‘ভারতকে ভয়ের কিছু নেই’

আফগানিস্তান বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ এবার স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায়। মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত টানা তিনবারের সেরা। তবে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে ভয়ের কিছু দেখছেন না আগেই সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরশিলিগুঁড়ি থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2016, 10:43 AM
Updated : 30 Dec 2016, 10:43 AM

প্রশ্ন: ভারতের বিপক্ষে খেলা ছয় ম্যাচের ছয়টিতেই হার বাংলাদেশের। শনিবার তাদের বিপক্ষে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই। হারের বৃত্ত থেকে এবার বেরিয়ে আসা সম্ভব?

গোলাম রব্বানী ছোটন: অনেক আগে থেকে বলে আসছি ভারত অনেক শক্তিশালী। ওদের দলে অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। আমাদের দলটা অন্যান্যবারের তুলনায় তরুণ। কিন্তু এই দলটা গত দুই–তিন বছর যাবৎ উন্নতি করছে। সেটার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমরা ভারতের সঙ্গে ভালো খেলার চেষ্টা করব। আমরা সেই খেলাটাই খেলার চেষ্টা করব, যেখানে গত কয়েক বছরে আমাদের উন্নতির ছাপটা যেন থাকে।

প্রশ্ন: উন্নতির ছাপ বলতে আসলে কি বোঝাতে চাইছেন?

ছোটন: আপনারা যারা গত কয়েক বছর ধরে মেয়েদের ফুটবলটা দেখছেন, আপনারাও এটা দেখতে পেয়েছেন, আগে মাঠে নামলে প্রতিপক্ষ নিয়ে মেয়েদের যে ভয়টা ছিল, সেটা এখন আর নেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের কথাই ধরুন, ওদের অনেক খেলোয়াড় ইউরোপ থেকে এসেছে। ওরা শারীরিকভাবে আমাদের চেয়ে শক্তিশালী কিন্তু আমাদের মেয়েরা প্রথম মিনিট থেকে প্রেসিং করে খেলেছে এবং ছয়টা গোলের মধ্যে তিনটা ওই প্রেসিং ফুটবল দিয়ে আদায় করে নিয়েছে। আগে ম্যাচের শুরু থেকে প্রতিপক্ষকে ঠেকানোর যে মানসিকতা ছিল, সেখানে পরিবর্তন এসেছে, এখন আমাদের মেয়েরা প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হতে জানে।

প্রশ্ন: তাহলে কি ভারতের ওপর আফগানিস্তান ম্যাচের মতো চড়াও হবে বাংলাদেশ? নাকি কৌশলে কোনো পরিবর্তন আসবে?

ছোটন: ভারতের বিপক্ষে অবশ্যই কৌশলে পরিবর্তন আসবে। যেহেতু তারা খুব শক্তিশালী, তাদের আক্রমণভাগে বালা দেবি, কমলা দেবি, সাসমিতা মালিকের মতো অভিজ্ঞরা রয়েছে, সেহেতু আমরা রক্ষণ ঠিক রেখেই আক্রমণে যাব। নিজের ঘর ঠিক রেখে আক্রমণে যাওয়ার লক্ষ্য আমাদের।

প্রশ্ন: রক্ষণাত্মক কৌশল সাজাচ্ছেন। তাহলে সেরা একাদশে কি আফগানিস্তান ম্যাচের মতো আক্রমণভাগে সাবিনা-স্বপ্না-কৃষ্ণা ত্রয়ী থাকছে না?

ছোটন: আফগানিস্তান ম্যাচে কৌশল ছিল অন্যরকম। যেদিন আমি শিলিগুঁড়ি এসেছিলাম, ওই দিনই ভারত ও আফগানিস্তানের ম্যাচটি দেখেছিলাম। তখন কৌশল সাজিয়েছিলাম, আফগানিস্তানের বিপক্ষে উইং দিয়ে খেলাব। কেবল আমাদের জাতীয় দল নয়, বয়সিভিত্তিক দলগুলোও স্পেশালি উইং দিয়ে খেলার চেষ্টা করে। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আমাদের আক্রমণভাগে ফরোয়ার্ড তিনজনই থাকবে; শুধু খেলার ছকে কিছু কৌশলগত কিছু পরিবর্তন আসবে।

প্রশ্ন: আফগানিস্তান ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে মিনিট দশেক আপনার রক্ষণভাগ আপ টু দ্য মার্ক ছিল না। সেটা নিশ্চয় মাথায় রেখে ভারতকে মাঝমাঠে আটকে রাখার ভাবনাও আছে আপনার?

ছোটন: এটা নিয়ে আমি আসলে কথা বলতে চাই না। কৌশলগত পরিবর্তনের দিকটা এ মুহূর্তে প্রকাশ না করাই ভালো। তবে এতটুকু বলতে পারি, বিকল্প অনেক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামব আমরা।

প্রশ্ন: ভারতের ভয়ে আপনাকে ভীত মনে হচ্ছে....

ছোটন: আসলে তা নয়। ভারত শক্তিশালী দল। বাস্তবতা মেনে তাদেরকে সমীহ করছি; ভয় পাচ্ছি না। ভয় পাওয়ার কিছু দেখছিও না। আমরা শুধু নিজেদের সেরাটা মাঠে ঢেলে দেওয়ার কথা ভাবছি।