কাবাডিতে চোখ রূপায়

গত অগাস্ট থেকে চলা প্রস্তুতি নিয়ে খুশি পুরুষ ও মহিলা কাবাডি দল। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে (এসএ গেমস) পদকের লড়াইয়ে নামার আগে নিজেদের যাচাই করে নেওয়ার প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে না পারার হতাশাও কম নয়। সব মিলিয়ে কাবাডি থেকে এবারও সোনার পদকের সম্ভাবনা নেই; রূপাতেই আপাতত আটকে আছে লক্ষ্যটা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2016, 01:39 PM
Updated : 2 Feb 2016, 01:39 PM

আবাসিক হোটেলে থাকা, পল্টনের কাবাডি স্টেডিয়ামে ভারতীয় কোচের অধীনের প্রস্তুতি-গতবারের তুলনায় এবার পাওয়া সুযোগ সুবিধা নিয়ে খুশি পুরুষ দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ আরদুজ্জামান। ধানমণ্ডি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে চলা মহিলা দলের শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি নিয়ে ‍খুশি কোচ আব্দুল জলিলও। কিন্তু বড় স্বপ্ন নেই কারও চোখে।

আগামী শুক্রবার ভারতের গুয়াহাটি-শিলংয়ে শুরু হতে যাওয়া এসএ গেমসের কাবাডি ইভেন্টের লক্ষ্য জানাতে গিয়ে পুরুষ দলের অধিনায়ক আরদুজ্জামান বললেন, “ভারত এতটা এগিয়েছে যে, সোনার পদকটা ওদেরকে দিয়ে রেখেই হিসেব কষতে হয়।”

মহিলা দলের কোচ জলিল জানালেন গতবারের রূপা ধরে রাখাই তার মূল লক্ষ্য।

“যেভাবে মেয়েরা কঠোর অনুশীলন করছে, আমার বিশ্বাস রূপা ধরে রাখা সম্ভব। তবে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের পরখ করে নিতে পারলে ভালো হতো।”

কাবাডিতে স্বপ্নটা বড় না হওয়ার কারণও অনেক। গত বছরে লিগ, ক্লাব টুর্নামেন্ট কোনোটাই আয়োজন করতে পারেনি কাবাডি ফেডারেশন। বড় ঘাটতির দিকটা অবশ্য দেখিয়ে দিলেন ভারতের প্রো-কাবাডি লিগে তেলেগু টাইটান্সের কোচের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ পুরুষ দলের বর্তমান কোচ জগমোহন কিলারু।

“কাবাডির নিয়মে অনেক আধুনিকতা এসেছে। কিন্তু এখানে সেই সনাতন পদ্ধতিতে শেখানো হয়। আমি যখন নতুন নিয়মে শুরু করলাম, তখন স্বাভাবিকভাবে ছেলেদের গতি কমে গিয়েছিল। তবে এখন তারা একটু একটু করে নিজেদের ফিরে পাচ্ছে।”

এই ফিরে পাওয়াতে জগমোহন খুব একটা আশাবাদী নন, “এই দলটা তরুণ। উঠে আসছে। ছেলেদের মধ্যে নিষ্ঠা আছে; তারা খুব পরিশ্রমী। এ কারণে এসএ গেমসের একটা পদক আশা করতে পারি; বলতে পারি, রূপা জেতার সুযোগ আছে।”

২০০৬ সালের কলম্বো গেমসে প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয় মহিলা কাবাডি। ওই আসরে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে নিজেদের মাঠে রূপা এসেছিল।

প্রথম এসএ গেমসে (১৯৮৪) কাবাডি ছিল না। পরের ১০ আসরে বাংলাদেশের সাফল্য কখনোই সোনার পদক পর্যন্ত গড়ায়নি। তিন রূপা আর নয় ব্রোঞ্জে আটকে আছে। কাবাডি থেকে পুরুষ দলের প্রাপ্তি দুই রূপা, আট ব্রোঞ্জ।

গত বছর অগাস্ট থেকে নেওয়া প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট অধিনায়ক আরদুজ্জামান। তবে টুর্নামেন্টের আগে নিজেদের যাচাই করে নেওয়ার প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে না পারার অক্ষেপ তার কণ্ঠে।

“প্রস্তুতি অনেকটা ভালো। এখনও টিমের যে অবস্থা, তাতে মনে হয় গত সাফের চেয়ে আমরা ভালো করব। যদি বড় ধরনের কোনো চোটে না পড়ি, তাহলে আমরা ভালো করব।”

“টুকটাক ইনজুরি সবসময় লেগে থাকে; বডি কন্টাক্ট গেম তো। তাছাড়া আমাদের খেলোয়াড়ও কম। ফলে আমরা ম্যাচও খেলতে পারছি না। প্রস্তুতি হচ্ছে; প্রস্তুতি ম্যাচটা হচ্ছে না”, যোগ করেন তিনি।

২০১০ সালের আসরে খেলা অভিজ্ঞ রাজু আহমেদ, ফিরোজ জামান আর আরদুজ্জামান-এই তিনজন আছেন বর্তমান দলে। প্রস্তুতি নিয়ে খুশি ফিরোজও, “এ মুহূর্তে আমাদের টিমের যে অবস্থা, তাতে বলব, প্রস্তুতি খারাপ না; উন্নতি যে করছি; সেটা আমরা বুঝতে পারছি কিন্তু আমরা সেটা পরখ করে নিতে পারছি না।”

“এখন আসলে আমাদের যা আছে তাই নিয়ে লড়াই করতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতাও আছে। পাকিস্তান আহামরি নয়, আমাদের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ২০-১৯। আমার মনে হয়, রূপা জয়ের সুযোগ আমাদের আছে।”