বঙ্গবন্ধু ভলিবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বাংলাদেশের

প্রস্তুতির ঘাটতি আছে, কিন্তু আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যোগ হয়েছে গত দুই বছরের অভিজ্ঞতা। দলে কোনো চোট সমস্যাও নেই। নিজেদের কোর্টে তাই বঙ্গবন্ধু এশিয়ান সিনিয়র ম্যানস সেন্ট্রাল জোন আন্তর্জাতিক ভলিবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2016, 10:50 AM
Updated : 21 Dec 2016, 10:50 AM

মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আগামী বৃহস্পতিবার স্বাগতিক বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, নেপাল, আফগানিস্তান এবং কিরগিজস্তানকে নিয়ে শুরু হবে এ প্রতিযোগিতা। গতবার সাত দলের মধ্যে পঞ্চম হয়েছিল বাংলাদেশ।

এবার মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাঈদ আল জাবির, কোচ আলি পোর আরোজি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে দিলেন চূড়ান্ত লক্ষ্য পূরণের প্রতিশ্রুতি। তবে দুজনের কথাতে প্রস্তুতির ঘাটতি মনের জোর দিয়ে পুষিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা বেশ স্পষ্ট।

গত অগাষ্টে প্রকাশিত বিশ্ব ভলিবলের সর্বশেষ র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ যৌথভাবে ১৩৭তম। ৭৭তম স্থানে আফগানিস্তান ও মালদ্বীপ। নেপাল ও কিরগিজস্তানের ঠাঁই হয়নি মোট ১৪৫ দেশ নিয়ে করা র‌্যাঙ্কিংয়ে।

র‌্যাঙ্কিং নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না অধিনায়ক জাবির। প্রস্তুতির কমতি মেনে নিয়ে অধিনায়ক জানালেন এবারের প্রতিযোগিতায় খেলা দলগুলো প্রায় ‘একই মানের’।

“আমরা গত ৯ নভেম্বর থেকে আবাসিক ক্যাম্পে প্রস্তুতি শুরু করেছি; বিদেশি কোচ এসেছেন ২৮ তারিখে। যতটুকু বুঝি, ভলিবলের জন্য এটা খুব কম প্রস্তুতি। বাইরে দেশগুলো লম্বা সময় ধরে অনুশীলন করে। কোনো টুর্নামেন্ট সামনে রেখে ন্যূনতম ছয় মাসের প্রস্তুতি লাগে। আমরা সে সময়টা পায়নি। তারপরও প্রস্তুতি যা হয়েছে, দলে কোন চোট সমস্যাও নেই-সে হিসেবে ভালোই।”

“এখানে দলগুলো সব সমান-সমান। মালদ্বীপ তুলনামূলকভাবে বেশি ভালো। তবে বাংলাদেশ অবশ্যই ফেভারিট। আশা করা যায়, আমরা চ্যাম্পিয়ন হব।”

২০১০ সাল থেকে ভলিবলের কোন দল ছিল না। ২০১৫ থেকে নতুন করে জাবিরদের নিয়ে শুরু। দুই বছরে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা এবার নিজেদের কোর্টে কাজে লাগাতে চান অধিনায়ক এবং তা বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই।

“গত দুই বছরে দলের সবাই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এখানেও যে দলগুলো অংশ নিচ্ছে, ওদের অনেকের সঙ্গে আমরা গত দুই বছরে অনেকবার খেলেছি। লক্ষ্য পূরণ করতে আমাদের সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।”

“প্রথম ম্যাচটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তান ভালো দল। সাউথ এশিয়ান গেমসে আমরা ওদের বিপক্ষে জিতেছি। প্রথম ম্যাচ জিততে পারলে আমাদের ভালো হবে; অনুপ্রেরণা থাকবে। জোর চেষ্টা চালাব প্রথম ম্যাচ জিততে।”

প্রস্তুতির কমতি স্বীকার করে নিয়ে ইরানি কোচ আলি পোর আরোজি জানালেন, সময়ের স্বল্পতায় দলের ‘টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল’ দিক নিয়ে বেশি কাজ করেছেন। অধিনায়কের সুরে সুর মিলিয়ে তিনিও দিলেন সেরা হওয়ার প্রতিশ্রুতি।

“ছেলেরা শারীরিক শক্তির দিক থেকে পর্যাপ্ত নয়, কিন্তু তারা খুবই চালাক। অধিনায়কের কথার সঙ্গে আমি একমত; কেন একমত হব না? এই টুর্নামেন্টে সেরা ফল পাওয়ার জন্যই তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে।”

আলি পোর আরোজির দেশ ইরান এশিয়ান ভলিবলের ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন। ২০১৫ সালের রানার্সআপ। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানালেন তার দেশের সাফল্যের গল্প। পাশাপাশি বললেন বাংলাদেশের করণীয়টাও।

“(ইরানের সাফল্যের কারণ) কঠোর পরিশ্রম। তাছাড়া গত ২৫ বছর ধরে আমাদের ওখানে সুপার লিগ হচ্ছে। খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লিগ। সেখানে লম্বা সময় ধরে ক্যাম্প চলে, বিদেশি কোচ, খেলোয়াড় আছে। পাইপলাইনে প্রচুর খেলোয়াড়ও আছে ইরানে।”

“বাংলাদেশের উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। এ মুহূর্তে ফেডারেশন ঠিক পথে আছে কিন্তু এটা পর্যাপ্ত নয়। তাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। যেমন, তরুণ খেলোয়াড় তুলে আনার জন্য ফেডারেশনের অনেক কাজ করা দরকার।”