রিওতে বাংলাদেশেরও জয়

অলিম্পিকে কখনও কোনো কোনো পদক জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে রিওর আসরে একটি সোনার পদকের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। ভারসাম্যের অসামান্য নিদর্শন আর দুর্দান্ত শারীরিক কলাকৌশল দেখিয়ে জেতা রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সের সোনার পদকটি বাংলাদেশেরও বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশি বাবা আর রুশ মার ঘরে জন্ম নেওয়া মার্গারিতা মামুন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2016, 02:00 AM
Updated : 22 August 2016, 04:54 AM

মস্কোতে জন্ম নেওয়া ২০ বছর বয়সী মামুন গেমসের পঞ্চদশ দিনে বাংলাদেশ সময় শনিবার গভীর রাতে ব্যক্তিগত অল-অ্যারাউন্ড ইভেন্টে সোনা জেতার পর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘এই জয় দুই দেশের জন্য’।

মস্কোতে জন্ম নেওয়া মামুনের বাবা মেরিন প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাশিয়াতেই থিতু হয়েছেন। মা সাবেক রিদমিক জিমন্যাস্ট আন্নার কাছ থেকেই দীক্ষা পেয়েছেন তিনি।

রিদমিক জিমন্যাস্টিক্সে রাশিয়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে আলোড়ন তোলা মামুন ‘দ্য বেঙ্গল টাইগার’ হিসেবে পরিচিত। তবে রিওতে শক্তি দিয়ে নয়, মামুন প্রতিপক্ষদের ঘায়েল করেন হুপ, বল, ক্লাব ও রিবন এই চারটি রুটিনে অনবদ্য ক্রীড়াশৈলী দেখিয়ে।

সোনা জিততে মামুন পেছনে ফেলেন ফেভারিট ও তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্বদেশি ইয়ানা কুদ্রিয়াভৎসেভাকে। ফাইনালে প্রতিযোগিতার হুপ ও বলের রুটিন শেষে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষেই ছিলেন ইয়ানা। কিন্তু ক্লাব-পারফরম্যান্সের শেষ মুহূর্তে ভুল করে বসেন। ক্লাব উপরে ছুড়ে ফ্লোরে গড়িয়ে ধরতে পারনি। বাড়িয়ে থাকা হাতকে ফাঁকি দিয়ে তা পড়ে যায় ফ্লোরে। এতে অনেকটাই এগিয়ে যান মামুন।

সর্বমোট ৭৬.৪৮৩ স্কোর করে সেরা হন মামুন। শেষ পর্যন্ত ৭৫.৬০৮ স্কোর করে রুপা জেতেন ইয়ানা। ইউক্রেইনের গানা রিজাতদিনোভা পেয়েছেন ব্রোঞ্জ।

রাশিয়াকে এই ইভেন্টে টানা পঞ্চম সোনার পদক এনে দেওয়া মামুন বলেন “আজ আমার সোনার পদক জেতাটা খুবই অপ্রত্যাশিত। কারণ আজকের আগে অল অ্যারাউন্ডে ইয়ানা আমাকে হারিয়ে প্রতিবার জিতেছে। তাই আমি আজকে সোনার পদক জিতবো তা আসলেই ভাবিনি।”

মামুন খুবই আনন্দিত যে তার জয় তার বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে।

“আমি এটা জেনে খুব খুশি যে বাংলাদেশের অনেক ভক্ত আমাকে সমর্থন করছে।

“আমি বাংলায় ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে পারি। যখন ছোটো ছিলাম, আমার বাবা আমাকে বাংলা শেখাতেন; কিন্তু আমি সব ভুলে গেছি।”

জুনিয়র পর্যায়ে একবার বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা বেছে নিয়েছিলেন মামুন।

“আমার দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল, তাই আমি জুনিয়র হিসেবে একটি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি সবসময়  রাশিয়ায় থেকেছি আর অনুশীলন করেছি দেখে এরপর আমি রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করি।”