বাবার জন্য শিরোপা জিততে চান জাহিদ

যার হাত ধরে গুটিগুটি পায়ে ফুটবলের আঙিনায় আসা, ফুটবলার হয়ে ওঠা, সেই বাবা-ই কদিন আগে চলে গেলেন চিরদিনের মতো। পিতৃশোক সঙ্গে নিয়ে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের মুকুট ধরে রাখার মিশনে এসেছেন জাহিদ হোসেন। চট্টগ্রাম আবাহনীর এই ২৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানালেন, দুঃস্বপ্নময় একটি বছর ভুলে নতুন শুরু করতে চান। না ফেরার দেশে চলে যাওয়া বাবাকে উৎসর্গ করতে চান শিরোপা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2017, 11:54 AM
Updated : 25 Feb 2017, 11:54 AM

প্রশ্ন: কেমন আছেন সব মিলিয়ে?

জাহিদ: এই তো আছি কোনোরকম। জানেন-ই তো, আব্বা মারা গেলেন। তার অনুপ্রেরণাতেই ফুটবলে এসেছি। তিনিই আমার সবকিছু দেখতেন। ভালো-খারাপ সবসময় পাশে থাকতেন। গ্রামে বসে ঢাকায় আমি কি করছি, কেমন খেলছি, সব খবর নিতেন। কিন্তু যখন আমার সব হলো, তখন আব্বা চলে গেলেন।

এই দুঃসময়ে সতীর্থদের নিশ্চয় পাশে পাচ্ছেন?

জাহিদ: হ্যাঁ। সবাই সান্ত্বনা দিচ্ছে। সাহস দিচ্ছে। কোচকেও (সাইফুল বারী টিটো) পাশে পাচ্ছি। তিনি তো আমাকে অনেক আগে থেকেই জানেন। চেনেন।

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক কাপ তো আপনার জন্য বিশেষ কিছু। কিন্তু এবার শুরু থেকে দুঃসময় পিছু নিয়েছে...

জাহিদ: এখন পর্যন্ত এক ম্যাচ খেলেছি। আসলে আব্বার মৃত্যুর পর দলে যোগ দিয়েছি দেরিতে। একটু গুছিয়ে নেওয়ার বিষয়ও আছে। কোচও চাইছেন, আমি পুরোপুরি সবকিছুর সঙ্গে আগে মানিয়ে নেই; তারপর মাঠে নামি। আশা করি, সেমি-ফাইনালে শুরু থেকে খেলব।

চট্টগ্রাম আবাহনী সেমি-ফাইনালে উঠেছে কষ্টে। সব বাধা পেরিয়ে মুকুট ধরে রাখতে দল কতটা আত্মবিশ্বাসী?

জাহিদ হোসেন: আমাদের মাঠে খেলা; আমরা গতবারের চ্যাম্পিয়ন। লক্ষ্যও একটাই-শিরোপা ধরে রাখা। সেমি-ফাইনাল একটাই ম্যাচ; এখানে ভুল করার সুযোগ নেই। সেমিতে জিতলে আমরা ফাইনালে উঠব এবং নিজেদের দর্শকের সামনে খেলার সুবিধা থাকায় শিরোপা ধরে রাখাও সহজ হবে।

নিজেদের মাঠে খেলাটাকে কি চাপ মনে করছেন না?

জাহিদ: আমার কাছে চাপের কিছু নেই। অন্য কোথাও খেললে চাপ ছিল কিন্তু আমরা খেলব আমাদের মাঠে। চাপ-তাপ যাই থাকুক, আমাদের সেরাটা খেলে সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ফাইনালে উঠতে হবে এবং সেটা করতে আমরা আত্মবিশ্বাসী।

গতবার ৪ গোল করেছিলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর শিরোপা জয়ে। এবার এক ম্যাচ খেলেছেন; গোল পাননি। চার গোলের আশা আছে?

জাহিদ: যেহেতু গ্রুপ পর্বে খুবে বেশি খেলার সুযোগ হয়নি, সেহেতু গতবারের মতো গোল পাওয়ার সম্ভাবনা সত্যি বলতে নেই; ওই বিষয়টাও মাথায় নেই। তারপরও চেষ্টা করব। তবে ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে দলের সাফল্যটাই আমার কাছে বড়।

গত বছর জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলার পর জাতীয় দলের জার্সিতে আর খেলেননি। আরেকটি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সামনে....

জাহিদ: কি আর বলব? বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পর নিষিদ্ধ হলাম। এরপর আব্বার অসুস্থতা, দেশের বাইরে আব্বাকে নিয়ে থাকলাম চার-পাঁচ মাস। খেলা হলো না। একটা বছর চলে গেলো ক্যারিয়ার থেকে।

শেখ কামাল ক্লাব কাপ চলছে, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সামনে, মানসিকভাবেও ভালো নেই আপনি। এই মুহূর্তের ভাবনা কি?

জাহিদ: সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হবে। গত এক বছর আব্বাকে নিয়ে থাকতে হয়েছে। কিন্তু তিনি চলে গেলেন। এখন আমি কেবল তার জন্য দোয়া করতে পারি, সাফল্য উৎসর্গ করতে পারি। সে লক্ষ্য নিয়েই সামনের দিকে এগুবো।