২০০৮ সালে প্রথম এএইচএফ কাপের শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। ২০১২ সালে শিরোপা ধরে রাখে অধিনায়ক জিমির হাত ধরে। এরপর নিষেধাজ্ঞা, আরও অনেক ঝামেলায় অধিনায়ত্ব হারান তিনি। এত দিন পর অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ফিরে পাওয়া জিমি জানালেন এএইচএফ কাপ দিয়ে হকির পরাশক্তিদের সমীহ পাওয়ার লক্ষ্যও আছে তার।
প্রস্তুতির ‘ভিন্নতায়’ সন্তুষ্টি
“আগে আমরা লম্বা সময় ধরে ক্যাম্পে থাকতাম। কি শিখলাম, প্রস্তুতি কেমন হলো, সেটা পরখ করে নেওয়ার খুব একটা সুযোগ মিলত না। পরিকল্পনাগুলো আমরা একবারে প্রয়োগ করতাম টুর্নামেন্টের মধ্যে এবং আমাদের কোনো ভিডিও ম্যানও থাকত না। তাতে দেখা যেত, আমরা যে পরিকল্পনা করেছি, সে অনুযায়ী কেমন খেললাম, সেটা দেখতে পারতাম না।”
“এবার অল্প কয়েক দিনের ক্যাম্প ছিল এবং অনুশীলনে যেটা শিখেছি, সেটা প্রস্তুতি ম্যাচে প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছি। সেখানেও আমরা কতটুকু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলাম, কি ভুলগুলো হলো, সেটা আমরা ভিডিও থেকে দেখে পরের অনুশীলনে শুধরে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। তাতে দিনকে দিন আমাদের ভুলভ্রান্তিগুলো কমছে।
‘রিজার্ভ বেঞ্চের সামর্থ্যে’ আরও আত্মবিশ্বাসী
১৮ জনের দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ মামুনুর রহমান চয়ন ও কামরুজ্জামান রানা। অসীম গোপ, খোরশেদুর রহমান, সারোয়ার হোসেনের সঙ্গে ঠাঁই মিলেছে তরুণ রোমান সরকার, আশরাফুল ইসলামের। দল নিয়ে খুশি জিমিকে আরও আত্মবিশ্বাসী করছে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়দের সামর্থ্য।
“অভিজ্ঞ হিসেবে চয়নের কাছে আমার প্রত্যাশা থাকবে অনেক। সে যেহেতু পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট, আমি চাইব পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। দলে যারা নতুন, তাদের কাছে আমার চাওয়া তারাও তাদের সেরাটা মাঠে মেলে ধরুক।”
“এবার আমাদের দলটা খুবই ভালো। কারণ আগে আমাদের বড় একটা সমস্যা থাকত বেঞ্চের খেলোয়াড় নিয়ে। খেলোয়াড় বদলের সময় সমস্যা হতো। এই সমস্যাটা এখন আমাদের অনেকখানি কেটে গেছে। বলতে গেলে-নেই। যারা এখন বেঞ্চে আছে, তাদের পারফরম্যান্সও ভালো। যদি ৫-১০ মিনিটের জন্যও বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামানো হয়, তাহলে যে খেলোয়াড়টা উঠে গেলো, তার অভাব অনুভূত হয় না আমাদের। এটা আমাদের অনেক বড় প্লাস পয়েন্ট।”
‘অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হতে চাই’
প্রতিযোগিতার স্বাগতিক হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আগামী শনিবার মুকুট ধরে রাখার মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। পুল ‘এ’তে জিমিদের বাকি দুই প্রতিপক্ষ চাইনিজ-তাইপে ও ম্যাকাও। অধিনায়ক হিসেবে সব প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধা আছে জিমির কিন্তু নিজ দলের চাওয়ার প্রশ্নে সোজা উত্তর-চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।
“২০১২ সালের পর অধিনায়কত্ব ফিরে পেলাম। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া সবসময় সম্মানের ব্যাপার। মাঝখানে কিছু সমস্যা ছিল, হয়ত সে কারণে আমি অধিনায়কত্ব পাইনি। সে সম্মানটা ফিরে পেলাম, এটা অবশ্যই আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার।”
“সর্বশেষ যেবার (২০১২) আমরা চ্যাম্পিয়ন ছিলাম, সেবারও আমি দলের অধিনায়ক ছিলাম। এবার সব মিলিয়ে প্রস্তুতি ভালো ছিল। সবকিছুই ভালো চলছে। টার্গেট অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়া এবং এ লক্ষ্য পূরণ করতে হলে আমাদের টিম গেম খেলতে হবে।”
“আমাদের খেলা দেখে যেন অন্য দেশগুলো, এশিয়ান হকি ফেডারেশনের প্রশংসা করে। তাতে আগামীতে অনেক দলের সঙ্গে আমাদের খেলার সুযোগও বাড়বে। যদি আমাদের পারফরম্যান্স ভালো থাকে, তাহলে যদি আমরা কোনো দেশকে সিরিজ খেলার জন্য প্রস্তাব দেই, তাহলে হয়ত তারা আরও বেশি আগ্রহ দেখাবে।”