আগামী শুক্রবার ভারতের গুয়াহাটি-শিলংয়ে শুরু হবে এসএ গেমসের দ্বাদশ আসর। এ আসরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাওয়া নারী অ্যাথলেটদের জন্য কেনা হয়েছে ১৭৫টি শাড়ি, যার মান নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী অ্যাথলেট জানান, “আমাদেরকে বলা হচ্ছে, এগুলো রাজশাহী সিল্ক কিন্তু এটা আসলে তা নয়। বড় জোর সাতশ’ টাকা দাম হবে এই শাড়ির।”
এই শাড়ি পরেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্চ পাস্টে অংশ নিতে হবে নারী অ্যাথলেটদের। বিষয়টি নিয়ে ডেপুটি শেফ দ্য মিশন কামরুন্নাহার ডানার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শাড়িগুলো আরেকটু ভালো হলে মেয়েরা খুশি হতো।
কেবল শাড়ি নয়, অ্যাথলেটদের কেডস, ট্র্যাকসুট ও ব্লেজারের মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। অ্যাথলেটদের অভিযোগ, নিম্নমানের কেডস দেওয়া হয়েছে তাদের। ট্র্যাকসুট আর ব্লেজারের মাপের হেরফেরে তা আর স্বাচ্ছন্দ্যে পরার পর্যায়ে নেই।
বিওএ উপ মহাসচিব ও ক্রয় কমিটির প্রধান বাদল রায় নিম্নমানের পণ্য কেনার অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করে সাংবাদিকদের জানান, ক্রয় কমিটিতে থাকা কোষাধ্যক্ষ কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল ও মহাপরিচালক ব্রিগে. জেনালের (অব.) ফখরুদ্দিন হায়দার কেনার দায়িত্বে ছিলেন।
এবার নেই বিওএ -এর মূল্যয়ন কমিটি, যে কমিটি বরাবর গেমসের আগে ইভেন্ট ধরে ধরে পদক পাওয়ার সম্ভাবনা যাচাই করে প্রতিবেদন দেয়। এবার সেটাও হয়নি। তাই কদিন আগে ২২টি ইভেন্টের ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে বিওএর কর্মকর্তারাও বলতে পারেননি, মোটামুটি কয়টা পদকের আশা নিয়ে গুয়াহাটি-শিলংয়ে যাচ্ছেন তারা।
এসএ গেমসে সাংবাদিকদের ‘অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড’ কার্ড দেওয়া নিয়েও অনিয়মের পথে হেঁটেছে বিওএ। ৫০টি কার্ডের মধ্যে একাধিক ‘অখ্যাত’ অনলাইন ও পত্রিকাকে কার্ড দিয়েছে তারা। অথচ দেশের শীর্ষ অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র আলোকিত বাংলাদেশকে ‘অ্যাক্রিডিটেশন’ দেওয়া হয়নি।
গত রোববার বিওএ –এর কাছে পাঠানো ইমেইলে কার্ড না পাওয়ার ব্যাখ্যা জানতে চাইলেও এর কোনো জবাব আসেনি।
মিডিয়া কমিটির প্রধান কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়ায় অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানান, ভারত থেকেই বাছাই করে কার্ড দেওয়া হয়েছে। চপলের এই যুক্তির আদতে কোনো ভিত্তি নেই; কেননা, সংশ্লিষ্ট দেশের অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থেকে নির্বাচন করে দেওয়া সাংবাদিকদের ‘অ্যাক্রিডিটেশন’ দেয় আয়োজকরা।
বিওএ মহাসচিব সৈয়দ সাহেদ রেজার দাবিও একই। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদককে তিনি বলেন, “আমরা কোনো সিলেকশন করিনি। আমি তো আর ওই কমিটির মধ্যে না। কমিটির মধ্যে থাকলে বলতে পারতাম। সব কিছু তো আমার জানার বিষয় নয়।”
“আমি দেখব যে কেন তারা পায়নি। আমি তো মনে করি, শীর্ষস্থানীয় যেগুলো তাদের তো অবশ্যই দেওয়া উচিত।”