প্রথমার্ধে সাউল নিগেসের একমাত্র গোলে পাওয়া এ জয়ে বায়ার্নের সঙ্গে পুরনো এক হিসাবও চুকালো আতলেতিকো। ১৯৭৪ সালের ফাইনালে জার্মান দলটির কাছে হেরেই শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছিল স্পেনের ক্লাবটির।
ভিসেন্তে কালদেরনে বুধবার রাতে ম্যাচ শুরুর পরই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে উঠে খেলা। প্রথম ১০ মিনিটে আক্রমণে বেশি উঠে আসে স্বাগতিকরা, যার ফলও পায় তারা। একাদশ মিনিটে একক নৈপুণ্যে আতলেতিকোকে এগিয়ে দেন সাউল নিগেস। প্রায় ৩৫ গজ দূরে বল পেয়ে বায়ার্নের দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন। সেখানেও কাছাকাছি থাকা তিন ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে দূরের পোস্ট দিযে গোল করেন স্পেনের এই মিডফিল্ডার।
সব ধরণের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গত ১০ ম্যাচে সাউলের এটাই প্রথম গোল।
দুই মিনিট পরেই দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে সমতায় ফিরতে পারতো বায়ার্ন। উরুগুয়ের ডিফেন্ডার হোসে হিমেনেস বল ঠিকমতো বিপদমুক্ত করতে না পারায় তা পেয়ে যান আর্তুরো ভিদাল। চিলির এই মিডফিল্ডারের হেড লক্ষ্যেই ছিল, তবে শেষ মুহূর্তে হেডে কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করে আগের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন হিমেনেস।
আধ ঘণ্টার মাথায় বল নিয়ে বিপজ্জনকভাবে বায়ার্ন মিউনিখের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন অঁতোয়ান গ্রিজমান। ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের নীচু শট পা দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার।
প্রথমার্ধের প্রায় ৭১ শতাংশ সময় বল বায়ার্নের দখলে থাকলেও বেশি সুযোগ তৈরি করে স্বাগতিকরাই। মোট চারবার গোলে শট নেয় তারা, গুয়ার্দিওলার দল মাত্র একবার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই একচেটিয়া বল দখলে রাখা বায়ার্ন ৫৪তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো। তবে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে অস্ট্রিয়ার মিডফিল্ডার দাভিদ আলাবার বিদ্যুৎ গতির শটে গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক পরাস্ত হলেও বল ক্রসবারে লেগে ফিরে। মিনিট দুয়েক পর কর্নারে হাভি মার্তিনেসের হেড ডানদিকে ঝাঁপিয়ে গোললাইন থেকে ঠেকান ওবলাক।
দুই মিনিট পর পোস্টে বল লাগার হতাশায় ডোবে আতলেতিকো। গ্রিজমানের পাস ধরে ডি বক্সে ডান দিক দিয়ে ঢুকে এক জনকে এড়িয়ে ফের্নান্দো তরেসের নেওয়া জোরালো শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও পোস্ট এড়াতে পারেনি। ফিরতি বলে কোকের শট বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান মানুয়েল নয়ার।
ম্যাচে ফিরতে মরিয়া গুয়ার্দিওলা আক্রমণ আরও বাড়াতে ৬৪তম মিনিটে কিংসলে কোমানের জায়গায় ফ্রাঙ্ক রিবেরি এবং ৭০তম মিনিটে থিয়াগো আলকান্তারাকে বসিয়ে ফরোয়ার্ড টমাস মুলারকে নামান। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার লক্ষ্য পূরণ হলেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি তারা। ফলে হারের হতাশাতেই মাঠ ছাড়তে হয় পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের।
এই জয়ে আতলেতিকো ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকলো। অ্যাওয়ে গোল না পেলেও গুয়ার্দিওলার তেমন দুশ্চিন্তায় পড়ার কথা না। শিষ্যরা যে রকম দুর্দান্ত আক্রমণাত্মক খেলা উপহার দিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার নিজেদের মাঠে তেমনটা খেলতে পারলে বায়ার্নকে ঠেকিয়ে রাখা কঠিনই হবে সিমেওনের দলের।