১৬ অক্টোবর, ২০০৪
অভিষেক
প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে লিওনেল মেসি প্রথম খেলতে নামেন ২০০৪ সালের ১৬ অক্টোবর। অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এসপানিওলের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ডেকোর বদলি হিসেবে নেমেছিলেন তিনি।
১ মে, ২০০৫
প্রথম গোল
বার্সেলোনার হয়ে লিওনেল মেসি প্রথম আনুষ্ঠানিক গোল পান নিজেদের মাঠ ক্যাম্প নউয়ে। রোনালদিনিয়োর সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে গোলটি আসে। পেনাল্টি বক্সের বাইরে রোনালদিনিয়োর পাস পেয়ে অদ্ভুত সুন্দরভাবে আলবাসেতের গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান মেসি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম গোল
পানাথিনাইকোসের বিপক্ষে বার্সেলোনার ৫-০ ব্যবধানের জয়ের দিনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম গোল পান মেসি। পানাথিনাইকসের রক্ষণভাগকে ছিন্নভিন্ন করে দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জালে পৌঁছে দেন তিনি। মেসির স্বভাবজাত প্রতিভার কাছে অসহায় ছিলেন গোলরক্ষক।
লিগে রিয়ালের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক
রিয়াল মাদ্রিদ তখন লিগে তাদের সেরা ফর্মে ছিল। এরকম একটা সময়েই দারুণ এক হ্যাটট্রিক করে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের দলটির বিপক্ষে বার্সেলোনাকে ড্র এনে দেন মেসি। 'এল ক্লাসিকো'তে হ্যাটট্রিক করা প্রথম ফুটবলার হয়ে যান তিনি।
১৭ এপ্রিল, ২০০৭
মারাদোনার মতো গোল
স্প্যানিশ কাপে গেতাফের বিপক্ষে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে মারাদোনার বিখ্যাত গোলটির কথা মনে করিয়ে দেন মেসি। প্রতিপক্ষের কমপক্ষে ৫ জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ফুটবল ইতিহাসের বিখ্যাত গোলগুলোর একটি করেন মেসি।
স্প্যানিশ কাপ ফাইনাল
শিরোপাহীন তিনটি মৌসুম কাটানোর পর পেপ গার্দিওলা আমলে প্রথম চ্যাম্পিয়নশিপ জিতলো বার্সেলোনা। আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে স্প্যানিশ কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার ৪-১ ব্যবধানের জয়ে একটি গোল করেন মেসি।
লা লিগা জয়
মেসির নৈপুণ্যে স্পেনের লা লিগা শিরোপা পুনুরুদ্ধার করে বার্সেলোনা। ২৩ গোল করে লিগের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন মেসি। আর বার্সেলোনার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন তিনি। সেবার বার্সেলোনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেন স্যামুয়েল এতো।
২৭ মে, ২০০৯
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রোম ফাইনাল
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন আর্জেন্টিনার তারকা ফরোয়ার্ড। হেড থেকে করা তার দুর্দান্ত সেই গোলে ইউনাইটেডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জেতে বার্সেলোনা।
প্রথম ব্যালন ডি'অর
ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর দেয়া ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার মেসি প্রথম জেতেন ২০০৯ সালে। এরপর আরো তিনবার ব্যালন ডি'অর জেতেন আর্জেন্টিনার 'ছোট্ট জাদুকর'। ততদিনে এই পুরস্কারের নাম ফিফা-ব্যালন ডি'অর হয়ে গেছে। ২০০৯ সালে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারও জেতেন মেসি।
প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপ জয়
আবু ধাবিতে ক্লাব বিশ্বকাপে দুটি গোল করেন মেসি। এর মধ্যে একটি ফাইনালে এস্তুদিয়ান্তেসের বিপক্ষে। এই গোলটিই বার্সেলোনাকে ক্লাব বিশ্বকাপে তাদের প্রথম শিরোপা জেতায়। মেসি টুর্নামেন্ট-সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পান।
শততম গোল
সেভিয়ার বিপক্ষে ক্যাম্প নউতে ক্লাব ক্যারিয়ারের শততম গোল করেন মেসি। এই ম্যাচেই তিনি ১০১তম গোলটিও পান।
স্পেনের সুপার কাপে হ্যাটট্রিক
সেভিয়ার বিপক্ষে বার্সেলোনার ৪-০ গোলের জয়ে তিনটি অবিশ্বাস্য গোল করেন মেসি। হ্যাটট্রিক গোলটি ছিল ক্লাবের হয়ে তার ১৩০তম। এই গোলটি দিয়ে তিনি রিভালদো আর স্যামুয়েল ইতোকে গোল সংখ্যায় ধরে ফেলেন।
রিভালদোকে ছোঁয়া
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এফসি কোপেনহেগেনের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন মেসি। এই দুই গোলে ক্লাবের রেকর্ড-বইয়ে নিজের নাম লেখান তিনি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় বার্সেলোনার তখনকার সর্বোচ্চ গোলদাতা রিভালদোকে ছুঁয়ে ফেলেন মেসি। প্রথম গোলটি তিনি করেন বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির এক শটে।
১৫০তম গোল
পানাথিনাইকোসের বিপক্ষে দলীয় নৈপুণ্যের অসাধারণ উদাহরণ রেখে ৫-১ গোলে জেতে বার্সেলোনা। জোড়া গোল করে এই জয়ে নেতৃত্ব দেন মেসি। এই দুই গোলে ক্লাবের হয়ে নিজের গোল ১৫০-এ নিয়ে যান তিনি। প্রথম গোলটি তিনি করেন চাভির পাস থেকে। দ্বিতীয় গোলটি মেসি করেন কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে। আর দেখে মনে হচ্ছিল মেসিকে থামানোর কোনো পথই জানা নেই সেই ডিফেন্ডারদের। এই ম্যাচে দুটি গোলে অবদানও রাখেন মেসি।
১০ জানুয়ারি, ২০১১
দ্বিতীয় ব্যালন ডি'অর
টানা দ্বিতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জেতেন মেসি। সেবার থেকেই প্রথম পুরস্কারটি ফিফা ও ফ্রান্স ফুটবল যৌথভাবে ফিফা ব্যালন ডি'অর নামে পুরস্কার দেয়া শুরু করে। এ বছরের ফিফা-ব্যালন ডি'অরের অনুষ্ঠানটি বার্সেলোনাময় ছিল। ভোটে মেসি প্রথম, চাভি দ্বিতীয় ও ইনিয়েস্তা তৃতীয় সেরা নির্বাচিত হন।
২৭ এপ্রিল ২০১১
বের্নাবেউতে উজ্জ্বল মেসি
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে করা তার দুই গোলেই রিয়ালকে ২-০ ব্যবধানে হারায় বার্সেলোনা এবং জায়গা করে নেয় ওয়েম্বলির ফাইনালে।
ওয়েম্বলি জয়
বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে স্পেনের ক্লাবটি। একটি গোল করেও ম্যাচের নায়ক হন মেসি। ওয়েম্বলির সবুজে বার্সেলোনার সুন্দর ফুটবলের ফুল ফোটানোয় নেতৃত্ব দেন আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড।
ইউরোপিয়ান সুপার কাপে প্রথম গোল
ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার এক মাস পর ইউরোপিয়ান সুপার কাপে নিজের প্রথম গোল পান মেসি। বার্সেলোনার ২-০ ব্যবধানের জয়ে একটি গোল করেন তিনি। আরো একটি শিরোপা জেতে স্পেনের ক্লাবটি।
গোলের দ্বিশতক
আরেকটা হ্যাটট্রিক পেলেন লিওনেল মেসি। এবার চেক প্রজাতন্ত্রের দল ভিক্তোরিয়া প্লজেনের বিপক্ষে। এই হ্যাটট্রিকটি বার্সেলোনাকে জয় এনে দেয়ার সঙ্গে মেসিকে পৌঁছে দিয়েছে ক্লাবের হয়ে ২০০তম গোলের মাইলফলকে।
আরেকটা ক্লাব বিশ্বকাপ জয়
জাপানে ব্রাজিলের ক্লাব সান্তোসকে উড়িয়ে দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা জেতে লিওনেল মেসি ও বার্সেলোনা। মেসির জোড়া গোলে ফাইনালটি ৪-০ ব্যবধানে জেতে স্পেনের ক্লাবটি।
১৫ জানুয়ারি, ২০১২
তৃতীয় ব্যালন ডি'অর
টানা তৃতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জেতেন মেসি। এবার ৪৭.৮৮ শতাংশ ভোট পান তিনি। এর আগে কোনো ফুটবলারই টানা তিনবার বর্ষসেরা হননি।
'কিং লিও'
এভারেস্ট ছোঁয়া জনপ্রিয় মেসি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ সাময়িকী টাইমের প্রচ্ছদ হন। প্রচ্ছদ প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, 'কিং লিও'। প্রতিবেদনটিতে মেসির সাফল্যের রহস্যের কথা বলা হয়।
এক ম্যাচে ৫ গোল
মেসি যেন প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, তার কোনো সীমা নেই! লা লিগায় স্পোর্তিং গিহনের কাছে হেরে তেতে ছিল বার্সেলোনা আর মেসি। তাদের সেই আঁচে পুড়ল বায়ার লেভারকুজেন। জার্মানির ক্লাবটিকে ৭-১ গোলে হারায় বার্সেলোনা, ৫টি গোলই করেন মেসি।
বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা
বার্সেলোনার হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে গোলের রেকর্ড নিজের করে নিলেন লিওনেল মেসি। গ্রানাদার বিপক্ষে দারুণ এক হ্যাটট্রিক করে বার্সেলোনার হয়ে নিজের গোল সংখ্যা ২৩৪-এ নিয়ে যান আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড। ছাড়িয়ে যান এক সময় অলঙ্ঘনীয় মনে হওয়া রদ্রিগেসের ২৩২ গোলের রেকর্ড। সেই ম্যাচে গ্রানাদাকে ৫-৩ গোলে হারায় বার্সেলোনা।
এক বর্ষপঞ্জিতে ৯১ গোল
লিওনেল মেসি যেন ফুটবলে রেকর্ডের বরপুত্র। একের পর এক রেকর্ড নিজের করে নিচ্ছেন তিনি। এরই পথে এক বছরে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটিও নিজের করে নেন তিনি। ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর ভায়াদোলিদের বিপক্ষে একটি গোল করে সে বছরে নিজের গোল সংখ্যা ৯১তে নিয়ে যান বার্সেলোনার 'গোল-মেশিন'। এর আগে এক বছরে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটি ছিল জার্ড মুলারের। ৮৫ গোল করেছিলেন তিনি। মেসির ৯১ গোলের ৭৯টি বার্সেলোনার হয়ে। বাকি ১২টি গোল তিনি করেন আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে।
আবার ব্যালন ডি'অর জয়
বর্ষসেরার পুরস্কারটা যেন নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন মেসি। ২০১৩ সালে চতুর্থবারের মতো এই পুরস্কার জেতেন তিনি।
গোলের রেকর্ড
২০১২-১৩ মৌসুমের প্রথম ভাগে ২৮ গোল করেন মেসি। লা লিগার ইতিহাসে প্রথম ভাগে কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ গোল এটি।
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩
গোলের ত্রিশতক
গ্রানাদার বিপক্ষে জোড়া গোলে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার ২-১ গোলে জয়ের ম্যাচে নিজের গোল সংখ্যা ৩০০তে নিয়ে যান তিনি। গ্রানাদার বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে টানা ১৪ ম্যাচে গোল পান মেসি।
লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা
চার ম্যাচ বাকি থাকতে লা লিগার শিরোপা জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা। আর এই সাফল্য অর্জনের পথে লিগে ১০০ পয়েন্ট পায় তারা। ৪৬ গোল নিয়ে মেসি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।
বার্সেলোনার সর্বোচ্চ গোলদাতা
বার্সেলোনার হয়ে সবধরণের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটিও নিজের করে নেন মেসি। ওসাসুনার বিপক্ষে দারুণ এক হ্যাটট্রিক করে তিনি ছাড়িয়ে যান পাওলিনো আলকানতারার করা ৩৬৯ গোলের রেকর্ডটি। আলকানতারা এই গোল করেন ৩৫৭ ম্যাচে। এর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ছিল ১৪২ গোল। আর ২২৭টি গোল তিনি করেন প্রীতি ম্যাচে।
দি স্তেফানোকে ছাড়িয়ে
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে স্বদেশি এবং রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি আলফ্রেদো দি স্তেফানোকে ছাড়িয়ে যান লিওনেল মেসি। এই হ্যাটট্রিকে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তার গোল দাঁড়ায় ১১টি। দি স্তেফানোকে ছাড়িয়ে 'এল ক্লাসিকো'র সর্বোচ্চ গোলদাতা হন তিনি। আর লা লিগায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনেও বসেন মেসি।