উপভোগ্য ফাইনালের ঘোষণা দুই আবাহনীর

মৌসুমের প্রথম শিরোপাটি জিততে মরিয়া আবাহনী লিমিটেড। চট্টগ্রাম আবাহনীও শিরোপার এত কাছাকাছি এসে খালি হাতে ফিরতে রাজি নয়। স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে দুই দলের চাওয়া এক হওয়াটা উপভোগ্য লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2016, 02:10 PM
Updated : 6 May 2016, 02:10 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। আগের দিন জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ জানান দুই দলের কোচ। তবে মামুনুল ইসলামসহ নির্ভরযোগ্য পাঁচ ফুটবলারকে ছাড়া শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর পেরে ওঠা কঠিনই হবে।

‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠা আবাহনী তাদের ভেতরের আগুনটা দেখায় শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে ছয় গোল করে লিগের শিরোপাধারীদের উড়িয়ে দেয় তারা।

অন্যদিকে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে সেরা চারে জায়গা করে নেওয়া চট্টগ্রাম আবাহনীর ফাইনালে উঠতে ঘাম ছুটে গেছে। সেমি-ফাইনালে শেখ রাসেলের বিপক্ষে তাদের জয়টি টাইব্রেকারে পাওয়া। তবে দুই দলের সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াই থেকে চাইলে অনুপ্রেরণা নিতে পারে বন্দর নগরীর দলটি। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে সেরা হওয়ার পথে গ্রুপ পর্বে আবাহনীকে হারিয়েছিল তারা।

চট্টগ্রাম আবাহনীর নতুন কোচ জোসেফ পাভলিক ফাইনালে উঠতে পেরেই খুশি। প্রতিপক্ষের প্রতি তার সমীহের কমতি নেই। তবে মামুনুলদের পেলে লক্ষ্য পূরণের কাজটা সহজ হতো বলেই বিশ্বাস এই কোচের।

“ফাইনালে উঠতে পেরে আমি খুশি। প্রতিপক্ষ বেশ শক্তিশালী। কোন অযোগ্য দল ওঠেনি। কে জিতবে বলা কঠিন। তবে আমার দল জিতলে খুশি হবো। দুই আবাহনীর ম্যাচ ভালই হবে। আশা করি, সবাই উপভোগ করবে। ফাইনালের জন্য আমরা প্রস্তুত; তবে ওই পাঁচ খেলোয়াড় থাকলে সুবিধা হতো আমাদের।”

২০১১ সালের পর প্রথমবারের মতো ঘরোয়া কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা আবাহনী শিরোপার স্বাদ পেতে বিদেশি খেলোয়াড়দের দিকে খুব করে তাকিয়ে আছে। দলটির কোচ অমলেশ সেন জানিয়েছেন দেশি খেলোয়াড়দের প্রতিও তার চাওয়াটা কম নয়।

“গত দুই ম্যাচের খেলা ধরে রাখতে পারলেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো। লি টাক খুব ভাল মানের খেলোয়াড়। গোল পাচ্ছে, গোল করাচ্ছে। সানডেও (চিজোবা) দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে তিন বিদেশির উপরই কেবল নির্ভর করছি না, আমাদের রক্ষণভাগও বেশ ভাল। সুতরাং আশা করছি, ফাইনাল জিততে আমাদের বেগ পেতে হবে না।”

স্বাধীনতা কাপের চলতি আসরে এখনও হারেনি আবাহনী; ছয় ম্যাচে তিনটি করে জয় ও ড্র। অন্যদিকে চট্টগ্রাম আবাহনীর একমাত্র হার গ্রুপ পর্বে মোহামেডানের কাছে ৫-১ গোলে।

আবাহনীর সানডের সামনে রয়েছে স্বাধীনতা কাপে এককভাবে সেরা গোলদাতা হওয়ার হাতছানি। ৬টি করে গোল নিয়ে নাইজেরিয়ার এই ফরোয়ার্ডের সঙ্গে আছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের ফিকরু জেইদা, শেখ জামালের ওয়েডসেন আনসেলমে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের আহমেদ কোলো ‍মুসা ও বিজেএমসির এলিটা কিংসলে।

ওয়েডসেনের মতো গোলমেশিন না থাকলেও ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়ার মতো বিদেশি আছে চট্টগ্রাম আবাহনীরও। লিওনেল সেইন্ট প্রিয়াক্স, ফাব্রিস নোয়েল, তারিক আল জানাবি বা অ্যালিসন উডোকা হয়ে উঠতে পারেন দলটির ত্রাতা।

আবাহনী অধিনায়ক আরিফুল ইসলামের মনে হচ্ছে জমজমাট ম্যাচ উপহার দেবে স্বাধীনতা কাপের ফাইনাল।

“দুই আবাহনীরই সমান সমান সুযোগ থাকছে। তবে আমাদের দল অনেক বছর ধরেই কোন সাফল্য পায় না। মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্টই যখন ফাইনালে উঠেছি, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই আমরা।”

সানডে, লি টাকদের আক্রমণের ঝড়টা যার ওপর দিয়ে বেশি যাবে, চট্টগ্রাম আবাহনীর সেই গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা উপভোগ্য ফাইনালের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমি সব কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকি।”

দলটির নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড জাহিদ হোসেনের চাওয়া অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ গড়ানোর আগেই নিজেদের কাজ সেরে ফেলা।

“আমার লক্ষ্য থাকবে ৯০ মিনিটে খেলা শেষ করা। কোনো ভাবেই ম্যাচটা যাতে অতিরিক্ত সময়ে না যায় এজন্য আমরা বসব। আমার বিশ্বাস, ভালো একটা ফাইনাল হবে। দর্শক ম্যাচটা উপভোগ করবে।”