রোনালদোর রেকর্ডে আতলেতিকোকে উড়িয়ে দিল রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2016, 09:36 PM
Updated : 20 Nov 2016, 11:51 AM

শনিবার রাতে ভিসেন্তে কালদেরনে ম্যাচের পুরোটা সময় আতলেতিকোর উপর আধিপত্য ধরে রেখে ৩-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। এরই সঙ্গে লিগে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে জয়খরাও কাটলো রোনালদোদের।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে গেল রিয়াল। ১২ ম্যাচে স্পেনের সফলতম দলটির পয়েন্ট ৩০। দিনের আরেক ম্যাচে  মালাগার সঙ্গে ঘরের মাঠে গোলশূন্য ড্র করা বার্সেলোনার পয়েন্ট ২৬।

গত তিন বছরে দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আতলেতিকোকে হারালেও লা লিগায় প্রতিবেশীদের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ ভুলতে বসেছিল রিয়াল। লিগে আতলেতিকোর বিপক্ষে শেষ ৬ ম্যাচের একটিতেও যে জয় ছিল না ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের; চারটিতে হারে ও দুটিতে ড্র করেছিল তারা।

এবারের লিগে আতলেতিকোর এটি টানা দ্বিতীয় ও মোট তৃতীয় হার। তিনটি পরাজয়ই এসেছে শেষ চার রাউন্ডে। এর মধ্যে একমাত্র মালাগাকে ৪-২ গোলে হারিয়েছিল দলটি।

একই শহরের বড় দুদলের উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচের প্রথমদিকে বল দখলে স্বাগতিকরা কিছুটা এগিয়ে থাকলেও দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নেয় জিদানের শিষ্যরা।

একাদশ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো রিয়াল। তবে ছয় গজ দূর থেকে রোনালদোর জোরালো হেড অসাধারণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। বল ঠেকানোর সময় তার শরীরের অনেকটাই ভিতরে ছিল; কিন্তু আসল কাজটা ঠিকই সারেন ইয়ান ওবলাক।

২০তম মিনিটে দিয়েগো গদিনের ভুলে বল পেয়ে যান রোনালদো। তার থেকে বল পেয়ে দূর থেকে জোরালো শট নেন লুকা মদ্রিচ, বাঁয়ে ঝাপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ওবলাক।

তিন মিনিট পরেই কিছুটা ভাগ্যের সহাযতায় এগিয়ে যায় রিয়াল। ২৫ গজ দূর থেকে রোনালদোর ফ্রি কিক ডিফেন্ডার স্তেফান সাভিচের গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়।

দিয়েগো সিমেওনের অধীনে এই প্রথম লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে কমপক্ষে একটি করে গোল খেল আতলেতিকো।

সমতায় ফিরতে মরিয়া আতলেতিকো দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করে। ২০ গজ দূর থেকে ইয়ানিক কারাসকোর জোরালো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার দুই মিনিট পর গোলমুখে পাস দেন অঁতোয়ান গ্রিজমান। কিন্তু বলে টোকা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না।

৬২তম মিনিটে এক সঙ্গে দুটি পরিবর্তন করেন সিমেওনে; মিডফিল্ডার গাবি ও শুরু থেকে অনুজ্জ্বল ফের্নান্দো তরেসকে বসিয়ে দুই ফরোয়ার্ড আনহেল কোররেয়া ও কেভিন গামেইরোকে নামান। পরের মিনিটেই কোকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন রোনালদো। বাদ যাননি স্প্যানিশ মিডফিল্ডারও।  

৭১তম মিনিটে ডিফেন্ডার সাভিচ ডি বক্সে বল বিপদমুক্ত করতে না পারায় রোনালদোকে ফাউল করে বসেন। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, তা থেকেই ব্যবধান বাড়ান পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।

ছয় মিনিট পরেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেন রোনালদো। বাঁ দিক থেকে গ্যারেথ বেলের দারুণ এক পাসে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে শুধু একটা টোকার দরকার ছিল, কোনো ভুল হয়নি এবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা তারকার।

এবারের লিগে রোনালদোর এটি অষ্টম এবং সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে দশম গোল। আতলেতিকোর বিপক্ষে ২৬ ম্যাচে এটি তার ১৮তম গোল। নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এতদিন রিয়ালের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি ছিল আলফ্রেদো দি স্তেফানো ও সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের দখলে; দুজনেই ১৭টি করে গোল করেছিলেন।

ম্যাচ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসার পর ৭৯তম মিনিটে ইসকোর পরিবর্তে চোট কাটিয়ে ফেরা করিম বেনজেমাকে মাঠে নামান কোচ। কিছুক্ষণ পর রোনালদোকেও তুলে নেন জিদান, নামান হামেস রদ্রিগেসকে।

দিনের প্রথম ম্যাচে দেপোর্তিভো লা করুনাকে ৩-২ গোলে হারানো সেভিয়ার পয়েন্ট ২৪। এক ম্যাচ কম খেলা ভিয়ারিয়াল ২২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে।

আর শীর্ষস্থানধারীদের চেয়ে ৯ পয়েন্টে পিছিয়ে পঞ্চম স্থানেই থাকল শিরোপাপ্রত্যাশী আতলেতিকো।