আতলেতিকোর স্বপ্ন ভেঙে ইউরোপ সেরা রিয়াল

আবারও আতলেতিকো মাদ্রিদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল রিয়াল মাদ্রিদ। মিলানে টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের একাদশ শিরোপা তুলে নিয়েছে জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2016, 09:39 PM
Updated : 29 May 2016, 02:02 PM

শনিবার রাতে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলের সমতায় শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে কোনো গোল হয়নি। টাইব্রেকারে হুয়ানফ্রান ছাড়া গোল পেয়েছেন সবাই। শেষ স্পটকিকে রোনালদো গোল করতেই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন রিয়ালের খেলোয়াড়রা; সঙ্গে মিলানের গ্যালারির অর্ধেক আর টিভির সামনে থাকা মাদ্রিদের অর্ধেক দর্শক। দুই বছর আগেও লিসবনে ‘অল মাদ্রিদ’ ফাইনালে আতলেতিকোর প্রথম শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছিল সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের দলটি।

ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে একটুর জন্য গোল পায়নি রিয়াল। ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে গ্যারেথ বেলের ফ্রি-কিকে পা ছুঁইয়েছিলেন কাসেমিরো। দারুণ দক্ষতায় বল জালে যাওয়া ঠেকান গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক।

১৫তম মিনিটে আর ঠেকাতে পারেনি ওবলাক। টনি ক্রুসের ফ্রি-কিক থেকে বেলের হেডে গোলপোস্টের সামনে বল পেয়ে জালে জড়িয়ে দেন রিয়াল অধিনায়ক সের্হিও রামোস।

দুই বছর আগের ফাইনালে একই প্রতিপক্ষের হৃদয় ভেঙেছিলেন রামোস। যোগ করা সময়ে তার গোলেই সমতা ফেরায় ম্যাচটি হারতে বসা রিয়াল। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে ৪-১ গোলে জিতে দশম শিরোপা ঘরে তোলে রিয়াল। সেই ফাইনালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথম গোল পেলেন রামোস।

গোল খেয়ে আক্রমণে বেশি মনোযোগী হলেও প্রথমার্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি আতলেতিকো।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ হারায় আতলেতিকো। ডি-বক্সে পেপে ফের্নান্দো তরেসকে ফাউল করলে স্পট-কিকের নির্দেশ দিয়েছিলেন রেফারি। গ্রিজমানের শট লাগে ক্রসবারের মাঝে।

৫৫তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সহজ সুযোগ হারান স্তেফান সাভিচ। ছয় গজ দূর থেকে পোস্টের বাইরে দিয়ে মারেন মন্টেনেগ্রোর এই ডিফেন্ডার।

৭১তম মিনিটে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া বেনজেমার শট ফিরিয়ে আতলেতিকোকে ম্যাচে রাখেন ওবলাক।

৭৯তম মিনিটে রোনালদোর শট ওবলাক রুখে দেওয়ার পর বেলের শট গোললাইন থেকে ফেরান সাভিচ। পরক্ষণেই আক্রমণে উঠে সমতা ফেরায় আতলেতিকো। ডান দিকে হুয়ানফ্রানের ক্রসে খুব কাছ থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন বিরতির পর বদলি হিসেবে নামা ইয়ানিক কারাসকো।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আতলেতিকোর হয়ে প্রথম গোল পেলেন বেলজিয়ামের এই উইঙ্গার। দুই বছর আগের ফাইনালের মতো ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

সতর্ক খেলা দুই দলের কেউই ভালো কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাড়তি এই ত্রিশ মিনিটে। শেষ দিকে রিয়াল মাদ্রিদের লুকাস ভাসকেস ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন। তবে শট নিতে দেরি করায় সুযোগটা কাজে লাগতে পারেননি বদলি এই খেলোয়াড়।

তবে টাইব্রেকারে প্রথম শটে ঠাণ্ডা মাথায় ডান কোণা দিয়ে বল জালে পাঠান ভাসকেস। আতলেতিকোর প্রথম শট নিতে এসে এবার গ্রিজমান কোনো ভুল করেননি। বাঁ দিক দিয়ে কেইলর নাভাসকে ফাঁকি দেন তিনি।

রিয়ালের দ্বিতীয় শটে লক্ষ্যভেদ করেন মার্সেলো। আতলেতিকো অধিনায়ক গাবি জোরালো শটে টাইব্রেকারের স্কোর ২-২ করেন।

রিয়ালের তৃতীয় শট নিতে আসা বেল কোনো ভুল করেননি। সাউল নিগেসও গোল করে স্কোর ৩-৩ করেন।

রামোস চতুর্থ শটটি ঠাণ্ডা মাথায় জালে পাঠালেও পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা আতলেতিকোর হুয়ানফ্রান পোস্টে মারেন। রোনালদো স্নায়ুর চাপে ভেঙে না পড়ে রিয়ালকে এনে দেন একাদশ শিরোপা।

কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম বছরেই রিয়ালকে  মৌসুমের সবচেয়ে বড় শিরোপাটি জেতালেন জিদান।

এই জয়ে ইউরোপের সিংহাসন পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি সান সিরোয় হারের গেরোও কাটালো রিয়াল। মিলানের এই মাঠে আগের ১৪ ম্যাচে কোনো জয় ছিল না তাদের।