ক্ষুব্ধ ঊষা, হতাশ ফেডারেশন, উচ্ছ্বসিত মেরিনার

প্রথম বারের মতো প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগের শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসছে মেরিনার ইয়াংস। তবে ‘ফাইনাল’ হয়ে ওঠা ম্যাচের অনাকাঙ্ক্ষিত কাণ্ডে ক্ষুব্ধ ঊষা ক্রীড়া চক্র। হতাশ বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনও।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2016, 01:37 PM
Updated : 1 July 2016, 02:27 PM

মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে শুক্রবার দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ঊষাকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে মেরিনার ইয়াংস। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় ২০তম মিনিটে গ্যালারি ও ভিআইপি বক্সে ঘটে যাওয়া কাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ জানান ঊষা কোচ মামুনুর রশীদ।

মেরিনারের পাকিস্তানি খেলোয়াড় মোহাম্মদ তৌফিক আম্পায়ারের সঙ্গে বাদানুবাদের জড়ালে সবুজ কার্ড দেখিয়ে তাকে মাঠ থেকে বের করে দেন ওমানি আম্পায়ার। সাথে সাথে ফুসে ওঠে মেরিনার সমর্থকরা। উগ্র সমর্থকরা গ্যালারির চেয়ার ভেঙে মাঠে ছোড়ে। ডিআইপি বক্সে গিয়েও ভাঙচুর চালায় তারা। পুরো ঘটনা সামনে ঘটলেও পুলিশ থাকে দর্শক হিসেবে। প্রায় কুড়ি মিনিট পর টার্ফে ফেরে খেলা।

গ্যালারির ওই কাণ্ডে খেলোয়াড়রা ভয় পেয়ে গিয়েছিল দাবি করে ঊষা কোচ মামুনুর বলেন, “খেলাটা বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত সবকিছু আমাদের মতো করেই চলছিল। কি বলব? আসলে এটা একটা সন্ত্রাসী কাজ। জেতার জন্য... দুই গোল খাওয়ার পর আপনি গ্যালারি ভাঙছেন, তাহলে আর এক গোল হলে কি হত? আরও  ভাঙচুর হত। ওই সময় আমাদের পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এভাবে আসলে খেলার উন্নতি হয় কিনা আমার সন্দেহ।”

ভিআইপি গ্যালারির ভাঙচুরের ঘটনায় হতাশ হকি ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাত্র ১০ জন পুলিশ থাকায় ক্ষুব্ধ তিনি।

“মেরিনারের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে ভাঙচুর হয়েছে। এটা আসলে দুঃখজনক। মিটিং করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঈদের পরে মিটিং হবে। এ ম্যাচে আরও পুলিশ বেশি থাকা উচিত ছিল।”

মেরিনারের সাধারণ সম্পাদক হাসানউল্লাহ খান রানা সমর্থকদের কাণ্ডে ক্লাবের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে আরও ভালো মানের রেফারি দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার দাবি জানান।

“আমরা ছয়টা রিভিউ নিয়েছি, তার মধ্যে পাঁচটই আমাদের পক্ষে গেছে। মাত্র তিন গজ দূর থেকে আম্পায়ার যদি দেখে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে না পারেন, তাহলে কিভাবে হবে? আরও ভালো মানের আম্পায়ার আনা উচিত।”

“ম্যাচের উত্তাপের কারণে সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিল। যা হয়েছে, তার জন্য আমি ক্লাবের পক্ষ থেকে সবার কাছে ক্ষমা চাইছি।”

ম্যাচের বাইরের ঘটনায় অবশ্য মেরিনারের জয়ের আনন্দে ভাটা পড়েনি। ঘরোয়া হকির তিন পরাশক্তি আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও ঊষাকে হারানোয় ম্যাচ প্রতি এক লাখ করে মোট তিন লাখ টাকা খেলোয়াড়দের বোনাস দেবে মেরিনার। দলটির  হকি কমিটির চেয়ারম্যান মুমিনুল হক সাঈদও দিয়েছেন মোটা অঙ্কের বোনাসের প্রতিশ্রুতি। মেরিনারের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার মইনুল ইসলাম কৌশিকের কণ্ঠে তাই কষ্টের ফল পাওয়ার তৃপ্তি।

“আমরা সবাই খুশি। আমাদের দেশি-বিদেশি সবাই খুব ভালো করেছে। রোজার মধ্যেও আমরা অনুশীলন করেছি; অনেকে রোজা থেকেও অনুশীলন করেছে। অনেক কষ্ট করার ফল পেলাম আমরা।”

“ড্র করলেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতাম, তাই প্রথম থেকে আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল। দুই গোল খাওয়ার পরও আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম ফিরতে পারব; এটা আমাদের কাছে কোনো ব্যাপার নয়। এর আগেও আমরা গোল খেয়ে, পিছিয়ে পড়েও ভালো করেছি।”