সময়ের সেরা ফুটবলার বিবেচিত লিওনেল মেসির সঙ্গে রোনালদো তার আলো ঝলমল ক্যারিয়ারে অনেক লড়াই করেছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সফলতার মুখ দেখতে পারেননি রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ড।
ইতিহাস যদি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অর্জনের দিক থেকে বিশ্ব সেরা বিবেচনা করে, মেসি আর রোনালদোর দুজনেই তখন এক বিন্দুতে। ক্লাব ফুটবলে অর্জনের ডালিটা তাদের কানায় কানায় পূর্ণ। তবে দেশের হয়ে সাফল্যের ঝুড়িটা এখনও রিক্ত।
সাঁ-দেনিতে আগামী রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় স্বাগতিক ফ্রান্সকে হারিয়ে পর্তুগালকে শিরোপা জেতাতে পারলে রোনালদোর ক্যারিয়ারটা অন্যরকম এক পূর্ণতা পাবে। একই সঙ্গে অনেক দিন ধরে চলে আসা দ্বৈরথে মেসিকে পেছনেও ফেলতে পারবেন তিনি।
দেশের হয়ে শিরোপা জয়ের সুযোগ মেসি কদিন আগেও পেয়েছিলেন। কিন্তু কোপা আমেরিকার শতবর্ষী আসরের ফাইনালে চিলির কাছে টাইব্রেকারে হেরে তার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভাঙে।
২০১৫ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালেও চিলির কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। এর আগে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারার কষ্ট মেনে নিতে হয়েছিল মেসিকে। তারও আগে ২০০৭ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরেছিল তার দল আর্জেন্টিনা।
পেলে, দিয়েগো মারাদোনা, জিনেদিন জিদান, ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার, মিশেল প্লাতিনি…কিংবদন্তি এই ফুটবলারদের সবাই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সফল। এদের সবাই দেশের হয়ে শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতেছিলেন। এরা সবাই তাদের প্রজন্মের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন।
চার বার কাছে গিয়েও মেসি কাঙ্ক্ষিত এই সাফল্য পাননি। রোনালদোর সামনে এই সুযোগ এসেছিল ২০০৪ সালে। কিন্তু দেশের মাটিতে সেবারের ইউরোর ফাইনালে গ্রিসের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তার। আবার শিরোপা জয়ের খুব কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন রোনালদো। ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো জিততে পারলে পেলে, মারাদোনা, জিদান, বেকেনবাওয়ারদের সঙ্গে উচ্চারিত হবে তার নাম।
গ্রুপ পর্বে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার পর প্রতিপক্ষের অতি রক্ষণাত্মক খেলার ধরনের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। অস্ট্রিয়া ম্যাচের আগে এক প্রতিবেদকের মাইক্রোফোন হ্রদের জলে ছুড়ে ফেলে সমালোচিত হয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সী এই তারকা ফরোয়ার্ড।
এত এত নাটকের পরও এবারের টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত পর্তুগালের সবচেয়ে বড় ম্যাচে আলো ছড়ান তিনিই। ওয়েলসের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালের সেই ম্যাচে নিজে একটি গোল করেন, নানির করা বাকি গোলটিতে সহায়তা করেন। ওয়েলসকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে পর্তুগাল।
“আমি সব সময়ই পর্তুগালের হয়ে জেতার স্বপ্ন দেখেছি, আমি আশা করি, এখন আমাদের সময়।”
পর্তুগালের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতিভা সম্পন্ন দলের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে রোনালদোদের দলটি। ফাইনালে পরিষ্কার ফেভারিট স্বাগতিক ফ্রান্স। তবে রোনালদোর স্বপ্ন যদি সত্যি হয়, তাহলে নি:সন্দেহে মেসিকে তার ছায়ায় আড়াল করতে পারবেন।