পাওলিনিয়োর হ্যাটট্রিকে উরুগুয়েকে উড়িয়ে দিল ব্রাজিল

দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করলেন পাওলিনিয়ো। সঙ্গে বরাবরের মতো জ্বলে উঠলেন নেইমার। আর তাতে উরুগুয়েকে তাদেরই মাঠে উড়িয়ে দিল ব্রাজিল। দারুণ জয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকেট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2017, 01:07 AM
Updated : 24 March 2017, 10:23 AM

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ৫টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি ৪-১ গোলে জিতেছে দারুণ ছন্দে ছুটে চলা ব্রাজিল। রিও অলিম্পিকে দেশকে সোনা জেতানো নেইমার একটি গোল করার পাশাপাশি আরেকটি গোলে সহায়তা করেন।

তিতের অধীনে এই নিয়ে টানা আট ম্যাচ জিতল সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিল।

মন্তেভিদিওতে ব্রাজিলের শুরুটা হতে পারতো দারুণ। মাঝমাঠের কাছ থেকে নেইমার বল নিয়ে এগিয়ে পাস দিয়েছিলেন ফিলিপে কৌতিনিয়োকে। ডি-বক্স থেকে লিভারপুলের এই মিডফিল্ডারের বাড়ানো বলে ফাঁকায় দাঁড়িয়েও পা লাগাতেই পারেননি ক্লাব সতীর্থ রবের্ত ফিরমিনো।

নবম মিনিটে নিজেদের ভুলে গোল খেয়ে বসে ব্রাজিল। ডি-বক্সের মধ্যে বুক দিয়ে গোলরক্ষকের উদ্দেশে ব্যাকপাস করেছিলেন মার্সেলো। সুযোগ বুঝে এগিয়ে যান কাভানি, বল ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়েন গোলরক্ষক আলিসন। তার হাতে লেগে পিএসজির স্ট্রাইকার পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজে। তা থেকে নিজেই দলকে এগিয়ে দেন চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত পিএসজির সর্বোচ্চ গোলদাতা কাভানি।

বেশিক্ষণ অবশ্য এগিয়ে থাকতে পারেনি নিষেধাজ্ঞার জন্য বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেসকে ছাড়া খেলতে নামা উরুগুয়ে। উনবিংশ মিনিটে দুর্দান্ত শটে দলকে সমতায় ফেরান পাওলিনিয়ো। নেইমারের পাস পেয়ে একটু এগিয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে ডান পায়ের আচমকা শটে উপরের ডান কোনা দিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন চীনের এভারগ্রান্দের এই মিডফিল্ডার।

৩৭তম মিনিটে রোলানের ফ্রি-কিকে মাতিয়াস ভেসিনোর হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় অতিথিরা।

দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে নেইমারের দারুণ ফ্রি-কিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। অবশ্য পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ডি-বক্সের মাথা থেকে ফিরমিনোর নীচু শট সিলভা ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি শটে অনায়াসে বল জালে পাঠান পাওলিনিয়ো।

৬১তম মিনিটে কাভানির ফ্রি-কিক ডান-দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান আলিসন।

৭৪তম মিনিটে দুর্দান্ত গোলে জয় নিশ্চিত করে ফেলেন নেইমার। মাঝমাঠ থেকে অধিনায়ক জোয়াও মিরান্দার উঁচু করে বাড়ানো বল ঊরু দিয়ে নামিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে ডান পায়ের চিপ শটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠান বার্সেলোনার এই তারকা ফরোয়ার্ড।

যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে ডান দিক থেকে ব্রাজিলের হয়ে শততম ম্যাচ খেলতে নামা দানি আলভেসের ক্রসে ছয় গজ বক্স থেকে বল বুক দিয়ে জালে ঠেলে দেন পাওলিনিয়ো।

এই জয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ১৩ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট হলো শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের। ২০০৬ ও ২০১০ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে ২৮ পয়েন্টই যথেষ্ঠ ছিল দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে চতুর্থ দল হিসেবে সরাসরি মূল পর্বের টিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা উরুগুয়ের পয়েন্ট ২৩।

পরের ম্যাচে মেসির একমাত্র গোলে চিলিকে হারিয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে আর্জেন্টিনা।

দিনের অন্য ম্যাচে হামেস রদ্রিগেসের একমাত্র গোলে বলিভিয়াকে হারিয়েছে কলম্বিয়া। ২১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে দলটি।

প্যারাগুয়ের কাছে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া একুয়েডর ২০ পয়েন্ট নিয়ে আছে পঞ্চম স্থানে।  ২০ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে যাওয়া কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলি আছে বিশ্বকাপে খেলতে না পারার শঙ্কায়।

দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ১০টি দেশের মধ্যে শীর্ষ চারটি দল সরাসরি রাশিয়া বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলবে। পঞ্চম দলটিকে প্লে-অফ খেলতে হবে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে।