ছিটকে গেল চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীও

দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েও পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী। এগিয়ে যাওয়ার পর করল দুই গোল হজম। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের মুকুট ধরে রাখার মিশনে নামা সাইফুল বারী টিটোর দল এতদিন পর গ্যালারিতে ফেরা দর্শকদের হতাশ করে ছিটকেও গেলো সেমি-ফাইনাল থেকে।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2017, 02:39 PM
Updated : 28 Feb 2017, 04:25 PM

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার চতুর্থ সারির দল এফসি পচেয়নের কাছে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও ২-১ গোলে হেরেছে চট্টগ্রাম আবাহনী।

এ নিয়ে ফাইনালের আগে বাংলাদেশের তিনটি দলই ছিটকে গেল। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালের সেরা একাদশে তিনটি পরিবর্তন আনেন চট্টগ্রাম আবাহনী কোচ টিটো। চোটের কারণে সেরা একাদশে ছিলেন না গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে এক গোল করা এনকোচা কিংসলে। মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও মনসুর আমিনের জায়গায় শুরুর একাদশে ফেরেন সোহেল রানা ও জাহিদ হোসেন।

চার ডিফেন্ডার নিয়ে রক্ষণাত্মক কৌশল নিয়ে খেলতে নামা চট্টগ্রামের দলটি আক্রমণে যায় প্রথম মিনিটেই! গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে তিন গোল করা অগাস্টিন ওয়ালসনের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

পঞ্চম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগটি হেলায় হারান চিয়াগো তাইসন সিলভা। মামুনুল ইসলামের ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়ার জোরালো শট প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের গায়ে লাগার পর গোলমুখে পেয়ে যান তাইসন। ব্রাজিলের এই মিডফিল্ডার আলতো টোকা দেওয়ার সহজ কাজটুকুও করতে ব্যর্থ হন!

২৩তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। ডি বক্সের বাইরে জাহিদ ফাউলের শিকার হওয়ার পর মামুনুলের ফ্রি-কিক থেকে কর্নার পায় স্বাগতিকরা। ওয়ালসনের কর্নারও কর্নারের বিনিময়ে ফেরায় দক্ষিণ কোরিয়ার দলটি। এবার মামুনুলের কর্নার দূরের পোস্টের কাছে থাকা জামাল ভূইয়া ঠিকানায় পৌঁছে দেন। অবশেষে গ্যালারিতে ফেরা ফুটবলপ্রেমীরা পায় আনন্দের উপলক্ষ।

এগিয়ে যাওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলার গতি কমে যায় বিস্ময়করভাবে। জাহিদ, ওয়ালসনরা নেমে আসেন রক্ষণভাগ সামলাতে! ৩০তম মিনিটে পার্ক সিওং রিওলের শট ফিস্ট করে ফিরিয়ে দলের ত্রাতা আশরাফুল ইসলাম রানা। এরপর চো তায়ে ওর ব্যাক ভলি রানার হাত হয়ে পোস্টে লেগে ফিরলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় শিরোপাধারীরা।

শেষ দিকে চট্টগ্রামের রক্ষণে প্রচণ্ড চাপ দিতে থাকে এফসি পচেয়ন। ৩৮তম মিনিটে ইয়ামিন মুন্নার হাস্যকর ভুলে গোল খেতে বসেছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। মুন্নার ভুলে বল পেয়ে যাওয়া সিং সিওন হুনের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

৪৩তম মিনিটে সমতায় ফেরে এফসি পচেয়ন। পার্ক সিওংকে ডি-বক্সের মধ্যে মুফতা লাওয়াল ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। মাটি কামড়ানো শটে রানাকে পরাস্ত করেন জাং ইয়ং ইক।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এগিয়ে যায় এফসি পচেয়ন। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল মাপা শটে জালে জড়িয়ে দেন পার্ক সিওং রিওল।

ম্যাচে ফিরতে মরিয়া চট্টগ্রাম আবাহনীকে ভালোভাবে আটকে রাখে এফসি পচেয়নের ডিফেন্ডাররা। ৬১তম মিনিটে জাহিদকে তুলে নিয়ে ফেনী সকার থেকে ধারে খেলতে আসা চৌমরিন রাখাইনকে নামান টিটো। গত লিগে ছয় গোল করা এই ফরোয়ার্ডও দলকে এনে দিতে পারেননি কাঙ্ক্ষিত গোল।

৭৩তম মিনিটে ডি বক্সের জটলার মধ্যে গোল মুখে বল পেলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ ওয়ালসন ও সিলভা। বল দখলের এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের হাতে বল লাগলেও মামুনুলদের আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি।

৭৫তম মিনিটে সিলভার বদলি মানাফ রাব্বীকে নামান টিটো। ৮৫তম মিনিটে পার্ক সিওংয়ের শট আটকান রানা। একটু পর অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের দায়ে কিন চান হুইকে লালকার্ড দেন রেফারি। কিন্তু শেষ দিকে এক জন কম নিয়ে খেলেও জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ে দেশের বাইরে প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে আসা দক্ষিণ কোরিয়ার দলটি।