মেসির হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল ম্যান সিটি

চোট থেকে সেরে বদলি হিসেবে নেমে লা লিগায় আগের ম্যাচে দিয়েছিলেন ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শুরু থেকেই খেলতে নেমে প্রায় একাই ম্যানচেস্টার সিটিকে গুঁড়িয়ে দিলেন লিওনেল মেসি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2016, 08:45 PM
Updated : 19 Oct 2016, 10:26 PM

মেসির হ্যাটট্রিক আর নেইমারের লক্ষ্যভেদে ৪-০ গোলে সিটিকে হারিয়েছে লুইস এনরিকের দল।

বার্সেলোনার কাছে ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় আরেকটি ম্যাচ হারল সিটি। ক্যাম্প নউ ছাড়ার পর আরেকবার ফেরত এসে আবার হতাশ হতে হলো দলটির নতুন কোচ পেপ গুয়ার্দিওলাকে।

কাম্প নউতে বুধবার রাতে শুরুটা ভালো করার পর প্রথম গোল পেতে স্বাগতিকদের অপেক্ষা করতে হয় সপ্তদশ মিনিট পর্যন্ত। শুরুটা করেন মেসিই। বাঁ দিক থেকে ডি-বক্সে ইনিয়েস্তাকে বল দিয়ে নিজেও ঢুকে পড়েন। ফের্নান্দো পিছলে পড়ে যাওয়ায় ফাঁকায় বল ফেরত পেয়ে গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভোকে ফাঁকি দিতে কোনো সমস্যা হয়নি আর্জেন্টিনা অধিনায়কের।

একটু পর কাছ থেকে সুয়ারেসের জোরালো শট সাইড নেটে লাগায় ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি। আধ ঘণ্টার মাথায় ডি-বক্সের সীমানায় নেইমারে পা থেকে বল বিপদমুক্ত করেন ব্রাভো।

বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনকে বড় কোনো পরীক্ষায় পড়তে হয় ৩৮তম মিনিটে। জার্মান মিডফিল্ডার ইলকায় গুনদোয়ানের শট বাঁয়ে ঝাপিয়ে ঠেকান জার্মান এই গোলরক্ষক।

সিটির সবচেয়ে ভালো সুযোগটা আসে বিরতির খানিক আগে। ফ্রি-কিক থেকে ফাঁকায় থাকা জন স্টোনসের জোরালো হেড একটুর জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

যোগ করা সময়ে সুয়ারেসের নীচু শট পা দিয়ে ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়াতে দেননি বার্সেলোনা ছেড়ে এ মৌসুমেই সিটিতে যোগ দেওয়া ব্রাভো। তবে দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে দলকে বিপদে ফেলে লাল কার্ড দেখে বিদায় নেন তিনি।

অনেক বাইরে বেরিয়ে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে সুয়ারেসের পায়ে তুলে দিয়েছিলেন ব্রাভো। উরুগুয়ের স্ট্রাইকারের লব গোলে যাওয়া ঠেকাতে ডি-বক্সের বাইরেই হাত দিয়ে বল ঠেকান চিলির এই গোলরক্ষক।

১০ জনের সিটি দুর্দান্ত খেলতে থাকা মেসিকে ঠেকাতে পারেনি। ৬১তম মিনিটে ইনিয়েস্তার বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সের একটু ভেতর থেকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বল জালে পাঠান আর্জেন্টিনার এই ফরোয়ার্ড।

আট মিনিটের মধ্যেই আসে হ্যাটট্রিক। বাঁ দিক থেকে সুয়ারেসের ক্রস কেবল জালে ঠেলে দিতে হয় পাঁচ বারের বর্ষসেরা এই ফুটবলারের।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ মৌসুমে দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই হ্যাটট্রিক করলেন মেসি।

৭৪তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে জেরেমি ম্যাথিউ মাঠের বাইরে গেলে বার্সাও ১০ জনের দলে পরিণত হয়। তবে ম্যাচে ফিরতে পারেনি সিটি।

৮৭তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি নেইমার। ডানে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন বদলি গোলরক্ষক উইলি কাবাইয়েরো। ঝড়ের গতিতে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া মেসিকে কোলোরভ ফেলে দিলে স্পটকিকের বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।

তবে দুই মিনিট পরই ডি-বক্সে ঢুকে পায়ের জাদুতে দুই খেলোয়াড়কে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান নেইমার।

২০১৪-১৫ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে কাম্প নউয়ে ৩-০ গোলে হেরেছিল গুয়ার্দিওলার বায়ার্ন মিউনিখ। এবার সাফল্য পেলেন না সিটিকে নিয়েও, যারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত তিন বছরে চারবার বার্সেলোনার মুখোমুখি হয়ে চার বারই হেরেছিল।

‘সি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে সেল্টিককে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে ২-১ গোলে হারায় বার্সেলোনা। তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে এনরিকের দল।

বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে শুরু করা সিটি দ্বিতীয় রাউন্ডে সেল্টিকের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা দলটির পয়েন্ট ৪।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে সেল্টিককে ২-০ গোলে হারিয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে জার্মানির বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ। ১ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে স্কটল্যান্ডের দল সেল্টিক।