আবারও দ্রুততম মানব মেজবাহ

টানা তৃতীয়বারের মতো দেশের দ্রুততম মানব হয়েছেন মেজবাহ আহমেদ। তবে মর্যাদার ১০০ মিটার স্প্রিন্টে গতবারের চেয়ে বেশি সময় নিয়ে দৌড় শেষ করেছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই অ্যাথলেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2016, 12:25 PM
Updated : 22 Dec 2016, 12:27 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ট্র্যাকে এবারও হ্যান্ড টাইমিংয়ে হওয়া প্রতিযোগিতায় ১০ দশমিক ৬৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হন মেজবাহ। গতবার ১০ দশমিক ৬০ সেকেন্ড সময় নিয়েছিলেন তিনি।

১০০ মিটার স্প্রিন্টে এবার চমক দেখিয়েছেন মেজবাহরই সতীর্থ এমএ রউফ। প্রথমবারের মতো জাতীয় অ্যাথলেটিকসে দৌড়াতে এসে ১০ দশমিক ৭০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন ২৫ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের পর মুকুট ধরে রাখতে পেরে খুশি মেজবাহ। নতুনদের উঠে আসাটা অ্যাথলেটিকসের জন্য ভালো বলে জানান তিনি।

“এবার প্রতিযোগিতা বেড়েছে। আমি তো একবার ভেবেছিলাম হেরে যাব। আমরা দু’জন নৌবাহিনীতে একসঙ্গে অনুশীলন করেছি। টাইমিংও প্রায় কাছাকাছি। হিটেও আমরা দু’জনই এগিয়েছিলাম। টাইমিংও প্রায় এক ছিল। আত্মবিশ্বাস ছিল আমরা দু’জনই ভাল করবো। কম্পিটিশন হওয়াটা আমাদের অ্যাথলেটিকসের জন্য খুবই ভাল দিক।”

“এই প্রথম সেরা হতে বেশি কষ্ট হলো। অন্যবার আমি খুব রিলাক্সে দৌড়িয়েছি এবং প্রথম হয়েছি। এবারই প্রথম শেষ দিকে আমাকে বেশি জোর দিয়ে দৌড়াতে হয়েছে। আমার পারফরমেন্স নীচে নেমে যায়নি, আসলে অন্যরা উঠে আসছে।”

২০১৩ সালে বাংলাদেশ গেমসে সোনা জেতা মেজবাহ ২০১৪ সালে অ্যাথলেটিকসের সামার মিটেও সেরা হন। ওই বছরই জাতীয় অ্যাথলেটিকসে প্রথম দ্রুততম মানবের মুকুট পরেন তিনি।

গত এসএ গেমসের হিটে ১০ দশমিক ৭২ সেকেন্ড তার অফিশিয়াল সেরা টাইমিং। ব্রাজিল অলিম্পিকে দৌড় শেষ করেছিলেন ১১ দশমিক ৩৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে। মেজবাহ জানালেন উন্নতি অনুশীলনের অভাবে আটকে রয়েছে তাদের উন্নতি।

“দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের অভাবেই আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পিছিয়ে পড়ছি। দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলন করলে দেখা যাবে টাইমিংটা ভাল হয়েছে। যেমন, এসএ গেমসে অল্পের জন্য চতুর্থ হয়েছি। সাফে প্রথম এবং তৃতীয় যারা হয়েছেন, তারা অস্ট্রেলিয়ায় টানা ২ বছর ট্রেনিং করেছে। দ্বিতীয় হওয়া হাসান সাদী যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছে ২ বছর। ওদের সঙ্গে তুলনা করলে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।”

শেষ ১৫ মিটারের আগ পর্যন্ত মেজবাহ-রউফ ছিলেন সমানে সমান। কিন্তু পরে আর পারেননি রউফ। তবে প্রথমবার প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টের ট্র্যাকে নেমে মেজবাহকে টেক্কা দেওয়া এই অ্যাথলেট জানালেন অভিজ্ঞতার কমতির কারণে হেরেছেন তিনি।

“মাত্র ৬ মাসের অনুশীলন করে এবারই প্রথম অংশ নিলাম। এর আগে কখনই অ্যাথলেটিকস করিনি। ফুটবল খেলতাম। আন্ত:ঘাটি ফুটবল টুর্নামেন্টে আমার ভাল রানিং দেখে রফিক স্যার আমাকে অ্যাথলেটিকসে নিয়ে এসেছেন। আসলে অভিজ্ঞতার কাছেই হেরে গেছি। মেসবাহ দীর্ঘদিন ধরে অ্যাথলেটিক্স করে। তবে দ্বিতীয় হয়েও আমি খুশি।”

নৌবাহিনী কোচ রফিকুল ইসলামও রউফের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী।

“ছেলেটার পেশি, গড়ন, সবকিছু দেখেই আমার মনে হয়েছিল ওকে দিয়ে হবে। তাই ছয়মাস আগে ডেকে পাঠাই এবং সপ্তাহে দু’দিন এখানে (বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে) এসে অনুশীলন করাই। আমার মনে হয়, টেকনিক্যালি ওকে আর শার্প করা সম্ভব।”

মেজবাহ-রউফদের আলো ছড়ানোর দিনে ছেলেদের ১১০ মিটার হার্ডলসে ১৪ দশমিক ২১ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মজিবুর রহমান। মেয়েদের ১০০ মিটার হার্ডলসে প্রথম হয়েছেন একই দলের জেসমিন আক্তার (১৪ দশমিক ৮০ সেকেন্ড)।

পুরুষদের ১ হাজার ৫০০ মিটার দৌড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের খন্দকার কিবরিয়া (৪ মিনিট ১ দশমিক ৯০ সেকেন্ড) ও মেয়েদের বিভাগে সেনাবাহিনীর সুমী আক্তার (৫ মিনিট ১৩ দশমিক ০৩ সেকেন্ড) প্রথম হয়েছেন। ২০ কিলোমিটার হাটায় এক ঘণ্টা ৩৯ মিনিট ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম হয়েছেন সেনাবাহিনীর মোহাম্মদ রাজু।