া বেতনের বিষয়টি।

বেতন বকেয়া ইস্যুতে ফিফার কাছে নালিশ করার কথা ক’দিন আগে ফেইসবুকে জানান ক্রুইফ। এ প্রসঙ্গে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেছিলেন, ক্রুইফের পাওনা বেতন পরিশোধের বিষয়ে ফিফার কাছে পরামর্শ চাইবেন তারা। তবে তাবিথ জানালেন, সমঝোতায় ‘তৃতীয় পক্ষকে’ আনতে চায় না বাফুফে।

“তৃতীয় পক্ষকে আমরা আর এখানে আনতে চাই না। যেন দুই পক্ষই খুশি থাকে, সে পথেই এগুচ্ছি।”

গত রোববার বাফুফের শোকজ নোটিশ পৌঁছেছে ক্রুইফের কাছে। সেখানে চুক্তির ধারা বরখেলাপের বিষয়টি উল্লেখ করে বাফুফের মনোভাব জানিয়ে দেয়া হয় তাকে। ক্রুইফকে শোকজ নোটিশের জবাব দেয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময়ও বেধে দেয় বাফুফে।

দুই বছরের জন্য গত বছর জুনে বাফুফের সঙ্গে ক্রুইফ চুক্তিবদ্ধ হন। ৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেন তিনি। বাফুফে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত কোচকে ১২ মাসের বেতন দিয়েছে তারা। সে হিসেবে চলতি মাসসহ বাফুফের কাছে চার মাসের বেতন পাওনা আছে ক্রুইফের।

চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৩০ দিন ছুটি পাওয়ার কথা ক্রুইফের। কিন্তু গত বছর জুলাই থেকে দায়িত্ব নিয়ে এ পর্যন্ত ২২৪ দিন ছুটি কাটিয়েছেন ডাচ কোচ।

‘বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানে’ বকেয়া বেতন ও অনান্য দেনা-পাওনার বিষয়টি এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। ক্রুইফ বিদায় নিয়ে পাওনা চার মাসের বেতনের সঙ্গে আরো কত অঙ্কের ‘ক্ষতিপূরণ’ দিতে হবে, নাকি চার মাসের বকেয়া দিলেই ‘সমাধান’ হয়ে যাবে, সে বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় বাফুফের কর্মকর্তারা।

ক্রুইফের সহকারী সাইফুল বারী টিটোকে আপাতত জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব দিয়েছে বাফুফে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ২টি প্রীতি ম্যাচ দিয়ে ফের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করবেন টিটো। এর আগে ২০১০ সালে জাতীয় দলের কোচ ছিলেন তিনি।