মেসি-নেইমার-সুয়ারেসে বার্সার গোল উৎসব

সাম্প্রতিক সময়ে বার্সেলোনার জয়োল্লাস মানেই নায়কের ভূমিকায় লিওনেল মেসি, এদিনও তার ব্যতিক্রম হলো না। গোল উদযাপন করলেন ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর অন্য দুই তারকাও। আর তাতে আবারও স্পোর্তিং গিহনের বিপক্ষে গোল উৎসব করে জিতল লুইস এনরিকের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2017, 08:30 PM
Updated : 1 March 2017, 10:50 PM

কাম্প নউয়ে লা লিগার ম্যাচটি ৬-১ ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা। প্রথম পর্বে স্পোর্তিংকে তাদের মাঠে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল মেসিরা।

ঘরের মাঠে বুধবার রাতে দলকে এগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি একটি গোলও করান মেসি। বার্সেলোনার অন্য দুই গোলদাতা পাকো আলকাসের ও ইভান রাকিতিচ, আরেকটি আত্মঘাতী।

কাম্প নউয়ে ম্যাচের শুরুতেই বার্সেলোনা লাগাম ধরে ফেলে দুই মিনিটের ব্যবধানে দুবার স্পোর্তিং-এর জালে বল পাঠিয়ে।

দুই আর্জেন্টাইনের নৈপুণ্যে নবম মিনিটে অনেকটা আচমকাই এগিয়ে যায় তারা। চোট কাটিয়ে ফেরা হাভিয়ের মাসচেরানোর দারুণ উঁচু করে বাড়ানো বল হেড করে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে জড়ান মেসি।

ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলটি আত্মঘাতী হলেও তাতে দারুণ ভূমিকা নেইমার ও সুয়ারেসের। ব্রাজিলিয়ান তারকার রক্ষণচেরা পাস পেয়ে ডি বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বাইলাইন থেকে আড়াআড়ি শট নেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। ডিফেন্ডার হুয়ান রদ্রিগেসের পায়ে লেগে বল ভিতরে ঢুকে যায়।

গত কয়েক ম্যাচে ফুটে ওঠা বার্সেলোনার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার জায়গা রক্ষণভাগের দুর্বলতার সুযোগেই ২১তম মিনিটে ব্যবধান কমায় স্পোর্তিং। চাভি তরেসের পাস ধরে ডি বক্সে ঢুকে আলভারেসের নেওয়া শট লাগে পোস্টে। ফিরতি বল ফাঁকায় পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ফরোয়ার্ড কার্লোস কাস্ত্রো।

স্পোর্তিংয়ের ব্যবধান কমানোর স্বস্তি অবশ্য কিছুক্ষণ পরেই উবে যায়। ২৭তম মিনিটে দুর্দান্ত এক ভলিতে গোলরক্ষক কোয়েয়ারকে পুরোপুরি পরাস্ত করে স্কোরলাইন ৩-১ করেন সুয়ারেস।

পিচিচি ট্রফির দৌড়ে মেসির সঙ্গে সুয়ারেসের ব্যবধানটা থাকল আগের মতোই, দুই গোলের। ২১ গোল নিয়ে তালিকার শীর্ষে পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার, সুয়ারেসের গোল ১৯টি।

প্রথমার্ধের শেষ পাঁচ মিনিটে স্বাগতিকদের রক্ষণে চাপ বাড়ায় স্পোর্তিং। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড বুর্গুই দুবার রক্ষণ ভেঙে ভিতরে ঢুকেও পড়েন। এর মধ্যে তার একটি জোরালো কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরতে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে জয়টাও নিশ্চিত করে ফেলেন পাকো আলকাসের। ডান দিক থেকে মেসির পাস ধরে সোজাসুজি উঁচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন কিছুক্ষণ আগেই সুয়ারেসের বদলি নামা স্পেনের এই ফরোয়ার্ড।

৫৯তম মিনিটে হতে পারতো মেসির দ্বিতীয়; কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে তার ফ্রি-কিক ক্রসবারে লাগে। পরের মিনিটেই দলের সেরা তারকাকে তুলে নেন এনরিকে।

গত কয়েক ম্যাচে অনেকগুলো সুযোগ নষ্ট করা নেইমার এ ম্যাচের প্রথমার্ধেও গোলরক্ষককে একা পেয়ে ব্যর্থ হন। অবশেষে ৬৫তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পান তিনি। ডান দিক থেকে অসাধারণ বাঁকানো ফ্রি-কিকে লক্ষ্যভেদ করেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিন ম্যাচ পর গোল পেলেন গত মাসে একবার মাত্র জালের দেখা পাওয়া এই তারকা।

নির্ধারিত সময় শেষের তিন মিনিট আগে স্পোর্তিংয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন ইভান রাকিতিচ। দুরূহ কোণ থেকে বুলেট শটে বল জালে জড়ান ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডার।

এই জয়ে আপাতত শীর্ষে ওঠা বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ২৫ ম্যাচে ৫৭। তবে কিছুক্ষণ পরেই লাস পালমাসের বিপক্ষে মাঠে নামতে যাওয়া রিয়াল মাদ্রিদের সুযোগ আছে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধারের।