রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে রিয়ালের হোঁচট

দুই ম্যাচ হাতে রেখে নকআউট পর্বে ওঠার সুযোগ ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। লেগিয়া ওয়ারসর মাঠে প্রথমে দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে জোর সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল তারা। তবে নাটকীয়তায় ভরা লড়াইয়ে উল্টো হারের শঙ্কা জাগে রিয়াল শিবিরে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য স্বস্তির এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2016, 09:42 PM
Updated : 3 Nov 2016, 12:20 PM

বুধবার রাতে পোল্যান্ডের দল ওয়ারস ও স্পেনের রিয়ালের মধ্যের ছয় গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছে।

গ্যারেথ বেল ও করিম বেনজেমার নৈপুণ্যে রিয়াল ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর লেগিয়া সমতায় ফেরে ভাদিস ও মিরোস্লাভ রাদোভিচের গোলে। পরে থিবোর গোলে লেগিয়া এগিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই রিয়ালকে সমতায় ফেরার স্বস্তি এনে দেন মাতেও কোভাসিচ।

ইউরোপীয় প্রতিযোগীতায় গোলের ‘সেঞ্চুরি’ করার হাতছানিতে মাঠে নেমেছিলেন এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৯৮ গোল করা রোনালদো। কিন্তু গোলমুখে একের পর এক ব্যর্থতায় শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ গোল করা এই পর্তুগিজ তারকাকে।

রিয়াল পারেনি তবে পেরেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। ‘এফ’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে স্পোর্তিংকে ১-০ গোলে হারিয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতে শেষ ষোলোয় উঠে গেছে জার্মানির ক্লাবটি।

ঘড়ির কাটায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য তখনও এক মিনিট পার হয়নি; কিন্তু উল্লাসের উপলক্ষ্য ঠিকই পেয়ে যায় রিয়াল। ৫৭ সেকেন্ডের মাথায় রোনালদোর হেড করে বাড়ানো বলে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো উঁচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন বেল।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের এটাই দ্রুততম গোল। তবে ওয়েলস ফরোয়ার্ডের চমৎকার গোলটি খেলোয়াড়, রেফারি আর মাঠ কর্মীরা ছাড়া কেউই সরাসরি উপভোগ করতে পারেনি। কারণ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লেগিয়ার সবশেষ ঘরের মাঠের ম্যাচে দর্শকরা সমস্যার সৃষ্টি করায় শাস্তিস্বরূপ বুধবার রাতে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলতে হয় স্বাগতিকদের।

দুই মিনিটের ব্যবধানে দারুণ দুটি সুযোগ নষ্ট হয় রিয়ালের। সপ্তদশ মিনিটে টনি ক্রুসের কর্নারে রাফায়েল ভারানের হেড গোললাইন থেকে ফেরান গোলরক্ষক। আর উনবিংশ মিনিটে বেনজেমার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলা বেল-বেনজেমা জুটিকে দ্বিতীয় গোল করা থেকে বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৩৫তম মিনিটে সতীর্থের ছোট পাস ধরে ১২ গজ দূর থেকে ডান পায়ের শটে পোস্ট ঘেষে বল জালে জড়ান ফরাসি স্ট্রাইকার বেনজেমা।

৪০তম মিনিটে ভাদিসের দুর্দান্ত এক গোলে ম্যাচে ফেরে ওয়ারস। প্রায় ২০ গজ দূরে বল পেয়ে কিছুটা আড়াআড়ি গিয়ে সামনে থাকা দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বিদ্যুৎ গতির শটে গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করেন বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার।

৫০তম মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারতো রিয়াল; কিন্তু বেলের জোরালো শট গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেওয়ার পর সতীর্থের পা ঘুরে আসা বলে নেওয়া রোনালদোর শট পাশের জালে লাগে।

৫৭তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আরেকটি চমৎকার শটে স্কোরলাইনে সমতা টানেন মিরোস্লাভ রাদোভিচ। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে আচমকা কোনাকুনি নীচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই সার্বিয়ান মিডফিল্ডার।

এর কিছুক্ষণ পর তিন মিনিটের মধ্যে দারুণ দুটি সুযোগ পান রোনালদো; কিন্তু সাফল্য পাননি। ৭০তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের সামনে দলের সেরা তারকা ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে রিয়াল, কিন্তু রেফারির সাড়া দেননি।

৮৩তম মিনিটে আবারও দূরপাল্লার শটে রিয়াল হতবাক করে দেয় লেগিয়া। ডি বক্সের বাইরে থেকে ফরাসি মিডফিল্ডার থিবোর জোরালো শট পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। এর দুই মিনিট পরেই দানিয়েল কারবাহালের ব্যাকহিল করে বাড়ানো বল থেকে হার এড়ানো গোলটি করেন অস্ট্রিয়ার মিডফিল্ডার কোভাসিচ।

যোগ করা সময়ে বেলের শট পোস্টে লাগলে পয়েন্ট হারানোর হতাশাতেই মাঠ ছাড়তে হয় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।

চার রাউন্ড শেষে শেষ ষোলোর টিকেট নিশ্চিত করা বরুসিয়ার পয়েন্ট ১০। দুই পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল। স্পোর্তিংয়ের পয়েন্ট ৩। চতুর্থ স্থানে থাকা লেগিয়ার পয়েন্ট ১।

‘ই’ গ্রুপে শীর্ষে থাকা মোনাকো ৩-০ গোলে হারিয়েছে সিএসকেএ মস্কোকে। আর বায়ার লেভারকুজেন ১-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পারকে।

ফ্রান্সের দল মোনাকোর পয়েন্ট ৮। দুই পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে জার্মানির ক্লাব লেভারকুজেন। ইংল্যান্ডের ক্লাব টটেনহ্যাম ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে। সিএসকেএ মস্কোর পয়েন্ট ২।